Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নতুন ভোটার তালিকায় নাম উঠবে যেভাবে


২০ এপ্রিল ২০১৯ ১০:১৩

ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে সারাদেশে শুরু হচ্ছে প্রথম ধাপে ৬৪টি জেলার ১৩৫টি উপজেলায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম। ওইদিন থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নতুন ভোটার হওয়ার যোগ্য নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। তথ্য সংগ্রহের এই কাজ চলবে ১৩ মে পর্যন্ত। পরবর্তীতে ২৫ মে থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত নিবন্ধন কার্যক্রম চলবে। তথ্য সংগ্রহের সময় কেউ বাদ পড়লে তিনি নিবন্ধন কেন্দ্রে গিয়েও তথ্য দিয়ে নিবন্ধিত হতে পারবেন। এছাড়াও, নতুন ভোটার তালিকায় নাম ওঠাতে তথ্য সংগ্রহকারীর নিকট কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করতে হবে।

এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সারাবাংলাকে বলেন, আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে ১৩ মে পর্যন্ত সারাদেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। পরবর্তীতে ২৫ মে থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত নিবন্ধন কার্যক্রম চলবে। কোনো কারণে তথ্য সংগ্রহের সময় কেউ বাদ পড়লে তিনি নিবন্ধন কেন্দ্রে গিয়েও তথ্য দিয়ে নিবন্ধিত হতে পারবেন। কোনো অবস্থাতেই যাতে ভোটার হওয়ার যোগ্য কোনো নাগরিক ভোটার তালিকা থেকে বাদ না পড়ে সেজন্য সর্বাত্মক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

ইসি সচিব আরো বলেন, ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম এ রকম নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এর মধ্যে যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে তাদের নাম ২ জানুয়ারি ২০২০ সালে প্রকাশিত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হবে। আর তাদের বয়স এখনো ১৮ বছর পূর্ণ হয়নি, তাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবে।

কারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন:

২০০১ সালের ১লা জানুয়ারির আগে যারা জন্ম গ্রহণ করেছেন তারা এবার নতুন ভোটার হিসাবে তালিকাভুক্ত হতে পারবেন। ২০২০ সালের ২ জানুয়ারি তাদের নিবন্ধিত খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে। এবার প্রথমবারের ভোটার হওয়ার যোগ্য নাগরিকের পাশাপাশি যাদের বয়স ১৫ বছর হয়েছে তাদেরও তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এক্ষেত্রে যাদের জন্ম ২০০২ ও ২০০৩ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পূর্বে জন্ম তাদের নিবন্ধিত খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে ২ জানুয়ারি ২০২১ সালে। আর যাদের জন্ম ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পূর্বে তাদের নিবন্ধিত খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে ২ জানুয়ারি ২০২২ সালে।

হালনাগাদ কার্যক্রমে ভোটার স্থানান্তরিত হওয়া যাবে:

ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় এক এলাকার ভোটার অন্য এলাকায় ভোটার হিসাবে স্থানান্তরিত হতে পারবেন। এছাড়াও, বিগত সময়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে যারা বাদ পড়েছিলেন ভোটার তালিকা নিবন্ধনের জন্য তাদেরও তথ্য সংগ্রহ করা হবে। একইসঙ্গে হালনাগাদ চলাকালে ভোটার তালিকা থেকে মৃত ভোটারদের নাম বাদ দিতে তাদেরও তথ্য সংগ্রহ করা হবে। হালনাগাদ চলাকালে যে সব নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হবে তাদেরকে নির্ধারিত তারিখে সংশ্লিষ্ট রেজিষ্ট্রেশন কেন্দ্রে গিয়ে ছবি ও বায়োমেট্রিক দিয়ে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।

ভোটার হতে যেসব কাগজপত্র লাগবে:

নতুন ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন কপি অবশ্যই থাকতে হবে। কোনো কারণে তা না থাকলে নাগরিকত্বের সনদপত্র দেখাতে হবে। এটিও দেখানো সম্ভব না হলে বাবা, মা, স্বামী/স্ত্রীর ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি দেখাতে হবে। এছাড়াও, ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে এসএসসি পাসের সনদপত্র দেখাতে হবে (যদি থাকে)। অন্যদিকে, ইউটিলিটি যেমন, গ্যাসবিল, বিদ্যুৎবিল অথবা পানির বিলের ফটোকপি, বাড়ি ভাড়ার রশিদ কিংবা হোল্ডিং ট্যাক্স রশিদ যদি থাকে তা প্রয়োজনে দেখাতে হবে। অর্থাৎ নতুন ভোটার হতে যাওয়াকে ব্যক্তিকে প্রমাণ করতে হবে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক এবং তার বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে।

সারাবছর ভোটার হওয়ার সুযোগ আছে :

বাংলাদেশের যে কোনো নাগরিক যার বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে। এমন যে কোনো ব্যক্তি বিশেষ প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করে বছরের যে কোনো সময় জরুরিভাবে ভোটার হতে পারবেন।

প্রথমবারের মতো হিজড়া পরিচয়ে ভোটার হওয়া যাবে:

এবার ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় নারী বা পুরুষের পাশাপাশি প্রথমবারের মতো হিজড়া সম্প্রদায়ের কেউ চাইলে, হিজড়া লিঙ্গ পরিচয়েও ভোটার হতে পারবেন। এর আগে হিজড়ারা নারী অথবা পুরুষ পরিচয়ে ভোটার তালিকায় নিবন্ধিত হতেন। এবার তাদের জন্য আলাদা ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা হবে। যে সব হিজড়া নারী অথবা পুরুষ পরিচয়ে ভোটার হয়েছেন, তারাও ইচ্ছা করলে নিজ নিজ উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ফরম পুরণ করে হিজড়া পরিচয়ে নতুন করে ভোটার হতে পারবেন। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে ১৩ নভেম্বর মন্ত্রীসভায় হিজড়াদের আলাদা লিঙ্গ হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। পরে ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

রোহিঙ্গা প্রবণ এলাকায় ভোটার তালিকায় হালনাগাদে কড়াকড়ি:

দেশের রোহিঙ্গা প্রবণ চট্রগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবন এই চার জেলায় ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় তালিকায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। ওইসব এলাকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ ছাড়া কাউকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা যাবে না।

নারীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করতে বিশেষ উদ্যোগ:

যে সব নারী ধর্মীয় কারণে ছবি তুলতে চাননা তাদেরকে ইসলামী ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে প্রচারনামূলক সভা করে, ছবি তুলতে উৎসাহিত করা হবে। প্রয়োজনে ছবি তুললে ইসলাম ধর্মে নিষেধ নেই এ বিষয়ে ইসলামী ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হবে। ১৯ এপ্রিল শুক্রবার থেকে বিভিন্ন মসজিদে ভোটার তালিকা হালনাগাদ সম্পর্কে অবহিত করা হবে।

উল্লেখ্য, চলতি বছর ৮০ লাখ নতুন ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এবার ভোটার তালিকায় হালনাগাদ কার্যক্রমে মোট তথ্য সংগ্রহকারী থাকবে ৫২ হাজার ৫০০ জন, সুপারভাইজার ১০ হাজার ৫০০, টেকনিক্যাল সাপোর্টে থাকবে ৬৪জন এবং রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্র থাকবে ৭৮০ পয়েন্টে। প্রতি দুই হাজার নাগরিকের বিপরীতে একজন করে তথ্য সংগ্রহকারী নিয়োগ দেয়া হবে। পাঁচজন তথ্য সংগ্রহকারীর জন্য থাকবেন একজন সুপারভাইজার। প্রতি ৭০ জন নাগরিকের জন্য একজন করে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ করা হবে। প্রসঙ্গত, বর্তমানে দেশে ভোটার রয়েছেন ১০ কোটি ৪১ লাখ ৩৮১ জন।

সারাবাংলা/জিএস/জেএএম

জন্ম নিবন্ধন কপি ভোটার তালিকা ভোটার তালিকা হালনাগাদ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর