বাজারে রমজানের প্রভাব
২৬ এপ্রিল ২০১৯ ১৪:১৭
ঢাকা: মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি মসুর ডালের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। চিনিও কিনতে হচ্ছে আগের চেয়ে ২ থেকে ৩ টাকা বেশি দামে। ছোলা কেজিপ্রতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। অন্যদিকে পেঁয়াজের দাম গত এক মাস ধরেই ঊর্ধ্বমুখী। এক মাসের ব্যবধানে তা বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা।
ভো্গ্যপণ্যের এই ঊর্ধ্বগতি বলে দিচ্ছে, রমজান মাস আসছে।
শুধু ভোগ্যপণ্যের বাজারেই নয়, কাঁচাবাজারেও পড়তে শুরু করেছে রোজার প্রভাব। মাত্র এক দিনের ব্যবধানে কেজিতে দেশি মুরগির দাম বেড়েছে ১০০ টাকা।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) কাওরানবাজারসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে, ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
কাওরান বাজারের পাইকারি অংশে দেশি পেঁয়াজ ২৬ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ২০ থেকে ২২ টাকা কেজি। খুচরা বাজারের মধ্যে মহাখালীর বউবাজারে দেশি পেঁয়াজ ৩৫ ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজের পাইকারি বিক্রেতা খালেক সারাবাংলাকে বলেন, মাস খানেক আগে দেশি পেঁয়াজের দাম ২০ থেকে ২২ টাকা ছিল। এখন ২৮ টাকা। দাম আরও বাড়তে পারে।
দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে আরেক বিক্রেতা শহিদুল বলেন, তখন পেঁয়াজ কাঁচা ছিল, ফলে নষ্ট হয়ে যেত। এখন কিছুটা পুরাতন হয়েছে তাই দামও বেড়েছে।
পাইকারি বাজারে রসুন ৯৫ টাকা ও আদা ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রসুনের দাম আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে বলে বিক্রেতারা দাবি করেছেন। তবে সারাবাংলার তথ্য অনুযায়ী এক মাস আগেও রসুন ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
রোজার অন্যতম ভোগ্য পণ্য ছোলা ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য এটা পাইকারি বাজারের দাম। খুচরা বাজারে দাম আরেকটু বেশি। তবে সব মিলিয়ে ছোলার দাম স্থির রয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
এক সপ্তাহের ব্যবধানেই মসুর ডালের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। কাওরান বাজারের কিচেন মার্কেটের মায়ের দোয়া স্টোরের বাবলু সারাবাংলাকে বলেন, গত সপ্তাহে মসুর ডালের দাম ৯০ টাকা থাকলেও আজ তা ১০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। কয়েকদিন আগেই চিনির দাম ৫২ টাকা থেকে বেড়ে ৫৫ টাকা হয়েছে। তবে তেলের বাজার স্থিতিশীল বলে জানালেন তিনি।
বাবলু জানান, খেজুর প্রকারভেদে ২২০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। লবঙ্গ এর দাম স্থির থাকলেও বেড়েছে এলাচের দাম। কিছুদিন আগেও ভালো মানের এলাচ কেজিপ্রতি বিক্রি হতো ২২০০ টাকায়, এখন দাম ২৮০০ টাকা।
সবকিছুর ভিড়ে চালের বাজার স্থির রয়েছে। নতুন চাল উঠতে শুরু করায় উল্টো কোনো কোনো চালের দাম কমতে শুরু করেছে।
কাওরান বাজারের খুচরা বাজারে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, টমেটো ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, ঢেঁড়শ টাকা ৩০, শশা ৪০ টাকা ও পেঁপে ৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বিক্রেতা মফিজুল ইসলাম বলেন, সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। কিছু সবজির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা।
মহাখালীর খুচরা বাজারে সবজির মধ্যে ঢেঁড়শ ৪০ টাকা, পেঁপে ৪৫ টাকা, পটল ৫০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, কড়লা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা ও শশা ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এই বাজারের সবজি বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, কম বেশি সব সবজির দামই পাইকারি বাজারে ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে। ফলে তাদেরও দাম বাড়িয়ে দিতে হয়েছে।
মাংসের মধ্যে কারওয়ান বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকায় ও খাসি ৭৫০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগি ১৪৫ টাকা, পাকিস্তানি ২৬০ ও দেশি মুরগি ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
সততা মুরগির আড়তের বিক্রেতা সুমন বলেন, একদিন আগেও দেশি মুরিগি কেজিপ্রতি ৫০০ টাকায় টাকায় বিক্রি করেছেন তারা। হঠাৎ করেই কেজিতে দাম বেড়ে গেছে ১০০ টাকা।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এসএমএন