ব্রুনেইয়ের পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
২১ এপ্রিল ২০১৯ ০৯:০২
ঢাকা: ব্রুনেই দারুসসালামের সুলতান হাজি হাসানাল বলকিয়ার আমন্ত্রণে তিন দিনের সরকারি সফরে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (২১ এপ্রিল) সকালে রওনা দেন তিনি। টানা তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর দ্বিতীয়বারের মতো বিদেশ সফর হিসেবে ব্রুনেই যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
রোববার সকাল ৮টার কিছু পরে রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে ব্রুনেইয়ের উদ্দেশে যাত্রা করেন প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা। বিমানটির স্থানীয় সময় দুপুর পৌনে ৩টায় ব্রুনেইয়ের রাজধানী বন্দরসেরি বেগাওয়ানের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
সেখানে ব্রুনেইয়ের যুবরাজ হাজী আল-মাহতাদী বিল্লাহ প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন। বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধানমন্ত্রীকে মোটর শোভাযাত্রা সহকারে ইম্পায়ার হোটেল অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবে নেওয়া হবে। সফরকালে তিনি এই হোটেলে অবস্থান করবেন।
সফরের প্রথম দিন প্রধানমন্ত্রী হোটেলটির ইন্দেরা সামুদেরা বলরুমে ব্রুনেই প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত সংবর্ধনায় যোগ দেবেন। একই দিন তিনি ব্রুনেইয়ে বাংলাদেশের হাইকমিশনার আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দেবেন।
আগামীকাল সোমবার ব্রুনেইয়ের সুলতান বলকিয়ার সরকারি বাসভবন ইস্তানা নূরুল ইমামে চেরাদি লায়লা কেনচানায় সুলতান ও রাজকীয় পরিবারের সদস্যবর্গের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন শেখ হাসিনা। এরপর ইস্তানা নূরুল ইমামে বায়তুল মেশ্যুরায় সুলতানের সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠক শেষে সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে।
সোমবার বিকেলেই প্রধানমন্ত্রী ইম্পায়ার হোটেল অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবে ব্রুনেই ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী জামে আসর মসজিদ পরিদর্শন এবং এ মসজিদে আসর নামাজ আদায় করবেন। এরপর শেখ হাসিনা সুলতান আয়োজিত তার সরকারি বাসভবনে ভোজসভায় যোগ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার সকালে ব্রুনেইয়ের রাজধানীর জালান কেবাংসানের কূটনৈতিক জোনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের নতুন চ্যান্সেরি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। পরে তিনি রয়েল রেজালিয়া যাদুঘর পরিদর্শন করবেন। এদিন স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় ব্রুনেই থেকে যাত্রা করে সন্ধ্যায় ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে তার। সফরে বিভিন্ন খাতে দুই দেশের মধ্যে সাতটি সমঝোতা স্মারকে সই করার কথা রয়েছে তার।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, আমরা এরই মধ্যে বিভিন্ন সেক্টরে ছয়টি এমওইউ চূড়ান্ত করেছি। বাকি একটি এমওইউ বিবেচনাধীন। আমরা বাংলাদেশে ব্রুনেইয়ের বিনিয়োগ আশ্বাস পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী। চূড়ান্ত তালিকার এমওইউগুলো হচ্ছে— কৃষি, মৎস্য, পশু সম্পদ, যুব ও ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও জ্বালানি খাত।
দুই দেশের মধ্যেকার সম্পর্ক জোরদারের অংশ হিসেবে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে এই সফর সফল হবে বলে আশাবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ব্রুনেই। দেশটি ওআইসি ও আসিয়ানের সদস্য। সফরে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদে প্রত্যাবাসনের বিষয়টি নিয়ে ব্রুনেইয়ের সঙ্গে আলোচনা হবে। আমরা যেখানেই যাচ্ছি, আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যুটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। ব্রুনেই আসিয়ানের সদস্য হওয়ায় এই সফরেও বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।
অসারাবাংলা/এনআর/এসএমএন