শ্রীলংকায় বোমা হামলায় প্রাণ হারিয়েছে ৪৫ শিশু: ইউনিসেফ
২৪ এপ্রিল ২০১৯ ১৬:১৯
ইস্টার সানডেতে শ্রীলংকায় চালানো বোমা হামলায় নিহতদের মধ্যে অন্তত ৪৫ জন শিশু রয়েছে। আহত হয়েছে অনেক শিশু। এছাড়া, অভিভাবক হারিয়েছে আরও অনেকে। এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। খবর বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার।
গত রোববার (২১ এপ্রিল) শ্রীলংকায় চার গির্জা, তিন হোটেল ও বাড়িতে বোমা হামলা চালায় নয় আত্মঘাতী বোমারু। হামলায় নিহত হন ৩৫৯ জন। আহত হন আরও পাঁচ শতাধিক। নিহতদের মধ্যে ৩৯ জন বিদেশি নাগরিকও রয়েছেন।
এদিকে, ইউনিসেফ মুখপাত্র ক্রিস্টোফে বৌলিয়েরাক এক সংবাদ সম্মেলন জানান, এখন পর্যন্ত ওই হামলায় প্রাণ হারিয়েছে ৪৫ শিশু। আহত হয়েছেন অনেকে। দেশজুড়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে অনেকে।
বৌলিয়েরাক জানান, নিহত শিশুদের মধ্যে নেগোম্বোর সেইন্ট সেবাস্টিয়ান’স গির্জায় হওয়া হামলায় নিহত হয় ২৭ শিশু। আহত হয় আরও ১০ জন। বাত্তিচালোয়ায় হওয়া হামলায় প্রাণ হারায় আরও ১৩ শিশু। তাদের মধ্যে সবচেয়ে কমবয়সি শিশুর বয়স ছিল ১৮ মাস। এছাড়া, নিহত শিশুদের মধ্যে পাঁচ জন বিদেশিও রয়েছে।
আরও পড়ুন- শ্রীলংকায় বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫৯, গ্রেফতার ৫৮
হামলার পর অন্তত ২০ শিশুকে কলম্বোতে বিভিন্ন হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ারে ভর্তি করা হয়েছে।
ইউনিসেফ মুখপাত্র জানান, অনেক শিশু তাদের পিতা-মাতা উভয়কে আর কেউ কেউ একজনকে হারিয়েছে। তারা ভয়াবহ সহিংসতার সাক্ষী হয়েছে।
হামলায় থেমে যায় জায়ানের হৃদস্পন্দন
হামলায় নিহত শিশুদের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নাতি শিশু জায়ানও (৮) রয়েছে। ইস্টার সানডে’র দিনে শ্রীলংকার সিরিজ বোমা হামলায় প্রাণ হারিয়েছিল পরিবারের সঙ্গে শ্রীলংকায় বেড়াতে যাওয়া জায়ান।
শেখ সেলিমের পরিবার সূত্রে জানা যায়, শেখ সেলিমের মেয়ে আমেনা সুলতানা সোনিয়া তার স্বামী মশিউল হক চৌধুরী প্রিন্স ও দুই ছেলেকে নিয়ে শ্রীলংকায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। তারা কলম্বোর পাঁচ তারকা হোটেল সাংগ্রিলায় উঠেছিলেন। সকালে বড় ছেলে জায়ান চৌধুরীকে নিয়ে হোটেলে নাস্তা করতে গিয়েছিলেন প্রিন্স। একই সময়ে ছোট ছেলে জোহানকে নিয়ে হোটেল কক্ষে অবস্থান করছিলেন আমেনা সুলতানা সোনিয়া।
ইস্টার সানডের ওই সকালে যে তিনটি হোটেলে সিরিজ বোমা হামলা চালানো হয়, তার মধ্যে ছিল হোটেল সাংগ্রিলাও। জায়ানকে নিয়ে প্রিন্স যখন নাস্তা করতে নেমেছিলেন, হামলাটি ঠিক সেই সময়ই ঘটে। তাতে আহত হয়েছে এখন হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন প্রিন্স। আর শিশু জায়ানের স্পন্দন থেমে যায় ওই সময়ই।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় আট বছর বয়সী জায়ানের মরদেহ বহনকারী শ্রীলংকান এয়ারলাইন্সের ইউএল ১৮৯ নম্বর ফ্লাইট। পরে দুপুর ১টা ৮ মিনিটে বনানীর বাসভবনের পথে রওনা দেন জায়ানের স্বজনরা।
সারাবাংলা/আরএ