Friday 19 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সচেতনতা ছাড়া অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ সম্ভব নয়


১৮ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:১৯ | আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৯ ১১:৪৪
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: সচেতনতা ছাড়া অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ সম্ভব নয় উল্লেখ করে পরিবার থেকেই এসব রোগ প্রতিরোধে সচেতনতার শিক্ষা শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান।

তিনি বলেন, অসংক্রামক রোগের বার্ষিক খরচের বার্ষিক খরচ প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা এবং প্রতিনিয়ত এই খরচের পরিমাণ বাড়ছে। তাই অসংক্রামক রোগকে প্রতিরোধ করতে হবে। এর জন্য সচেতনতার বিকল্প নেই। আর সেই সচেতনতার শিক্ষা পারিবারিক পর্যায়ে থেকেই শুরু করতে হবে।

বুধবার ( ১৭ এপ্রিল) ‘এনসিডি চ্যালেঞ্জ হেলথ ইন অল পলিসি হোল সোসাইটি অ্যাপ্রোচ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ভোরের কাগজের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ওই সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন।

বিজ্ঞাপন

সেমিনারে ডা. মুরাদ আরও বলেন, এরই মধ্যে আমরা সবাই পরিশ্রম না করাসহ জাংকফুডের মতো ক্ষতিকর খাদ্যে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। ফলে অসংক্রামক ব্যাধি দিন দিন বাড়ছে। আমাদের সচেতনতার মাধ্যমেই চলার পদ্ধতিতে সুশৃঙ্খল জীবনযাপনের অভ্যাস করতে হবে।

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে অসংক্রামক রোগের কারণে মৃত্যুর হার প্রায় ৭০ ভাগ। আগের চেয়ে এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েছে। তাই এসব রোগ প্রতিরোধে মানসিকভাবে নিজেকে তৈরি করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক ব্যায়াম ও কায়িক শ্রম বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে এ সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে কোলেস্টোরেলের বৃদ্ধির হার ২৮ দশমিক ৪ ভাগ, উচ্চ রক্তচাপ ২৬ দশমিক ২ ভাগ, ক্যান্সারে আক্রান্ত ১১ ভাগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি) ১০ ভাগ এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্তের হার ৮.৪ ভাগ। যেসব কারণে অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়ে তার মধ্যে তামাক, অ্যালকোহল, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, বায়ু দূষণ ও কায়িক শ্রমের অভাব উল্লেখযোগ্য। তাই এসব বিষয়ে বেশি বেশি গবেষণা করার পাশাপাশি এসব রোগ প্রতিরোধে গবেষণার প্রতি গুরুত্ব দিতে আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।

মূল প্রবন্ধে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক এ এইচ এম এনায়েত হোসেন বলেন, মৃত্যুর জন্য বিশ্বে যে মোট দশটি কারণ রয়েছে তার মধ্যে সাতটিই নন কমিউনিকেবল ডিজিজ (এনসিডি) বা অসংক্রামক রোগের কারণে হচ্ছে। ২০১২ সালে এই মৃত্যুর হার ছির ৫২ ভাগ, ২০১৪ সালে ৫৯ ভাগ এবং ২০১৭ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৬৭ ভাগ। এনসিডি’র রোগগুলোর মধ্যে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, সিওপিডি ও মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতির জন্য তামাক, অ্যালকোহল, অস্বাস্থ্যকর খাবার, বায়ু দুষণ ও শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা দায়ী।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব আসাদুল ইসলাম বলেন, অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করতে হলে সব সেক্টরের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একার পক্ষে এই রোগ দূর করা সম্ভব নয়। কেননা অসংক্রামক রোগের সঙ্গে বায়ু, পানি, মাটি, খাদ্যসহ সবকিছু জড়িত। এক্ষেত্রে তিনি স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ গুলোর ওয়ান হেলথ প্ল্যানিংগুলোর অনুসরণের নির্দেশনা দেন এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের পলিসিগুলোর ভেতর স্বাস্থ্যের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন।

ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. ফয়েজ, অসংক্রামক রোগ বিভাগের লাইন ডিরেক্টর ডা. নুর মোহাম্মদ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আফজালুর রহমান, জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নুরুল হুদা লেলিন, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ, আইসিডিডিআর,বি’র সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ডা. শামস এল আরেফিন, ডা. আলিয়া নাহিদ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের এপিডেমিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শামীম রেজাসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/জেএ/ইএইচটি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর