গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সংসদে সাধারণ আলোচনার দাবি
২৫ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৩০
সংসদ ভবন থেকে: ফেনীতে মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যা ও শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ বোমা হামলাসহ সামাজিক অবক্ষয় নিয়ে জাতীয় সংসদে একটি সাধারণ আলোচনার দাবি জানিয়েছেন সরকার ও বিরোধী দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা।
তারা বলেন, সম্প্রতি ধর্মের নামে প্রতিহিংসার আগুনে সারা দুনিয়া জ্বলছে। মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতকে বর্বরোচিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। জঙ্গী-সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বাংলাদেশ এখনও নিরাপদ নয়। দেশের বিভিন্নস্থানে কিছু সামাজিক অবক্ষয়ের চিত্রও দেখা যাচ্ছে। এসব নিয়ে সংসদে সাধারণ আলোচনা হওয়া উচিত।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এ দাবি জানান।
পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। তার বক্তব্যে সমর্থন করে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশ জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল, জাতীয় পার্টির ডা. রুস্তম আলী ফরাজী, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর এবং গণফোরামের মোকাব্বির খান।
প্রস্তাব উত্থাপন করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘গত দুই মাসে দেশে-বিদেশে অনেক ঘটনা ঘটেছে। হিংসা-প্রতিহিংসায় রক্তাক্ত হয়েছে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা। একজন মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত প্রতিহিংসার আগুনে ছারখার হয়ে গেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মমতাময়ী হাত নুসরাতকে রক্ষা করতে পারেনি। জায়ান চৌধুরীর ছবি দেখলে মানুষের মন কেঁদে ওঠে। নিষ্পাপ এই শিশুটি জঙ্গী হামলায় নিহত হলো বিদেশের মাটিতে। ধর্মের নামে হত্যা চলছে। এ ব্যাপারে সংসদে সাধারণ আলোচনা হওয়া উচিত।’
সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘শিশু জায়ানের মৃত্যু গোটা দেশের মানুষকে ব্যাথিত করেছে। অনেকেই চোখের পানি রাখতে পারেননি। শোক প্রকাশ করার ভাষা আমাদের জানা নেই। নুসরাত হত্যাকাণ্ড সমগ্র বাঙালি জাতির হৃদয়কে নাড়া দিয়েছে। একজন ছাড়া সব অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে সামাজিক অবক্ষয় চলতে পারে না।’ এ ব্যাপারে তিনি আইনমন্ত্রীর দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘নুসরাতের ঘটনা সাধারণভাবে দেখলে চলবে না। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নির্যাতন বন্ধে কমিটি গঠন করতে হবে। হলি আর্টিজানে জঙ্গীবাদের তাণ্ডব আমরা দেখেছি। ওই ঘটনার পর পর্যটন শিল্প প্রায় ধ্বংস হতে বসেছিল। এখন শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ডে এসব ঘটেছে। ইউটিউবে নানাভাবে জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারেও নজর দিতে হবে।’
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ফ্লোর নিয়ে বলেন, ‘জঙ্গী-সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বাংলাদেশ এখনও নিরাপদ নয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অগ্রযাত্রা থামাতে জঙ্গী-সন্ত্রাসী ও সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলো এখনও ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। ধর্মের মুখোশধারী, ধর্ম ব্যবসায়ীরা ক্রমাগত নারী-সংখ্যালঘু ও বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে নানা উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। তেঁতুল তত্ত্ব ও জঙ্গী-রাজাকার তত্বের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়তে হবে।’
সারাবাংলা/এএইচএইচ/ইউজে/পিএ