যাত্রার জন্য প্রস্তুত বিরতিহীন আন্তঃনগর ‘বনলতা এক্সপ্রেস’
২৫ এপ্রিল ২০১৯ ০৬:৫২
রাজশাহী থেকে: চালু হচ্ছে দেশের তৃতীয় বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন বনলতা এক্সপ্রেস। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন ঢাকা-রাজশাহী রুটে মাত্র পৌনে ৫ ঘণ্টায় আসা-যাওয়া করবে এই ট্রেনটি। প্রথমবারের মতো বায়ো টয়লেট সংযুক্ত করা হয়েছে বনলতা এক্সপ্রেসে। উত্তরাঞ্চলের প্রথম দ্রুতগামী বিরতিহীন আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
নতুন এই ট্রেনটিতে থাকছে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা ১২টি নতুন বগি। এর মধ্যে শোভন চেয়ারের বগি ৭টি, যার আসনসংখ্যা ৬৬৪। দুইটি এসি বগিতে আসন থাকবে ১৬০ টি। সবমিলিয়ে ট্রেনটির মোট আসনসংখ্যা ৯৪৮। এটি চলাচল করবে ২০১৩ সালে ভারত থেকে আমদানি করা দুটি ইঞ্জিন দিয়ে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছে, ট্রেনটি রাজশাহী থেকে সকাল ৭ টায় ছেড়ে ঢাকা পৌঁছবে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে। ঢাকা থেকে ছাড়বে দুপুর সোয়া ১ টায় ও রাজশাহী পৌঁছাবে সন্ধ্যা ৬টায়। এই ট্রেনের এসি চেয়ারের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৭৫ টাকা ও শোভন চেয়ারের ভাড়া ৫২৫ টাকা। এই টাকার মধ্যেই খাবার যাবেন যাত্রীরা।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ট্রেনটির উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধন হলেও বাণিজ্যিকভাবে ট্রেনটি নিয়মিত যাত্রী পরিবহন শুরু করবে শনিবার (২৭ এপ্রিল) থেকে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। উদ্বোধনের পরে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে রেলমন্ত্রী ও যাত্রীদের নিয়ে রওনা হবে। তবে এ যাত্রায় যাত্রীদের কাছ থেকে কোনো টিকিটের মূল্য নেওয়া হচ্ছে না, এমনকি ঢাকা থেকে ফেরার পথেও বিনামূল্যে ট্রেন ভ্রমণের সুযোগ পাবেন যাত্রীরা।
উদ্বোধন উপলক্ষে ট্রেনটি ফুল আর রঙিন কাপড় দিয়ে সাজানো হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের কোচসমূহের অন্যতম নতুন বৈশিষ্ট্য হল-বায়ো-টয়লেট সংযোজন। ট্রেনটিতে প্রতিবন্ধী যাত্রিদের হুইল চেয়ারসহ চলাচলের সুবিধার্থে থাকছে প্রসস্ত দরজা (মেইন ও টয়লেট দরজা) এবং নির্ধারিত আসনের সুবিধা। প্রতিটি কোচ স্টেইনলেস স্টীলের তৈরি অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত। প্রতিটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচে আধুনিক ও উন্নতমানের রুফ মাউন্টেড এয়ার কন্ডিশনার ইউনিট এবং এয়ার কার্টেইন এর ব্যবস্থা রয়েছে।
জার্মানির তৈরি আধুনিক এই ট্রেনে রয়েছে অটোমেটিক এয়ার ব্রেক সিস্টেম, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এলইডি লাইট, অযুখানাসহ নামায ঘর। সুইং ডোর এর পরিবর্তে নিরাপদ স্লাইডিং ডোর ব্যবহার করা হয়েছে এতে। যাত্রীদের জন্য আধুনিক ও মানসম্মত চেয়ার, বার্থ, স্টেয়ার, পার্সেল র্যাক, টিভি মনিটর হ্যাঙ্গার, ওয়াই-ফাই রাউটার হ্যাঙ্গার ও মোবাইল চার্জার এর ব্যবস্থা রয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ট্রেন থামানো রোধে ট্রেনটিতে বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে অ্যালার্ম চেইন পুলিং সিস্টেম। খাবার গাড়িতে রয়েছে অত্যাধুনিক ডাইনিং সুবিধা।
একই রুটে চলমান ট্রেনের ভাড়ার তুলনায় এই ট্রেনে নন-স্টপ সার্ভিস চার্জ ১০ ভাগ বেশী আরোপিত হবে। এছাড়া এই ট্রেনটিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রথম নিজস্ব ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম সার্ভিসেস (বিআরসিটিএস) খাবার সরবরাহ করবে।
সারাবাংলা/এসএ/ইউজে/পিএ/এসএমএন