২০৩০ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতি চাইলেন পোল্ট্রি উদ্যোক্তারা
২৩ এপ্রিল ২০১৯ ১৫:২৬
ঢাকা: পোল্ট্রি শিল্পের জন্য ২০৩০ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতি’র দাবি জানিয়েছে এ খাতের উদ্যোক্তারা। সাশ্রয়ী মূল্যে নিরাপদ ডিম ও মুরগির মাংস উৎপাদন, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং পোল্ট্রি পণ্য রপ্তানীর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে কর অব্যাহতি চাওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ দাবি জানানো হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।
সভায় ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এহতেশাম বি. শাহজাহান বলেন, বিশ্বের বড় বড় দেশগুলোতে যেখানে পোল্ট্রি ও ফিস ফিড তৈরির অত্যাবশ্যকীয় কাঁচামাল নিজ দেশে উৎপাদিত হওয়ার পরও খামারিদের ভর্তুকী দেয়া হচ্ছে, সেখানে আমাদের দেশে ভূট্টা, সয়াবিন মিল, ঔষধসহ বেশিরভাগ কাঁচামাল আমদানি-নির্ভর হওয়া সত্ত্বেও এ খাতের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। শিল্প সংশ্লিষ্টরা যেহেতু ২০২৫ সালের মধ্যেই রপ্তানী শুরু করতে চান এবং ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্ববাজারে একটা শক্ত অবস্থান তৈরি করতে চান, তাই ২০৩০ সাল পর্যন্ত সব ধরনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর থেকে অব্যাহতি জরুরি।
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের হিসাব মতে দেশের জনসংখ্যা বর্তমানে প্রায় ১৬ কোটি ৭৭ লাখের ওপরে। সে হিসাবে দেশের ডিম ও মুরগির মাংসের উৎপাদন ব্যয় প্রায় ২.৭ বিলিয়ন ডলার। দেশিয় পোল্ট্রি শিল্প গড়ে না উঠলে প্রতিবছর এই বিশাল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হতো ডিম ও মুরগির মাংস আমদানির পেছনে। সরকার চাচ্ছে ২০২১ সালের মধ্যে মাথাপিছু ডিমের বার্ষিক উৎপাদন ৯০ থেকে বাড়িয়ে ন্যূনতম ১০৪টিতে এবং মাংসের উৎপাদন ৬.৫ কেজি থেকে বাড়িয়ে ৭.৫ কেজিতে উন্নীত করতে। সেটি করতে হলে ঠিক এই মুহুর্তে চাহিদা ও যোগানের যে চিত্র তাতে বছরে অন্তত ২৩৪ কোটি ৮২ লাখ ডিম এবং ১ লক্ষ ৮৫ হাজার টন মুরগির মাংসের উৎপাদন বাড়াতে হবে। আর যদি রপ্তানীতে যেতে হয় তবে বছরে অন্তত ১২০০ কোটি ডিম ও ৮ লাখ টন মুরগির মাংসের উৎপাদন বাড়াতে হবে।
এই নেতা আরও বলেন, মিট এন্ড বোন মিলের আমদানি বন্ধ হওয়ায় ভেজিটেবল সোর্স থেকে উৎপাদিত প্রোটিন মিল ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে খরচ বাড়ছে। তাই সব ধরনের ভেজিটেবল প্রোটিন ও ভেজিটেবল সোর্স থেকে উৎপাদিত প্রোটিন মিল/প্রোটিন কনসেনট্রেট, সি-ফুড মিল, ক্র্যাব মিল, পোল্ট্রি মিলের আমদানি শুল্ক শূন্য করার দাবি করছি। ভূট্টা আমদানির ওপর থেকে ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর, সয়াবিন অয়েল কেক আমদানির ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি, কাসাব আমদানিতে ১৫ শতাংশ কাস্টমস ডিউটি, ১০ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি, ১৫ শতাংশ ভ্যাট, ৫ শতাংশ এআইটি ও ৫ শতাংশ এটিভি, কটনসিড মিল ও পাম কারনেল মিল ওপর ৫ শতাংশ কাস্টমস ডিউটি ও ৫ শতাংশ অগ্রিম ভ্যাট (এটিভি) প্রভৃতি উপকরণগুলো শূণ্য শুল্কে আমদানি সুবিধার দাবি করছি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনা করব। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আসলে ভ্যাট মওকুফ করা যাবে কিনা। আর ভ্যাট মওকুফ করলে আসলে প্রান্তিক খামারীরা সুবিধা পাবেন কিনা সেটাও ভেবে দেখতে হবে।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফজলে রহিম খান শাহরিয়ার, সাংগঠনিক সচিব মোঃ আনোয়ারুল হক, ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আসিফুর রহমান, আহকাব সভাপতি ডা. নজরুল ইসলাম, বিপিআইএ’র মহাসচিব ডা. এমএম খান, বিপিআইসিসি’র সচিব দেবাশিস নাগ, উপদেষ্টা শ্যামল কান্তি ঘোষসহ অনেকেই।
সারাবাংলা/এসজে/জেএএম