‘বাংলাদেশ নিজেদের মেধায় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্ব দেবে’
২১ এপ্রিল ২০১৯ ১৬:৩২
ঢাকা: অনুকরণ করে নয়, নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে নিজেদের উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ নিজেদের মেধার মাধ্যমেই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্ব দেবে বলে আশাবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
প্রযুক্তির বাজারে আজকের তারুণ্য আগামীতে মূল চালিকাশক্তি হবে আশাবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আমার স্বপ্ন, আগামীতে হাইটেক সেক্টরে কাজ করবে বাংলাদেশের তরুণরা। কেবল চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে অংশ নয়, নেতৃত্বস্থানীয় অবস্থানেও আসবে বাংলাদেশ।
রোববার (২১ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ের বলরুমে ‘বিপিও সামিট-২০১৯’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ‘ট্রান্সফমিং সার্ভিস টু ডিজিটাল’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আইসিটি বিভাগ ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্য) যৌথ উদ্যোগে চতুর্থবারের মতো দুই দিনব্যাপী এ সামিটি অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন- ‘শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম নয়, সারাদেশের উন্নয়ন করছে সরকার’
সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত বেড়ে ওঠা খাত বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও)। প্রযুক্তি ব্যবসায়, বিশেষ করে আউটসোর্সিংয়ে নিজেদের অবস্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। আগামী তিন বছরের মধ্যে প্রযুক্তি খাত থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্য ঠিক রয়েছে। এরই মধ্যে আইসিটি খাত থেকে গত বছরে ১ বিলিয়ন ডলার অর্জিত হয়েছে।
দেশব্যাপী প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ ছড়িয়ে দিয়ে আইসিটি খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান জয়। এসময় তিনি নতুন নতুন প্রযুক্তিকে আত্মীকরণ করে উদ্ভাবনে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান তরুণদের প্রতি। বলেন, এর মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা বলেন, নিজেদের অর্থায়নে পদ্মাসেতু, মেট্রোরেলসহ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। এর মাধ্যমে সরকার প্রমাণ করেছে, বাংলাদেশ পরনির্ভরশীল থাকছে না। আমি খুব গর্বিত আওয়ামী লীগ সরকারের এই অর্জনে। এই উন্নয়নের অংশীদার হতে পারা ভাগ্যের বিষয়। বিশ্বে খুব কম দেশই এত কম সময়ে এত উন্নতি করতে পেরেছে।
সজীব ওয়াজেদ বলেন, শুধু তথাকথিত শিল্প নয়, জ্ঞানভিত্তিক শিল্প গড়ে তুলতেও নজর দিতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার দেশের প্রতিটি গ্রামেই অপটিক্যাল ক্যাবল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। আর এই প্রযুক্তি খাতে নারীরা যেন সমানভাবে সুযোগ পায়, সে উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে।
কারও সঙ্গে প্রতিযোগিতা নয়, আত্মনির্ভরশীল হয়ে নিজেদের চিন্তাভাবনা ও উদ্ভাবন দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেন সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি বলেন, ভারতের আইসটি খাতের সঙ্গে আমাদের কোনো প্রতিযোগিতা নেই। আউটসোর্সিং খাতে তারা এখন সারাবিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ওদের সঙ্গে এখনই লড়াই করতে পারব না। সেটা আমাদের জন্য সত্যি একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ। আমার বিশ্বাস, এটা আমাদের করতেও হবে না। আমাদের বিপিও ইন্ডাস্ট্রিকে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে না, দরকার নেই তাদের অনুকরণ করার।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশীয় বিপিও শিল্পের সাফল্য সক্ষমতা ও সরকারের নানামুখী উদ্যোগ উপস্থাপনের মাধ্যমে বিদেশি ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী বিপিও শিল্পের প্রসার ঘটাতে চার বছর ধরে এই সামিট অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এর আগে, জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে বিপিও সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, আইসিটি সচিব এন এম জিয়াউল আলম, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক।
এবারের সামিটে তরুণদের জন্য কাজের সুযোগ, দক্ষতা বৃদ্ধিসহ আটটি সেমিনার এবং তিনটি গোলটেবিল আলোচনা ও নলেজ শেয়ারিং সেশন অনুষ্ঠিত হবে। ব্যবসায়ীদের জন্য অনুষ্ঠিত হবে বিটুবি সেশন। এছাড়াও প্রতিদিন তরুণদের জন্য তাৎক্ষণিক চাকরির সুযোগ থাকবে। সামিটে বিভিন্ন সেশনে ৪০ জন স্থানীয় প্রতিনিধি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, মালয়েশিয়া, সিংগাপুর, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের বিপিও খাতের ২০ জন বিদেশি প্রতিনিধি অংশ নেবেন।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর
প্রধানমন্ত্রী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা বিপিও বিপিও সামিট সজীব ওয়াজেদ জয়