চট্টগ্রামে ১০ স্কুলবাস চালুর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
১৫ এপ্রিল ২০১৯ ২১:০৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে চট্টগ্রামে স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য ১০টি বাস চালুর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআরটিসি) চট্টগ্রাম নগরীতে ১০টি বাসে শিক্ষার্থীদের পরিবহন করতে বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া গত ৭ এপ্রিল সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবকে চিঠি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয়টি জানিয়েছেন। এছাড়া চিঠির অনুলিপি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পৌঁছেছে সোমবার (১৫ এপ্রিল)।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার চিঠি পেয়েছি। এখন সড়ক মন্ত্রণালয় বিআরটিসিকে বাসগুলো বরাদ্দের বিষয়ে চিঠি দেবে। তারপর বিআরটিসি সেগুলো আমাদের বুঝিয়ে দেবে। তখন আমরা একটা কমিটি করবো। সেই কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে- বাসগুলো কোন কোন রুটে কখন চলবে, বাসগুলোর জ্বালানির সংস্থান কীভাবে হবে, শিক্ষার্থীরা ফ্রি-তে চড়বেন নাকি তাদের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া হবে।’
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে ‘স্টুডেন্ট বাস সার্ভিস’ চালুর জন্য ১০টি বিআরটিসি বাস বরাদ্দের বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। স্কুলে যাতায়াতের সময় বাসগুলো ব্যবহার করা যাবে। জেলা প্রশাসক এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এই বিষয়ে সমন্বয় করবেন।
জেলা প্রশাসক ও শিক্ষার্থীদের দুই দফা বৈঠক
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গত বছরের আগস্টে তার সঙ্গে বৈঠকে এই দাবি তুলেছিলেন। তখনই তিনি মৌখিকভাবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জানান। এরপর গত মার্চে আবারও নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামলে তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জেলা প্রশাসক। তারা আবারও এই দাবি জোরালোভাবে তোলে। জেলা প্রশাসক লিখিতভাবে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব রাখেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও এই প্রস্তাব পাঠানো হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের অদূরে বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজিব নিহত হয়। এ ঘটনার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে সারাদেশে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেসময় চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির মধ্যস্ততায় জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষার্থীরা। বৈঠকে শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রুত মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক।
এরপর গত ১৯ মার্চ সকাল ৭টার দিকে রাজধানীর প্রগতি সরণিতে সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় আবরার আহমেদ চৌধুরী নামে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-র এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পর রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে নেমে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। সেসময় জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আবারও বৈঠক করেন শিক্ষার্থীরা।
বৈঠকে শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রামে স্কুল-কলেজের জন্য বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু, রাস্তার প্রতিটি মোড়ে সাইন ব্যবহার করা, ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ, জেব্রা ক্রসিং ও স্পিডব্রেকার নির্মাণের দাবি করেন।
সারাবাংলা/আরডি/আরএ/এমআই