বিতর্কিত প্রশ্নপত্র: রামকৃষ্ণ মিশনের সেই শিক্ষক বরখাস্ত
২৩ এপ্রিল ২০১৯ ১৩:০১
ঢাকা: নবম শ্রেণির বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষার জন্য বিতর্কিত প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী সেই শিক্ষক শংকর চক্রবর্তীকে বরখাস্ত করেছে রামকৃষ্ণ মিশন উচ্চ বিদ্যালয়। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) স্কুলটির পরিচালনা পর্ষদ ও শিক্ষকদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রামকৃষ্ণ মিশন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়প্রকাশ সরকার সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। একাধিক পর্ন তারকার নাম ব্যবহার করে প্রণয়ন করা ওই প্রশ্নপত্রটি নিয়ে সারাবাংলাই প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রধান শিক্ষক জয়প্রকাশ সরকার বলেন, এই শিক্ষকের কারণে আমাদের প্রতিষ্ঠান যে কলঙ্কের ভাগীদার হলো, সেটি সত্যিকার অর্থেই খুব কষ্টের। কিন্তু কী আর করার আছে? তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আবার নতুন কেউ হয়তো নিয়োগ পাবেন শিক্ষক হিসেবে। তবে আমরা চেষ্টা করব এমন কাউকে স্কুলের সঙ্গে যুক্ত করতে, যিনি শিক্ষকতা পেশাকে সম্মান করেন এবং যত্নসহকারে পড়ান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কুলের এক শিক্ষক এ প্রতিবেদককে বলেন, স্কুলের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে। আমরা সবাই মিলে স্কুলটিকে একটি সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিলাম, সেখান থেকে এই বিতর্ক নিঃসন্দেহে স্কুলকে অনেক পিছিয়ে দিয়েছে।
তবে এ বিষয়ে রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ ও বহিষ্কৃত শিক্ষকের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গত ১৭ এপ্রিল রামকৃষ্ণ মিশন উচ্চ বিদ্যালয়ে বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সেই প্রশ্নপত্রের একটি প্রশ্নের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাবার নাম জানতে চাওয়া হয়। তাতে চারটি সম্ভাব্য উত্তরের একটি ছিল পর্ন তারকা মিয়া খালিফার নাম (প্রশ্নপত্রে মিয়া কালিফা লেখা)। আরেক প্রশ্নে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিখ্যাত কিশোর উপন্যাস ‘আম-আঁটির-ভেঁপু’র (প্রশ্নে আঁটি বানানে চন্দ্রবিন্দু নেই) রচয়িতার সম্ভাব্য নাম হিসেবে ছিল সাবেক পর্ন তারকা অভিনেত্রী সানি লিয়নের নাম!
প্রশ্নপত্রটির ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা তুমুল সমালোচনার জন্ম দেয়। বিষয়টি সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, সরকার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে এবং ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে। এদিকে, রামকৃষ্ণ মিশন উচ্চ বিদ্যালয় জানায়, প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী শিক্ষক শংকর চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে তারা।
সারাবাংলা/টিএস/টিআর