Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রোগ্রামে লোক নেই কেন, কর্মীদের একহাত নিলেন নজরুল ইসলাম খান


১২ এপ্রিল ২০১৯ ১৪:৪২

ঢাকা: ‘অনেকেই হলের মধ্যে আলোচনা সভা, প্রতিবাদ সভা পছন্দ করছেন না। যারা পছন্দ করছেন না, তারা আসেন কেন? যদি মনে করেন এ রকম সভার কোনো উপযোগিতা নেই, তাহলে এখানে অংশ নেন কেন? আমি তো মনে করি এ রকমের সভার উপযোগিতা আছে। এসব সভার উদ্দেশ্য হলো অন্যদের উদ্দীপ্ত করা, নেতাকর্মীদের অধিকতর সচেতন করা এবং চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি গ্রহণ করা।’

‘অনুষ্ঠানে যারা বক্তব্য রাখেন তারা তো নেতা। দুই/চার জনের নেতা না, দুই/চারশ লোকের নেতাও না। তারা অন্তত দুই/চার হাজার লোকের নেতা। আর এটাই যদি সত্য হয়, তাহলে যারা বক্তৃতা করলেন, তারা প্রত্যেকেই অন্তত চারশ করে লোক নিয়ে এলে এই প্রেস ক্লাব তো লোকে ভরে যেত। আনেননি কেন? আনতে পারেননি কেন?’

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে জতীয় প্রেস ক্লাবের মওলানা আকরম খাঁ হলে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এভাবেই দলীয় কর্মীদের ‘একহাত নিয়েছেন’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। কারাবন্দি খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা, নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ প্রতিবাদ সভা আয়োজন করে জিয়া আদর্শ একাডেমি।

প্রতিবাদ সভায় কর্মীদের উদ্দেশে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আপনারা যারা অভিযোগ করেন, আমরাই সিদ্ধান্ত নিই। হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমরা সিদ্ধান্ত নিই। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পরামর্শ অনুযায়ী তারেক রহমানে সঙ্গে আলোচনা করে আমরাই সিদ্ধান্ত নিই। তবে মনে রাখবেন, একটা মানববন্ধনে ৫০ হাজার লোক পেলে বড় কর্মসূচি দেওয়ার সাহস পাই আমরা। গণঅনশনে এক লাখ লোক পেলে আরও বড় কর্মসূচি দেওয়ার সাহস পাই। কিন্তু  আপনার কি প্রোগ্রামে আসেন?’

‘এই তো কিছু দিন আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়ে গেল। আমাদের প্রার্থীরা লাখ লাখ টাকা খরচ করেছেন। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে তারা এমপি হতেন, মন্ত্রী হতেন। আজকে আপনারা, আমরা— সবাই ক্ষমতাসীন দলের নেতা থাকতাম। মান-মর্যাদা থাকত,’— বলেন নজরুল ইসলাম খান।

বিজ্ঞাপন

বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঝাঁঝালো বক্তব্য দেওয়া কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘‘রাতে যখন ভোট কাটা হলো, তখন তো কোথাও প্রতিরোধ গড়ে তোলেননি। হয়তো বলবেন, পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিল, প্রতিবাদ করতে গেলে মেরে ফেলত। কিন্তু একটু আগেই তো বক্তব্য দিলেন, ‘রাজপথে রক্ত ঝরায়ে দেবো।’ ভোট কাটার সময় তো রক্ত দিলেন না! মুখের কথা এবং আচরণ যখন একরকম করতে পারব, পরিবর্তন তখনই আসবে। তা না হলে, এই হলের মধ্যে বড় বক্তৃতা করা যাবে, পরিবর্তন আসবে না।’’

নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমি শ্রমিক আন্দোলন করে আসছি। বড় বক্তৃতা কম দিইনি। সেখানে শ্রমিককে নিয়োগ করে মালিক, বেতন দেয় মালিক, প্রমোশন দেয় মালিক, সুযোগ-সুবিধা দেয় মালিক। সেই মালিকের বিরুদ্ধেই স্লোগান দেওয়াই, আন্দোলন করি, দাবি  আদায় করি। এই কাজ সারাজীবন করে আসছি।’

‘আমি পারি না আপনাদের মতো বড় বক্তৃতা দিতে? নাকি বেগম খালেদা জিয়াকে আপনাদের চেয়ে কম শ্রদ্ধা করি, কম ভালোবাসি? আমরা যখন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এরশাদবিরোধী আন্দোলন করি, তখন আপনাদের অনেকের জন্মও হয়নি। আমরা খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আপসহীন লড়াই করে শুধু দলটিকে টিকিয়ে রাখিনি, ক্ষমতাও এনেছি,’— বলেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা।

তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য যেকোনো ধরনের আন্দোলন করতে আমি রাজি। আপনারা মুখে যেমন বলেন, কাজে সে রকম কিছু করে দেখান, অনেক শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সেটা না করা পর্যন্ত আন্দোলন-সংগ্রাম জোরদার হবে না।’

জিয়া আদর্শ একাডেমির সভাপতি মো. আজম খানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা কাদের গণি চৌধুরী, আক্তারুজ্জামান বাচ্চুসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

নজরুল ইসলাম খান প্রতিবাদ সভা বিএনপি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর