Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর প্রস্তাব সংসদে প্রত্যাখ্যান


২৫ এপ্রিল ২০১৯ ২১:৪৫

ঢাকা: সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ করার বেসরকারি প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে জাতীয় সংসদ। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সংসদ অধিবেশনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. রেজাউল করিম বাবলু সরকারি চাকরিতে সয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রস্তাব আনলে তা কণ্ঠভোটে প্রত্যাখ্যাত হয়।

রেজাউল করিমের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সংসদে বলেন, ‘দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত ভালো। তাই ২২-২৩ বছরের মধ্যে স্নাতোত্তর ডিগ্রি লাভ করতে পারছে আমাদের তরুণরা। কাজেই সরকারি চাকরিতে প্রবেশে তারা সাতবছর সময় পাচ্ছে। চাকরিতে প্রবেশে এই সাত বছরই যথেষ্ট।’

বিজ্ঞাপন

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমার বিষয়ে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে উল্লেখ করে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘যে নীতিগত সিদ্ধান্তটি এখন চলমান আছে, তা হচ্ছে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে স্বাধীনতা উত্তর চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ছিল মাত্র ২৫ বছর, পরবর্তীতে ২৭ বছর করা হয়। সবশেষ ৩০ বছর করা হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য বিসিএস পরীক্ষায় ৩০ বছর এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩২ বছর করা হয়েছে।’

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা না বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিয়ে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তখন বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে বয়সসীমা বাড়ানো হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রায়শই সেশন জট লেগে থাকতো। সেই বিবেচনায় বয়স বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের আমলে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন সেশন জট নেই।’

অন্য আরেকটি ব্যাখ্যা দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রস্তাব অনুযায়ী যদি ২৩ বছরে একজন শিক্ষার্থী লেখাপড়া শেষ করে চাকরিতে প্রবেশ করেন আর ৩৫ বছরে একজন চাকরিতে প্রবেশ করেন তাহলে দুই জনের মধ্যে বয়সের পার্থক্য দেখা দেবে। তাতে বয়সের অসামঞ্জস্যতা দেখা দেবে। বয়সের অসামঞ্জস্যতার কারণে একই পদে চাকরি করার ক্ষেত্রে মনস্তাকি সমস্যা হতে পারে। তাই প্রস্তাবটা অতটা যৌক্তিক মনে হয় না।’

বিজ্ঞাপন

তাছাড়া আমাদের দেশে সরকারি চাকরিতে অবসরের বয়সসীমা ৫৯ বছর রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে পেনশনের ক্ষেত্রে একটা নীতিমালা রয়েছে। পেনশন পেতে হলে অন্তত ২৫ বছর চাকরি করতে হয়। সেক্ষেত্রে যদি ৩৫ করা হয় তাহলে দেখা যাবে চাকরিতে প্রবেশ করতে ৩৫ বা ৩৭ বছর লেগে যায় তাহলে ৫৯ বছর থেকে ৩৭ বছর বাদ দিলে মাত্র ২২ বছর হয়। সেক্ষেত্রে পেনশন পেতে ঝামেলা হবে। কাজেই সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে প্রবশের বয়সসীমা শৃঙ্খলায় রাখার জন্য বর্তমান নীতিই উপযুক্ত মনে করছে সরকার। তাছাড়া সরকার অনেক চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করছে।’

এরআগে রেজাউল করিম বাবুল সিদ্ধান্ত প্রস্তাব উত্থাপন করেণ। সেই প্রস্তাবকে সমর্থন করে সরকারি বিরোধী দলের মোট ১০ জন সদস্য। প্রস্তাবটি ছিল ‘সরকারি চাকুরিতে নিয়োগে আবেদনের ক্ষেত্রে বয়স সীমা ৩০ বছর থেকে ৩৫ বছরে উন্নীত করা হোক।

বাবুল প্রস্তাব উত্থাপন করে বলেন, ‘বিশ্বের ১৯৯টি দেশের ১৫৫টি দেশে চাকিরতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫-৫৯ পর্যন্ত রয়েছে। আমেরিকা কানাডা, যুক্তরাজ্য, ইরাক, ইরান এরকম ১৫৫টি উন্নয়নশীর দেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়স সীমা ৩৫ থেকে ৫৯ বছর পর্যন্ত করা আছে। আমাদের উন্নয়নশীল দেশে শিক্ষিত বেকার সংখ্যা প্রায় ২৮ লাখের অধিক। লেখাপড়া শিখে যখন একটা সন্তান বেকার থাকে, তখন তারা পরিবারের কাছে যে কত বড় বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। সেটা পিতা-মাতাই জানেন। আমরা এই বোঝা আর বাড়তে দিতে চাই না। তাই চাকরিতে প্রবেশের বয়স সীমা ৩০ বছরের পরিবর্তে ৩৫ বছর করা হোক।’

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এমআই

এমপি বয়সসীমা বৃদ্ধি মুক্তিযোদ্ধা সরকারি চাকরি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর