Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

থানার ভেতরে ভিডিও ধারণ ও প্রচার করা অপরাধ: ব্যারিস্টার সুমন


১৫ এপ্রিল ২০১৯ ১৭:২৬

ঢাকা: থানার ভিতরে ভিডিও ধারণ ও প্রচার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ বলে উল্লেখ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যরিস্টার সায়েদুল হক সুমন। সোনাগাজী থানার প্রত্যাহার হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সময় তিনি আদালতকে একথা বলেন।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে বাদি হয়ে মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। মাদরাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি থানায় অভিযোগ দিতে আসার পর তাকে আপত্তিকর প্রশ্ন করা ও ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে এই তিনি মামলা করেন।

বিজ্ঞাপন

আদালতে সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, ‘সাধারণত আমরা দেখতে পাই ওসির নির্দেশে উপ-পরিদর্শক (এসআই) মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। কিন্তু ওসিই সেখানে ভিকটিমের ভিডিও ধারণ করলেন, আবার ভিডিওটি সোস্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেন। এই ঘটনা দেখার পর সাধারণ মানুষের আর যাওয়ার কোনো জায়গা থাকে না। মানুষের কোনো সমস্যা হলে প্রথমে ওসির কাছেই যায়। এখন থেকে ওই ভিডিও দেখার পর থেকে মানুষ পুলিশকে ভয় পাবে।’

নুসরাত হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশ আলোচিত ঘটনার মধ্যে অন্যতম উল্লেখ করে আদালতে মামলার বাদি বলেন, ‘নুসরাতকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। যৌন হয়রানির বিষয়ে নুসরাত অভিযোগ করলে আসামিসহ তাকে থানায় নেওয়া হয়। সেই সময় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন তাকে জেরা করেন। ওই জেরার ভিডিও তিনি নিজের মুঠোফোনে ধারণ করেন। নুসরাতের মৃত্যুর পরের দিন গত ১১ এপ্রিল তিনি ভিডিওটি বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেন।’

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ এমন ঘটনায় আর একটাও ঘটেনি। অথচ ওসি সাহেব নিজের রুমে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। থানার ভেতরে এমন ভিডিও ধারণ করা ও সম্প্রচার করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইননের অপরাধ। এই ঘটনার পরে ভিকটিম বেঁচে গেলেও, বেঁচে থাকাটা কঠিন হয়ে যেতে। গত ১১ এপ্রিল ইউটিউবে এই ভিডিও দেখতে পাই। অশ্লীল কিছু তথ্য ধারণ করে ইউটিউব/সোস্যাল মিডিয়াতে প্রকাশ করেছে। এর ফলে ভিকটিমের মানহানিও হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

মামলার এজাহারে থেকে জানা যায়, গত ২৭ মার্চ নুসরাতকে থানায় নিয়ে যায় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। সেখানে তিনি নিয়ম বহির্ভূতভাবে নুসরাতকে জেরা করতে থাকে। ওই জেরার সময় ভিডিও ধারণ করেন। পরবর্তীতে ফেসবুক ও ইউটিউবে তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই সময় মোয়াজ্জেম হোসেন অত্যন্ত অপমানজনক এবং আপত্তিকর ভাষায় প্রশ্ন করে নুসরাতকে। একপর্যায়ে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ওই ভিকটিমের বুকে হাত দিয়েও শ্লীলতাহানিও করে। ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন যা করেছেন, তা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।

নুসরাত হত্যা: ওসির বিরুদ্ধে মামলা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ

ওই ঘটনায় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারা মামলাটি দায়ের করা হয়। একইসঙ্গে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতার পরোয়ানা জারি করার আবেদন জানান।

উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাকে আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে। এ ঘটনায় রাফির মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। এর জেরে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় অধ্যক্ষের সহযোগীরা। চলতি মাসের ১০ তারিখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সারাবাংলা/এআই/এমও

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:৫০

সম্পর্কিত খবর