পোশাক শ্রমিকদের মজুরি ২৬ শতাংশ কমেছে: টিআইবি
২৩ এপ্রিল ২০১৯ ১৩:৫৬
ঢাকা: নতুন কাঠামোতে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি গড়ে ২৬ শতাংশ কমেছে বলে দাবি করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, মূল্যস্ফীতি ও ইনক্রিমেন্ট বিবেচনায় সর্বনিম্ন ২৫ থেকে ৩৬ শতাংশ মজুরি কমেছে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) আয়োজিত ‘তৈরি পোশাক খাতে সুশাসন: অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ পর্যালোচনা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে সংগঠনটির পক্ষে এ দাবি করা হয়। টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের উপস্থিতিতে পতিবেদনটির সার্বিক দিক তুলে ধরেন টিআইবির নাজমুল হূদা মিনা।
তিনি বলেন, নতুন মজুরি কাঠামোতে মালিকপক্ষের মূল মজুরি ২৩ শতাংশ বাড়ানোর দাবি করলেও প্রকৃত হিসাবে ২০১৩ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে তা প্রায় ২৬ শতাংশ কম।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নতুন কাঠামোতে আগের তুলনায় ২৬ শতাংশ মজুরি কমে গেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা ২৬ থেকে ৩২ শতাংশও। মজুরি তো বাড়েইনি। বরং যারা আন্দোলন করেছে তাদের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পোশাক খাতে অনেক অগ্রগতি হলেও প্রতিটি ক্ষেত্রেই ঘাটতি রয়ে গেছে। শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়টি পর্যাপ্ত দৃষ্টি পাচ্ছে না। ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির মধ্যে শুভঙ্করের ফাঁকি রয়ে গেছে। বাস্তবে মজুরি কমে গেছে বলে ধারণা করা হতো। আমাদের প্রতিবেদনেও তা উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তৈরি পোশাক খাতে অধিকাংশ সাবকন্ট্রাক্ট নির্ভর কারখানায় ন্যূনতম মজুরি দেয়া হয়না। গ্রেডিং বৈষ্যমের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ৫ হাজার শ্রমিককে আসামি করে ৩৫ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ১৬৮টি কারখানায় ১০ হাজার শ্রমিককে চাকরিচ্যূত করা হয়েছে।
মজুরির অগ্রগতির বিষয়ে টিআইবি বলছে, ২০১৩ সালে ৭৬ শতাংশ মজুরি বাড়িয়ে ন্যূনতম ৫৩০০ টাকা এবং ২০১৮ সালে ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি করে ৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। শ্রমিক আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ৬ টি গ্রেডে পুনয়ায় মূল মজুরি বাড়ানো হয়েছে। আর অধিকাংশ কমপ্লায়েন্ট কারখানায় সরকার নির্ধারিত মজুরি দেয়া খাতটির অন্যতম অগ্রগতি।
মাত্র ৩ শতাংশ কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন রয়েছে বলে জানান টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, দেশে ট্রেড ইউনিয়নের ক্ষেত্রে আইনি ও প্রায়োগিক দুর্বলতা দেখা যায়। মাত্র ৩ শতাংশ কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন গঠিত হয়েছে। যার অধিকাংশই মালিকদের দ্বারা প্রভাবিত।
অনুষ্ঠানে রানা প্লাজা দূর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জানানো হয়। দূর্ঘটনায় আহতদের পূনর্বাসন ও অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানায় সংগঠনটি। আর পোশাক খাতের উন্নয়নে ১২টি সুপারিশ জানায় টিআইবি।
সারাবাংলা/ইএইচটি/জেএএম