নোঙ্গর জটিলতায় বসতে দেরি হচ্ছে দশম স্প্যান
১০ এপ্রিল ২০১৯ ১২:২১
পদ্মাসেতু এলাকা থেকে: নোঙ্গর করতে জটিলতার মুখে পড়ায় পদ্মাসেতুর দশম স্প্যান পিলারে ওঠাতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। ক্রেন থেকে ফেলা নোঙ্গর বার বার মাটি থেকে ছুটে আসার কারণে পিলারের উপর স্প্যান বসাতে বৈরী পরিস্থিতির মুখে পড়তে হচ্ছে। স্প্যানটি পিলারের ওপর পুরোপুরি বসাতে আরো ঘণ্টা দুয়েক সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলীরা।
বুধবার (১০ এপ্রিল) দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই জটিলতা তৈরি হয়েছে পদ্মাসেতুর দশম স্প্যান পিলারের উত্তোলন কাজ।
দেখা গেছে, পিয়ারের ঠিক কাছাকাছি মাটি ছেড়ে ছুটে আসছে নোঙ্গর। যে কারণে ক্রেনকে টেনে ধরতে পারছে না নোঙ্গর। এমন পরিস্থিতিতে স্প্যান পিয়ারের উপর বসানোর ক্ষেত্রে বিড়ম্বনায় পড়েছেন চায়না মেজর ব্রিজ কনস্ট্রাকশনের প্রকৌশলীরা।
সবশেষ নোঙ্গর মাটিতে পুনরায় ফেলতে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আরো ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে পদ্মা সেতুর স্প্যান পিয়ারে বসিয়ে দেওয়া যাবে বলে আশা করছেন সেতুর প্রকৌশলীরা।
আরও পড়ুন: পদ্মাসেতুর দশম স্প্যান বসানোর প্রক্রিয়া শুরু
প্রকৌশলীদের দেওয়া তথ্যে আরও জানা গেছে, আগামী মাসের শুরুতেই আরো একটি স্প্যান বসানো হবে। তার আগে আগামী ২০ এপ্রিল বসবে পদ্মা সেতুর ১১ তম স্প্যান।
এর আগে বুধবার (১০ এপ্রিল) সকালে পদ্মাসেতুর মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেনটি স্প্যান নিয়ে দ্রুত গতিতে ১৩ এবং ১৪ নম্বর পিলারের দিকে এগিয়ে যায়।
কুয়াশা কাটলে পিলারের উপর স্প্যান বসানোর প্রক্রিয়া শুরু করবেন প্রকৌশলীরা। সকাল সাড়ে দশটার দিকে স্প্যান বসানো হতে পারে বলে জানা গেছে।
সেতুর প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, ১০টি স্প্যান বসানোর পাশাপাশি সেতুর ২৪৭টি পাইল বসানোর কাজও শেষ হয়েছে। বাকি ৪৭টি পাইলের মধ্যে ১৫টি পাইলের অর্ধেক বসানো হয়ে গেছে।
পদ্মাসেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, পদ্মাসেতুর পিয়ার বা খুঁটি ৪২টি। এর মধ্যে ২২টি খুঁটির নির্মাণ শেষ। আগামী জুন মাসের মধ্যে বাকি আরও ১০টি খুঁটির নির্মাণকাজ শেষ হয়ে যাবে। তখন আরও গতিতে স্প্যান বসানো যাবে। প্রতি মাসে দুটি করে স্প্যান বসানো তখন সম্ভব হবে।
সেতুর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চীনের চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং (এমবিইসি) সূত্র জানায়, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মাসেতু গড়তে তাদের সবচেয়ে বেশি যুদ্ধ করতে হয়েছে পদ্মার তলদেশে। তলদেশে মাটির গঠনগত বৈচিত্র্যের কারণে ১১ পিয়ারের নকশায় পরিবর্তন আনতে হয়েছে। শুরুর দিকে মাওয়া অংশে কাজ বাদ দিয়ে জাজিরা চলে যেতে হয়েছে। তারপর বছরখানেক পর পুনরায় পিয়ার ডিজাইন হাতে পাওয়ার পর মাওয়া অংশে কাজ শুরু হয়।
সেতুর মাওয়া অংশে ৬ ও ৭ নম্বর খুঁটির পাইল বসাতে গিয়ে দেখা যায়, তলদেশে নরম মাটির স্তর বেশি। যে কারণে পিয়ার তোলা সম্ভব হচ্ছিল না। তবে, সেই ৬ ও ৭ নম্বর খুঁটির পাইল বসানোর কাজ শেষ।
সারাবাংলা/এসএ/জেএএম