একমাসের মধ্যে নুসরাত হত্যা মামলার রায় চায় মানবাধিকার কমিশন
১৬ এপ্রিল ২০১৯ ১৮:১০
ঢাকা: ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার রায় আগামী একমাসের মধ্যে চাই। তাই দ্রুত এ মামলার রায় পেতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রতি অনুরোধ তারা যেন তদন্ত প্রতিবেদন দ্রুত আদালতকে দেয়। একথা বলেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘আমরা দেখেছি শিশু রাজন, রাকিব হত্যার ক্ষেত্রে পুলিশ দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ায় আদালত দ্রুত সময়ের মধ্যেই অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ঘোষণা করতে সক্ষম হয়েছিল। আমরা নুসরাতের ক্ষেত্রেও সেটা দেখতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘নুসরাত হত্যার বিষয়ে যেসব তথ্য-প্রমাণ রয়েছে, তাতে মনে করি দ্রুত সময়ের মধ্যেই পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারবে।’
আইনে বলা আছে হাতেনাতে ধরা পড়লে ১৫ দিনের মধ্যেই পুলিশকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে হবে জানান মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান।
নুসরাতকে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাকে যেভাবে কেরোসিন ঢেলে হত্যা করা হয়েছে তা মানবতার ইতিহাসে জঘন্য অপরাধ।’
‘এ অপরাধে যারা জড়িত তারা ক্ষমার অযোগ্য। যদি আইনের মাধ্যমে তাদের দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করতে না পারি, তাহলে সমাজে এরকম হত্যা বন্ধ হবে না। নুসরাতের আত্মার শান্তির জন্য তার শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে হবে আমাদের।’
নুসরাত হত্যার মতো দেশের সব নারী-শিশু হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান কাজী রিয়াজুল হক।
সিরাজ উদ দৌলা কিভাবে মাদরাসার অধ্যক্ষ হলেন—সে প্রশ্ন রেখে মানবাধিকার কমিশনের প্রধান বলেন, ‘তদন্তে উঠে এসেছে তার বিরুদ্ধে ১৯৯৫ সাল থেকে এরকম নানা অপরাধে একাধিক মামলা হয়েছে। সে জেল খেটেছে। এমন জঘন্য চরিত্রের লোককে কিভাবে অধ্যক্ষ হিসেবে চাকরি দেওয়া হলো তা বোধগম্য নয়।’
এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘দেশ-বিদেশে নুসরাতের ঘটনা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। কিন্তু গ্রামগঞ্জে এমন ঘটনা অহরহ ঘটছে। বিচার প্রক্রিয়া সহজ করতে যে কাজগুলো নিষ্ঠার সঙ্গে করা দরকার সেগুলো করতে আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। তাই এমন ঘটনা যেনো নিয়ন্ত্রণে আনা যায় সেজন্য মানবাধিকার কমিশন কিছু কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।’
যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে একটি আইনের খসড়া তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর জেরে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় অধ্যক্ষের সহযোগীরা। চলতি মাসের ১০ তারিখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সারাবাংলা/এসএইচ/এমও