পহেলা বৈশাখ: মাঠে থাকছে ডিএমপির ছিনতাই ও ইভটিজিং প্রতিরোধ টিম
১১ এপ্রিল ২০১৯ ১৩:৪৯
ঢাকা: পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে পুলিশের পক্ষ থেকে নানা ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ বা ডিএমপি। ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের অংশ মঙ্গল শোভাযাত্রায় থাকবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা, থাকবে ছিনতাই ও ইভটিজিং প্রতিরোধে বিশেষ টিম।
বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে পহেলা বৈশাখের নিরাপত্তা নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পহেলা বৈশাখের নানা স্তরের নিরাপত্তা ও নির্দেশনার বিষয়ে তথ্য দেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।
সোয়াত ঘিরে রাখবে মঙ্গল শোভাযাত্রা
মঙ্গল শোভাযাত্রা আন্তর্জাতিক মানের হওয়ায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। বিশেষায়িত টিম হিসেবে সোয়াত থাকবে মঙ্গল শোভাযাত্রার চারদিক ঘিরে। পথিমধ্যে কেউ শোভাযাত্রায় প্রবেশ করতে পারবে না। শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া কেউ মুখোশ পড়তে পারবে না। সোয়াতের সাথে ডিবি পুলিশ, পোশাকধারী পুলিশ, চারুকলার টিম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেচ্ছাসেবীরা সহযোগী হিসেবে থাকবে। যারা অংশ নেবেন তাদের চারুকলা থেকেই প্রবেশ করতে হবে।
বাতাসা ও ফুল দিয়ে দর্শনার্থীদের বরণ
এবারও ডিএমপির পক্ষ থেকে বৈশাখে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের বাতাসা ও ফুল দিয়ে বরণ করা হবে। সেই সাথে সুপেয় পানির বোতল সরবরাহ করা হবে। যাতে দর্শনার্থীরা পিপাসা মেটাতে পারে। তবে এবার নতুন করে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট দর্শনার্থীদের ফুল ও মিষ্টি জাতীয় বাতাসা দিয়ে বরণ করবে।
নিষিদ্ধ থাকবে ভূঁভূজেলা ও ধুমপান
পহেলা বৈশাখে পার্কে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের কেউ ভূঁভূজেলা বাজিয়ে বিরক্ত করতে পারবে না। এটা বিরক্তিকর সৃষ্টি করে মানুষকে। বিশেষ করে এটা বাজিয়ে নারী দর্শনার্থীদের বিরক্ত করা হয়। তাই এটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সাথে উৎসবস্থলে কেউ ধুমপান করতে পারবে না। ভূঁভূজেলা বাজানো ও ধুমপানকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ছিনতাই ও ইভটিজিং প্রতিরোধে বিশেষ টিম
বৈশাখে বেড়াতে আসা নারী দর্শনার্থীদের ইভটিজিং করতে না পারে এবং কেউ যাতে ছিনতাই করতে না পারে সেজন্য পুলিশের বিশেষ টিম কাজ করবে। তারা স্বাভাবিক এবং সাদা পোশাকে প্রস্তুত থাকবে যাতে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে এবং উৎসব পালন করতে পারে।
আরও পড়ুন: বৈশাখে নিরাপত্তায় কোনো শঙ্কা নেই: ডিএমপি কমিশনার
যেসব সড়ক বন্ধ থাকবে
বাংলা মটর-রুপসী বাংলা-টিএসসি-দোয়েল চত্বর, ইন্টারকন্টিনেন্টাল-কাকরাইল-মৎস্য ভবন-কদম ফোয়ারা, মৎস ভবন-শাহবাগ-কাটাবন, পলাশী-শহীদ মিনার-দোয়েল চত্বর-হাইকোর্ট ক্রসিং, বকশী বাজার-শহীদ মিনার-দোয়েল চত্বর-হাইকোর্ট ক্রসিং, বকশী বাজার-শহীদ মিনার-টিএসসি, শহীদুল্লাহ হল ক্রসিং-দোয়েল চত্বর ও নীলক্ষেত-টিএসসির সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকবে।
বিকল্প চলাচলের রুট হিসেবে মিরপুর রোড-সায়েন্স ল্যাবরেটরী-নিউ মার্কেট-আজিমপুর-বকশী বাজার-চাঁনখার পুল-গুলিস্তান, রাসেল স্কয়ার-সোনারগাঁও-রেইনবো-মগবাজার-মালিবাগ-রাজমণি-ইউবিএল-গুলিস্তান, মহাখালী-সাতরাস্তা-মগবাজার-কাকরাইল-রাজমনি-ইউবিএর-গুলিস্তান, ফার্মগেট-সোনারগাঁও-বাংলামটর-মগবাজার-মৌচাক-মালিবাগ-খিলগাঁও।
গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা
উত্তর দিক থেকে আসা গাড়ি হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল রোড, পুরাতন অ্যালিফ্যান্ট রোড, পূর্ব দক্ষিণ দিকের গাড়ি আব্দুল গণি রোডে, দক্ষিণ দিকের গাড়ি কার্জন হল থেকে বঙ্গ বাজার হয়ে ফুল বাড়িয়া পর্যন্ত, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি মৎস্যভবন থেকে কার্পেট গলি ও শিল্পকলা একাডেমীর গলিতে, ভিআইপি ও মিডিয়ার গাড়ি সুগন্ধা হতে অফিসার্স ক্লাবের সড়কে এবং দক্ষিণ পশ্চিম দিকের গাড়ি কাঁটাবন হতে নীলক্ষেত হয়ে পলাশী পর্যন্ত পার্কিং করা যাবে।
বৈশাখের অনুষ্ঠান ঘিরে রমনা পার্কে মোট ৮টি গেট থাকবে। এর মধ্যে একসঙ্গে তিনটি প্রবেশ ও বের হওয়া এবং দুইটি বের হওয়ার গেট রয়েছে। কাকরাইল মসজিদ সংলগ্ন গেট, মৎস্যভবন গেট ও শিশু পার্কের বিপরীত গেট দিয়ে প্রবেশ ও বের হতে পারবে। শিখা চিরন্তনী বরাবর একটি নতুন গেট দিয়ে শুধু বের হতে পারবে। হেয়াররোডের গেট ও রুপসী বাংলার কাছাকাছি গেট দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। রমনা রেস্টুরেন্ট কাছাকাছি যে দুটি গেট রয়েছে সেটির একটি দিয়ে প্রবেশ ও একটি দিয়ে বের হতে পারবে।
অন্য দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মোট ৭টি গেট থাকবে। এর মধ্যে ছবির হাট ও রমনা কালি মন্দির গেট ওইদিন বন্ধ থাকবে। বাকী গেটগুলোর মধ্যে তিনটি দিয়ে প্রবেশ ও দুইটি দিয়ে বের হতে পারবে। বিকেল পাঁচটার মধ্যে দর্শনার্থী প্রবেশের সব গেট বন্ধ করে দেওয়া হবে। সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সবাইকে বের হয়ে আসতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) শাহাবুদ্দিন কোরেশী, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মীর রেজাউল আলম, অতিরিক্ত কমিশনার (কাউন্টার টেরোরিজম) মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মফিজ উদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন, যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মাহবুব আলম, যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম)শেখ নাজমুল আলম, উপ কমিশনার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, ডিবি ডিসি খন্দকার নুরুন্নবী চৌধুরী ও ডিসি মিডিয়া মাসুদুর রহমান।
সারাবাংলা/ইউজে/জেএএম