Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দুদণ্ড শান্তি দিয়েছিল রাজশাহীর বনলতা ট্রেন


২৫ এপ্রিল ২০১৯ ১৭:০৯

ঢাকা: ‘আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন, আমারে দু-দণ্ড শান্তি দিয়েছিলো নাটোরের বনলতা সেন।’ জীবনানন্দের সেই বনলতা সেন আবার রাজশাহীতে ফিরে এসেছে বনলতা ট্রেন হয়ে। দুরন্ত গতি আর আরামদায়ক চেয়ারে বসে দু-দণ্ডের শান্তিতেই যাত্রীরা পৌঁছেছেন রাজশাহী থেকে ঢাকায়। স্বল্প সময়ে ঢাকা পৌঁছতে পেরে খুশি যাত্রীরা। সময় লাগবে মাত্র সোয়া চার ঘণ্টা।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুর পৌনে ১২টায় রাজশাহী স্টেশন ছেড়ে দুপুর সোয়া দুইটায় যমুনা নদী পাড়ি দেয় বনলতা এক্সপ্রেস। এরপর  ঠিক বিকেল চারটায় এসে পৌঁছে রাজধানীর বিমানবন্দর স্টেশনে। বনলতার প্রথম যাত্রায় সঙ্গী ছিলেন রাজশাহীর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, এমপি ও মন্ত্রীরাও।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রীর হুইসেলে যাত্রা শুরু বনলতা এক্সপ্রেসের

প্রথমবারের মতো রাজশাহী থেকে ঢাকায় মাত্র ৪ ঘণ্টায় একটি ট্রেন এসে পৌঁছায়। প্রথমবারের মতো দ্রুত গতিতে সংযোগ স্থাপন হল ঢাকা ও রাজশাহীর। প্রায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার বেগে টেনে ট্রেনটি ঢাকায় পৌঁছে দিয়েছে যাত্রীদের।

শীতাতপ এবং শোভন এই দুই শ্রেণির আসনে সাজানো বনলতা এক্সপ্রেস রাজশাহীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা মিটিয়েছে এমনটাই জানিয়েছেন যাত্রীরা।

রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানান, এ ধরনের আন্তঃনগর ট্রেন সামনে আরও বেশি চালু করা দরকার। এই বছরের মধ্যে ২০০টি কোচ পাওয়ার পর নতুন করে অন্তত ১৫টি ট্রেন চালু করা যাবে।

আগামী ২৭ এপ্রিল শনিবার থেকে বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি নিয়মিত রাজশাহী থেকে সকাল ৭টায় ছেড়ে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে ঢাকা পৌঁছাবে। এরপর ঢাকা থেকে ছাড়বে বেলা ১টা ১৫ মিনিটে এবং রাজশাহী পৌঁছাবে সন্ধা ৬টায়। ট্রেনে এসি চেয়ারের জন্য ৮৭৫ টাকা, শোভন চেয়ারের জন্য ৫২৫টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এই টাকার মধ্যেই দেওয়া হবে খাবার।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ রেলওয়ে জানাই এই ট্রেনের টিকিট কেনার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র লাগবে। আগামী শনিবার থেকে ট্রেনটি বাণিজ্যিকভাবে পরিচালনা করা হবে।

এই ট্রেনে প্রথমবারের মতো বায়ো টয়লেট সংযুক্ত করা হয়েছে। যেখানেই ট্রেন থেকে পরিবেশ দূষণের আর কোনো আশঙ্কা নেই। প্রতিবন্ধী যাত্রিদের হুইল চেয়ারসহ চলাচলের সুবিধার্থে দেখা গেছে প্রশস্ত দরজা (মেইন ও টয়লেট দরজা) এবং নির্ধারিত আসনের সুবিধা। প্রতিটি কোচ স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি। অত্যাধুনিক যাত্রী সুবিধা রয়েছে ট্রেনটিতে। প্রতিটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচে আধুনিক ও উন্নতমানের রুফ মাউন্টেড এয়ার কন্ডিশনার ইউনিট এবং এয়ার কার্টেইন-এর ব্যবস্থা রয়েছে।

যাত্রী সাধারণের জন্য আধুনিক ও মানসম্মত চেয়ার, বার্থ, স্টেয়ার, পার্সেল রেক, টিভি মনিটর হ্যাঙ্গার, ওয়াই-ফাই রাউটার হ্যাঙ্গার ও মোবাইল চার্জারের ব্যবস্থা রয়েছে।

১২টি কোচ রয়েছে ট্রেনটিতে। এর মোট আসন সংখ্যা ৯২৮। তার মধ্যে এসি চেয়ার ১৬০টি, শোভন চেয়ার ৬৪৪টি, খাবার গাড়িতে আসন ১০৮টি এবং পাওয়ার কারে ১৬টি। তবে ট্রেনটি শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন চলবে। ট্রেনের ভাড়া একই রুটে চলমান ট্রেনের ভাড়ার তুলনায় নন-স্টপ সার্ভিস চার্জ ১০ ভাগ বেশি আরোপিত হবে।

এছাড়া ট্রেনটিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রথম নিজস্ব ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম সার্ভিসেস (বিআরসিটিএস) দ্বারা খাবার সরবরাহ করা হবে। খাবার মুল্য ১৫০ টাকাসহ শোভন চেয়ারের মূল্য ৪২৫ টাকা এবং এসি চেয়ারের মূল্য ৮৭৫ টাকা।

সারাবাংলা/এসএ/এমআই

জীবনানন্দ দাস ঢাকা বনলতা ট্রেন রাজশাহী রেলমন্ত্রী সুজন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর