Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিদায় নিচ্ছেন ছালাম, অভিষেক হচ্ছে দোভাষের


১৮ এপ্রিল ২০১৯ ২১:০৮

আবদুচ ছালাম (বায়ে) ও এম জহিরুল ইসলাম দোভাষ

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দশ বছর পর বিদায় নিচ্ছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মো. আবদুচ ছালাম। শিগগিরই ছালামের চেয়ারে অভিষেক হতে যাচ্ছে আরেক আওয়ামী লীগ নেতা এম জহিরুল ইসলাম দোভাষের।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আলিয়া মেহের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে নতুন সিডিএ চেয়ারম্যান নিয়োগের চিঠি এসে পৌঁছেছে সংস্থাটিতে।

গতকাল বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জহিরুল আলম দোভাষকে পরবর্তী দুই বছরের জন্য সিডিএ চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হয়। আগামী ২৪ এপ্রিল অথবা যোগদানের তারিখ থেকে এই নিয়োগ কার্যকরের কথা বলা হয়েছে।

জানতে চাইলে সিডিএ’র চেয়ারম্যান মো. আবদুচ ছালাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রজ্ঞাপন এসেছে। আমার শেষ কর্মদিবস ২২ এপ্রিল। এরপর নতুন চেয়ারম্যান যোগদান করবেন।’

জহিরুল আলম দোভাষ সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। তবে আমি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগ সংক্রান্ত চিঠি পাইনি। আশা করছি রোববার পাব। চিঠিতে যেভাবে বলা হবে, সেভাবেই আমি যোগদান করব।’

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ২৩ এপ্রিল সিডিএ চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন ব্যবসায়ী আবদুচ ছালাম। তিনি ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক।

অন্যদিকে, নতুন দায়িত্ব পাওয়া জহিরুল আলম দোভাষ চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং চারবারের সাবেক কাউন্সিলর।

সিডিএ-চসিক দূরত্ব ঘোচাতে চান দোভাষ

দায়িত্ব নেওয়ার পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সিডিএ’র দূরত্ব ঘোচানোর কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন জহিরুল আলম দোভাষ। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, “সিডিএ এবং সিটি করপোরেশনের মধ্যে কোথায় যেন ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প নিয়ে দুই সংস্থার মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আমি চেষ্টা করব এই দূরত্বটা নিরসন করতে। কারণ সরকারি দু’টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দূরত্ব থাকলে জনগণের ভোগান্তি হয়।”

বিজ্ঞাপন

‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামবাসীর দুঃখ লাঘবের জন্য, জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। এই টাকা জনগণের। এখন কোনো সরকারি সংস্থার মধ্যে রেষারেষির কারণে জনগণ যাতে কষ্ট না পায়, সেই চেষ্টা আমি করব। সিটি করপোরেশনকে সঙ্গে নিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ আমি শেষ করার চেষ্টা করব।’

দোভাষ আরও জানান, সিডিএ’র চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো এগিয়ে নেওয়াকে তিনি প্রথম অগ্রাধিকার নির্ধারণ করেছেন।

‘সিডিএ’র অনেকগুলো উন্নয়ন প্রকল্প চলমান আছে। সেগুলোর বাস্তবায়ন যাতে দ্রুত হয়, সেই চেষ্টা আমার থাকবে। দায়িত্ব নেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালকদের সঙ্গে কাজ বুঝে নেবে। তারপর কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করব।’

দোভাষের ওপর শতভাগ আস্থা ছালামের

বিদায়ী চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম সারাবাংলাকে জানিয়েছেন গত ১০ বছরে সিডিএ’র মাধ্যমে ২০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প এসেছে। এর মধ্যে কিছু প্রকল্প তিনি শেষ করেছেন। অধিকাংশ প্রকল্প চলমান আছে।

ছালামের আশা, নতুন চেয়ারম্যান চলমান প্রকল্পগুলোর কাজ আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে নেবেন।

তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার উত্তরসূরী দোভাষ সাহেব শতভাগ সৎ লোক। উনি বনেদি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। উনার ওপর আমার শতভাগ আস্থা আছে। তিনি আন্তরিকতা দিয়ে আমার আনা প্রকল্পগুলোর কাজ এগিয়ে নেবেন বলে আমি আশাবাদি।’

ছালাম বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার ওপর আস্থা রেখে সিডিএ’র ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান পদে বসিয়েছিলেন। আমি সেই আস্থার প্রতিদান শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ১০ বছরে আমি ১০ দিন বিশ্রাম নিইনি। কখনো প্রতিশ্রুতি দেইনি, কাজ বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছি।”

বিজ্ঞাপন

জহিরুল আলম দোভাষ চট্টগ্রামকে সত্যিকারের বাণিজ্যিক রাজধানী ও বিশ্বমানের পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলবেন বলে আশা করছেন ছালাম।

উল্লেখ্য, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত আধুনিকায়ন, আউটার রিং রোড, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, জলাবদ্ধতা নিরসনসহ সিডিএ’র বেশ কয়েকটি মেগাপ্রকল্পের কাজ চলমান আছে, যার সবই এসেছে ছালামের হাত ধরে। ১০ বছরের কর্মকাণ্ডে বিভিন্ন বড় বড় প্রকল্প এনে যেমন প্রশংসিত হয়েছেন ছালাম, তেমনি বিশেষজ্ঞ মতামত ছাড়া অপরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের অভিযোগেও সমালোচিত হয়েছেন।

সারাবাংলা/আরডি/এমও

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর