রমজান আসছে, টের পাচ্ছে বাজার!
১৯ এপ্রিল ২০১৯ ১৩:৩৫
ঢাকা: একদিন পরই পবিত্র শবে বরাত। এর সপ্তাহ দুয়েক পরই শুরু হচ্ছে রমজান মাস। প্রতিবছর রমজান মাসের শুরুতে বা ঠিক আগে আগে বাড়তে শুরু করে মাছ-মাংস ও সবজির দাম। একই চিত্র এ বছরেও। পেঁয়াজ, আলু, সবজি থেকে মাংস— সবকিছুর দামই চড়া।
ক্রেতারা বলছেন, রমজান মাসের দুই সপ্তাহ আগেই বাজারে গিয়ে তাদের নাভিশ্বাস উঠতে শুরু করেছে। আর বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে সরবরাহ কম থাকায় পাইকারি বাজারে বাড়তি দাম গুনতে হচ্ছে তাদের। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) কারওয়ান বাজারে গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে। দোকানিরা জানালেন, এই বাজারে ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিলো ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। বেগুনের কেজি ২৫/৩০ টাকা থেকে পৌঁছে গেছে ৩০/৪০ টাকায়। মূলার এখনকার বাজার দর প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ টাকা। বরবটি, পটল ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা।
একইরকমভাবে করলার দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ৬৫ টাকা। ঢেঁড়স ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে। শিমের দাম বেড়েছে কেজিতে ১৫ টাকা। লাউয়ের দামও বেড়েছে প্রতি পিস ১০ টাকা। এছাড়া কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে পেঁপে, পাকা টমেটো, শশা ও গাজরের দাম। বলতে গেছে, বেগুন ও মূলা ছাড়া কোনো সবজিই ৫০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে, দেশি পেঁয়াজের পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ১০০ টাকা। আর আলু বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা পাল্লা দরে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬৫ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে পেঁয়াজের দাম প্রতি পাল্লায় ২০ টাকা আর আলুতে বেড়েছে ১০ টাকা।
কারওয়ান বাজারে বাজার করতে আসা নসরুল আমিন সারাবাংলাকে বলেন, গত সপ্তাহে ২৫ টাকায় বেগুন কিনেছি আজ ৪০ টাকায় কিনলাম। এরকম সব সবজির দামই বেড়েছে। মনে হচ্ছে রমজান মাস শুরুই হয়ে গেছে। এখনই যদি সবজির দাম এভাবে বেড়ে যায়, তাহলে রমজান এলে বাজার করাই কঠিন হয়ে পড়বে। এভাবে চলতে থাকলে আমরা সাধারণ মানুষ কোথায় গিয়ে দাঁড়াব? আমাদের কষ্ট কি কেউ দেখার নেই?
কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা রাশেদ বলেন, বাজারে সবজি কম। তাই দাম বেশি। এখানে আমাদের কী করার আছে? আমাদের বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এখন কি লস করে বিক্রি করব?
রাশেদ আরও বলেন, দেশের অনেক জেলা থেকেই সবজি আসছে না। তাই পাইকারি মোকাম থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। যখন কমে কিনব, তখন আবার দাম কমবে। তবে রমজানের আগে দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।
কেবল সবজি নয়, মুরগির মাংসের বাজারও চড়া। মাংসের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকায়। লেয়ার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগিতে ১৫ টাকা। এ দুই প্রজাতির মুরগির দাম এখন প্রতিকেজি যথাক্রমে ২২০ ও ২৮০ টাকা। তবে গরুর মাংস আগের মতোই ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যদিও মাস দুয়েক আগেও গরুর মাংসের দাম ছিল ৫০০ টাকা।
এদিকে, মাছের দাম আছে আগের মতোই। তেলাপিয়া মাছ প্রতি কেজি ১৫০ টাকা, পাঙাস ১৮০ টাকা, রুই ৩৫০ টাকা, পাবদা ৬০০ টাকা, টেংরা ৭০০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ও বোয়াল ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছ বাজারে কথা হয় ব্যবসায়ী রহমত উল্লাহর সঙ্গে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, আমরা যেমন দামে কিনি, তেমন দামে বিক্রি করি। মাছের দাম এখন কম আছে। আবার আমাদের যখন বেশি দামে কিনতে হবে, তখন বিক্রিও করতে হবে বেশি দামে। মোকামে দাম কেমন, তার ওপরই নির্ভর করবে মাছের দাম।
সারাবাংলা/এসজে/টিআর