Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দুর্যোগ বিষয়ক সরকারি নির্দেশনা প্রচারের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর


১৮ এপ্রিল ২০১৯ ১৯:৪২

ঢাকা: দুর্যোগ বিষয়ক সরকারি নির্দেশনা প্রচারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের (এনডিএমসি) সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন।

দুর্যোগ-দুর্ঘটনা মোকাবিলায় জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কি কি করণীয় সেগুলোর প্রচার নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান করবে। আর জাতীয়ভাবে যেকোনো দুর্যোগ এলে আমাদের করণীয় কী, সেই বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে। সেগুলোও ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

বিদ্যুৎ, গ্যাস সিলিন্ডারসহ দাহ্য পদার্থ ব্যবহারে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিছুদিন আগে একটা বহুতল ভবনে আগুন লাগলো। সেখানে যে বিষয়টা লক্ষ্যণীয় ছিল তা হলো, ওইখানে যারা কর্মরত ছিল তাদের মধ্যে কোনো সচেতনতা ছিল না। এমনকি সেখানে যে ফায়ার এক্সিট আছে সেটাও তারা জানে না।’

সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দুর্যোগ মোকাবেলায় কি ব্যবস্থা নিতে হবে সেজন্য সবাইকে অবহিত করতে হবে। এছাড়া বন্যা এবং অন্যান্য সব প্রাকৃতিক দুর্যোগে জনগণের ভোগান্তি ন্যূনতম পর্যায়ে আনতে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।’ এসময় দেশব্যাপী সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম জোরদারের আহ্বান জানান তিনি।

ব্যক্তিগত পর্যায়েও নিরাপত্তা সচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কোথায় কাজ করেন, কি করেন, সেখানে নিরাপত্তা কতটুকু নিজের ভেতরে সেই সচেতনতা আছে কিনা— এ ব্যাপারেও প্রস্তুতি থাকতে হবে। এখানেও সচেতনতা সৃষ্টি একান্ত প্রয়োজন।’

বিজ্ঞাপন

প্রাকৃতিক দুর্যোগ সফলভাবে মোকাবিলার জন্য সরকারের উদ্যোগ পর্যালোচনা এবং করণীয় বিষয় নির্ধারণ করতে হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে যথাসময় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি দেশব্যাপী সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম চালাতে হবে।’ এসময় তিনি জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি দুর্যোগের ক্ষতি কমাতে জাতীয়, প্রাতিষ্ঠানিক এবং ব্যক্তিপর্যায় থেকে যথাসময়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

সম্প্রতি রাজধানীর এফআর টাওয়ার এবং চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে অনেক মানুষের প্রাণহানির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশে ব্যাপক অবকাঠামোর উন্নয়ন যেমন হয়েছে, তেমনি অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনাও বাড়ছে। যখনই কোনো দুর্ঘটনার খবর আসে, সরকার অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে সাড়া দেয়। পূর্ববর্তী সরকারগুলো থেকে এই উদ্যোগ ব্যতিক্রমী।’

এছাড়া সংশ্লিষ্ট সরকারি সব অফিস এবং আওয়ামী লীগের কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের কাছে খাদ্য, ওষুধ এবং ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

১৯৯১ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের পর বিএনপি সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধু সরকার উপকূলীয় অঞ্চলকে জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষায় ‘মুজিব কিল্লা’ নামে ১ হাজার সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে বর্তমান সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।”

জনগণকে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আধুনিকায়ন আমাদের অনেক আরাম দিয়েছে। তবে এতে ঝুঁকিও কম নয়। এজন্য ঝুঁকি এড়াতে আমাদের সতর্ক হতে হবে।’ জনগণকে সবসময় সতর্ক থাকার পাশাপাশি বাসা-বাড়ি ও কর্মস্থলসহ যেকোনো জায়গা দুর্যোগ মোকাবিলার উপযোগী করে গড়ে তোলারও পরামর্শ দেন তিনি।

অগ্নিকাণ্ডে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ৮০০ বছরের বেশি পুরনো মধ্যযুগীয় স্থাপত্য নটরডেম ক্যাথিড্রাল ধ্বংস হওয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দুর্ঘটনার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এনডিএমসি’তে মন্ত্রী, সিনিয়র বেসামরিক কর্মকর্তা এবং তিন বাহিনীর প্রধানসহ সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা এজেন্সিসমূহের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।

সারাবাংলা/এনআর/এমও

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর