জব্বারের বলিখেলার আসর বসছে বৃহস্পতিবার, মেলা শুরু কাল
২৩ এপ্রিল ২০১৯ ১৯:৫৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত শত বছরের ঐতিহ্যবাহী লোকক্রীড়া আবদুল জব্বারের বলিখেলার আসর বসছে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) । বলিখেলা উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও একদিন আগে বুধবার (২৪ এপ্রিল) শুরু হচ্ছে তিনদিন ব্যাপী বৈশাখী মেলা। মেলা উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের পণ্যের পসরা নিয়ে ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম নগরীতে এসেছেন বিক্রেতারা। লাখো মানুষের সমাগমে এবারও বলিখেলা ও বৈশাখী মেলা সংস্কৃতিপ্রাণ বাঙালির মিলনমেলায় পরিণত হবে বলে মনে করেন আয়োজকরা।
আব্দুল জব্বারের বলিখেলা ও বৈশাখী মেলা কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী সারাবাংলাডটনেটকে বলেন, ‘প্রতিবছর হাজারের ওপর দোকান বসে। প্রতিবছরই দূর-দূরান্ত থেকে নতুন নতুন দোকানিও আসছেন। মেলায় সবসময় বিক্রি ভালো হয়। চট্টগ্রামের মানুষ তো আছেই, আশপাশের অন্তত ৪-৫ জেলার মানুষ মেলায় কিনতে আসে। এজন্য সারাদেশের দোকানিদেরও এই মেলার প্রতি আগ্রহ বেশি।’ বুধবার (২৪ এপ্রিল) শুরু হয়ে শুক্রবার মেলা শেষ হবে বলেও তিনি জানান।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বলিখেলার উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মাহাবুবুর রহমান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বলিখেলার বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করবেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
এবারের আব্দুল জব্বারের বলিখেলা স্পন্সর করছে গ্রামীণফোন।
প্রতিবছরের মতো এবারও চট্টগ্রাম নগরীর লালদিঘির মাঠ ঘিরে আশপাশের এক বর্গকিলোমিটার এলাকায় বৈশাখী মেলার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এটি একটি সার্বজনীন মেলা। যেখানে সুঁই-সূতা থেকে শুরু করে গৃহস্থালি পণ্য, মাটির তৈরি তৈজসপত্র, খাট-সোফাসহ আসবাবপত্র, নাড়ু-মোয়া-জিলিপি, গাছের চারা, এমনকি খাঁচার পাখিও কিনতে পাওয়া যায়। মেলার বিভিন্ন পয়েন্টে নাগরদোলার আয়োজন তো প্রতিবছরই অন্যতম আকর্ষণের বিষয়।
এবারও মেলার আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগেই সড়কের পাশে পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ব্যবসায়ীরা। বংশপরম্পরায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিবছর মেলাতে আসেন বিভিন্ন ব্যবসায়ী।
কে সি দে রোডে মাটির তৈরি ব্যাংক-খেলনার সামগ্রী নিয়ে আসা কামাল উদ্দিনের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার কালিগঞ্জে। তিনি সারাবাংলা.নেটকে বলেন, ‘আমার বাবা-দাদারাও মাটির জিনিস বানাতেন। এটা আমাদের পারিবারিক ব্যবসা। আমাদের মাটির তৈরি জিনিস বিভিন্ন মেলায়, দোকানে সরবরাহ করি। চট্টগ্রামের বলিখেলার মেলায় প্রতিবছর আমরা নিজেরাই আসি।’
পটিয়া উপজেলার রতনপুর থেকে ঝাড়ু নিয়ে এসেছেন আরিফ। তিনি সারাবাংলাকে জানান, বাবা ও ছেলে মিলে গত ১০ বছর ধরে তারা মেলায় ঝাড়ু বিক্রি করছেন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম শহরের বক্সিরহাট এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী প্রয়াত আবদুল জব্বার সওদাগর ১৯০৯ সালের বৈশাখ মাসে এই বলিখেলার প্রচলন করেন। বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ এবং যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে শক্তিমত্তা প্রদর্শনের মাধ্যমে মনোবল বাড়িয়ে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে নামানো ছিল বলিখেলা আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য।
লালদিঘীর মাঠে এবার বসছে এই বলিখেলার ১১০তম আসর।
সারাবাংলা/আরডি/এসবি