চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার
২৫ এপ্রিল ২০১৯ ১১:৪৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বাসচালক হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামের বিভিন্ন রুটে ডাকা পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ প্রশাসনের বিভিন্ন আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বেলা ১২টা থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়।
এর আগে বেলা ১১টায় পরিবহন শ্রমিক সংগঠনগুলোর যৌথ বৈঠক করে। সেখান থেকেই ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে সারাবাংলাকে জানান পূর্বাঞ্চলীয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী।
এই শ্রমিক নেতা বলেন, সব শ্রমিক সংগঠনগলো বৈঠকে বসে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা প্রশাসনের আশ্বাসের ওপর আস্থা রেখেছি। তবে রোববার যে ২৪ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল তা পেছানো হবে কি না সে সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেল ৫টায় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন পূর্বাঞ্চলীয় (চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ) এবং জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করার আশ্বাস দেওয়া হয়। একটি সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে জেলা প্রশাসক নিহত বাসচালক জালালের পরিবারের জন্য নিজের তহবিল থেকে এক লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকেও জালালের পরিবারকে সহায়তা নিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এছাড়া মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের গ্রেফতারের বিষয়ে যাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে মনিটরিং করা হয়, সেই আশ্বাসও দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
গত সোমবার (২২ এপ্রিল) রাতে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ব্রিজ এলাকায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্য পরিচয়ে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসের চালক জালাল উদ্দিনকে (৫০) পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
ওই বাসে থাকা শ্যামলী-এন আর পরিবহনের সুপারভাইজার আজিম উদ্দিনের অভিযোগ, রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাদা পোশাকে ৭-৮ জন লোক বাস থেকে ইয়াবা উদ্ধারের নামে তল্লাশির একপর্যায়ে চালককে নামিয়ে রাস্তার পাশে নিয়ে বেধড়ক পেটায়। দুইদফা পিটিয়ে আধমরা করে তাকে আবারও বাসে তুলে দেওয়া হয়। রাত আড়াইটার দিকে জালালকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই বাদি হয়ে কর্ণফুলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলনে নামে পূর্বাঞ্চলীয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন ও জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম থেকে আন্তঃজেলার ৬৪টি রুট এবং আরাকান সড়ক সংশ্লিষ্ট ১৯টি রুটে একযোগে ২৪ ঘণ্টার যাত্রীবাহী পরিবহন ধর্মঘট। দ্বিতীয় দফায় রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত বৃহত্তর চট্টগ্রামের পাঁচ জেলায় ২৪ ঘণ্টার যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দেয় সংগঠনগুলো।
শ্রমিকদের এই কর্মসূচিতে সমর্থন দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ।
সারাবাংলা/আরডি/এসএমএন