জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের সব সেবার সময় ৩ থেকে ১৫ দিন
২৪ এপ্রিল ২০১৯ ২২:১৬
ঢাকা: জনসাধারণের হয়রানি দূর করতে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের সেবা দেওয়ার পদ্ধতি ও সময়সীমা কমে আসছে। সরকারের এই সংস্থার দেওয়া সব সেবাপদ্ধতি সহজ করা হচ্ছে। এখন থেকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের অধিকাংশ সেবা তিন থেকে ১৫ দিনের মধে নিষ্পত্তি করতে হবে। পাশাপাশি সব কাজ অটোমেশন পদ্ধতিতে হবে। এছাড়া নতুন নিয়ম বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, তা মন্ত্রণালয় থেকে তদারকি করা হবে। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সেগুনবাগিচায় জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে দুপুর ১২টায় আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘জনগণ যেন সহজে ও অল্প সময়ে সেবা পায়, সেজন্য গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের সেবায় অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে। যা কাল আপনারা জানতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘এখন অধিকাংশ কাজ সর্বোচ্চ ১৫ দিনের নিষ্পত্তি হবে। এর ফলে সরকারের এই সংস্থাটির সেবার মানে আমূল পরিবর্তন আসবে। ’
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে প্লট কিংবা ফ্ল্যাট হস্তান্তর অনুমতির ক্ষেত্রে সময় লাগে কাগুজে হিসাবে ৪২ দিন। সেবা সহজীকরণের নতুন নিয়মে ১৫ দিনের মধ্যে আবেদন নিষ্পত্তির করার কথা বলা হয়েছে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী এর বেশিরভাগ কাজ অটোমেশন পদ্ধতিতে সম্পন্ন হবে। নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, সব ধরনের হস্তান্তর (হেবা/দানসহ) এবং নামজারি অনুমতির আবেদন একসঙ্গে প্রধান কার্যালয়ে করতে হবে। এ সময় সকল ফি একত্রে আদায় করে গ্রহীতার নামে নামজারি করে দিতে হবে। পরিচালক পর্যায়ে নথি নিষ্পত্তি হবে। একইভাবে এক দিনের মধ্যে ওয়ানস্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে নামজারি অনুমতির নথি নিষ্পত্তি করতে হবে।
প্লট/ফ্ল্যাটের দখল প্রদানের ক্ষেত্রে নতুন নিয়মে ১০ দিনের মধ্যে সুরাহা হবে। নির্ধারিত ফি পরিশোধ হলেই গ্রাহকের কাছে সক্রিয়ভাবে মেসেস/ই-মেইল চলে যাবে। আবেদন করা লাগবে না। ফ্ল্যাটের প্রাপ্যতা সাপেক্ষে সময় নির্ধারণ করা হবে। নথি নিষ্পত্তি হবে পরিচালক পর্যায়ে।
একাধিক প্লটের ওপর যৌথভাবে ভবন নির্মাণের অনুমতি নিতে বর্তমানে ৫৬ দিন লাগে। নতুন নিময়ে লাগবে ১০ দিন। মাঠপর্যায়ের প্রতিবেদন পাঠাতে হবে ই-মেইলে। এ ধরনের প্রস্তাব চেয়ারম্যান পর্যায়ে নিষ্পত্তি হবে।
দান কিংবা হেবার অনুমতি নিতে এখন ৫১ দিন লাগলেও নতুন নিয়মে লাগবে ১০ দিন।
বর্তমানে খেলাপির কিস্তির টাকা জমা দেওয়ার অনুমতি নিতে ২৩ দিন লাগে। নতুন নিয়মে এই সময় লাগবে ৩ দিন। এজন্য আবেদন করতে হবে না।
সরাসরি ব্যাংকের মাধ্যমে সুদসহ অর্থ জমা দেওয়া যাবে। তবে, এক থেকে ৫ বছরের বেশি খেলাপি হলে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের অনুমতি নিতে হবে।
বর্তমানে দায়মুক্তির ছাড়পত্র নিতে সময় লাগে ২৬ দিন। নতুন নিয়মে লাগবে ৩ থেকে ৭ দিন।
২০১০ সালের আগের বিষয় হলে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে চালান গ্রহণ করা হবে। ভাঙা ও পুনঃনির্মাণের অনুমতি প্রথমবার নির্বাহী প্রকৌশলী পর্যায়ে নিতে হবে। পরবর্তী সময়ে প্রধান কার্যালয়ের অনুমতি নিতে হবে, যা উপপরিচালক পর্যায়ে নিষ্পত্তি হবে।
বর্তমানে সময় বর্ধিতকরণের নথি নিষ্পত্তি করতে লাগে ২৫ দিন। নতুন নিয়মে সময় লাগবে ৩ দিন। এ সংক্রান্ত ফি সরাসরি ব্যাংকে জমা দিতে হবে। বর্তমানে বন্ধক অনুমতি নিতে সময় লাগে ১৭ দিন। নতুন নিয়মে ৩ দিনে সম্পন্ন হবে। এ সংক্রান্ত ফি ব্যাংকে সরাসরি জমা দিতে হবে এবং প্রধান কার্যালয়ের অনুমতি নিতে হবে। বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে উপপরিচালক পর্যায়ে। এছাড়া সঙ্গে লাগবে মূল দলিলের নকল এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের হালনাগাদ কপি। সব ধরনের হস্তান্তর (হেবা/দানসহ) এবং নামজারির অনুমতির আবেদন একসঙ্গে প্রধান কার্যালয়ে করতে হবে। এ সময় সব ফি একসঙ্গে আদায় করে গ্রহীতার নামে নামজারি করে দিতে হবে। নথি নিষ্পত্তি হবে পরিচালক পর্যায়ে।
ওয়ারিশ সূত্রে নামজারির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে নামজারি করতে হবে। এছাড়া প্লট বরাদ্দের আবেদন নিষ্পত্তি হতে বর্তমানে প্রায় ৬ মাস লাগলেও নতুন নিয়মে লাগবে তিন মাস। বর্তমানে প্লট বিভাজনের অনুমতি পেতে ৬৮ দিন লাগে। এটি কমিয়ে করা হয়েছে ১০ দিন। বাড়ি বরাদ্দের আবেদন নিষ্পত্তি ৫৩ দিন থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ২৮ দিন। এই ক্ষেত্রেও মাঠপর্যায়ের প্রতিবেদন ই-মেইলে দিতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করতে গেলে বর্তমানে লাগে ৫০ দিন। নতুন নিয়মে লাগবে ৭ দিন। এ সংক্রান্ত নথি নিষ্পত্তি হবে সদস্য (ভূমি) পর্যায়ে। আমমোক্তারনামা নিয়োগ ও গ্রহণের অনুমতির আবেদন নেওয়া হবে অনলাইনে। নিষ্পত্তিও হবে দ্রুত। কনভারশন অনুমতি ৬০ দিনের পরিবর্তে ২৫ দিনে সম্পন্ন হবে।
সারাবাংলা/এইচএ/এমএনএইচ