Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সংবিধানের ঊর্ধ্বে কেউ না: ড. কামাল হোসেন


২৬ এপ্রিল ২০১৯ ১৪:৪৭

গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিলে বক্তৃতা দিচ্ছেন ড. কামাল হোসেন

ঢাকা: ‘সংবিধানের ঊর্ধ্বে কেউ না। রাষ্ট্রপতি না, প্রধানমন্ত্রীও না। সবাইকে সংবিধান মেনেই কাজ করতে হবে। কেউ সংবিধানের বাইরে কিছু করলে সঙ্গে সঙ্গে তার প্রতিবাদ করতে হবে। জবাব চাইতে হবে। নইলে আমরা আমাদের মালিকানা হারাব। যে মালিকানা সংবিধান আমাদের দিয়েছে।’

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) মহানগর নাট্যমঞ্চে আয়োজিত গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিলে দলটির সভাপতি সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: গণফোরামের জাতীয় কাউন্সিলে মোকাব্বির খান!

তিনি বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। কিন্তু সেই মালিকানা হারানোর জায়গায় চলে যাচ্ছি আমরা। সে জন্যই ঘন ঘন জনসভা, মিছিলের মধ্য দিয়ে জনগণকে স্মরণ করানো হয় যে, আমাদের সক্রিয়ভাবে কাজ করে যেতে হবে, সচেতন হতে হবে। চোখ খুলে দেখতে হবে কীভাবে দেশ পরিচালনা হচ্ছে।’

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘পুলিশ যাতে রাষ্ট্রের দায়িত্ব ঠিক মতো পালন করে, সেদিকেও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। তাদেরকেও সংবিধান মেনে কাজ করতে হবে। কারণ, সংবিধান হলো সকল ক্ষমতার উৎস। এখান থেকে মানুষ ক্ষমতা পায়। প্রধানমন্ত্রী কতটুকু ক্ষমতা পাবেন, সেটাও এই সংবিধানে লেখা আছে। বিচার বিভাগের কতটুকু ক্ষমতা সেটাও এই সংবিধানে লেখা আছে।’

তিনি বলেন, ‘৪৮ বছর হলো স্বাধীনতার। আর দুই বছর পর ৫০ বছর হবে। এই ৪৮ বছর সংবিধানকে বাঁচিয়ে রাখা, গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখা এমনিতে সম্ভব হয়নি। অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। গ্রেফতার হতে হয়েছে, বন্দি হতে হয়েছে। কিছু কিছু লোককে শহিদ হতে হয়েছে এই জিনিস (সংবিধান) রক্ষা করার জন্য।’

বাংলাদেশের জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে মন্তব্য করে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘পঞ্চাশ বছর হতে চলছে। এই যে আমরা টিকে আছি, এটা তো বড় অর্জন। কত রকম অপচেষ্টা আমরা লক্ষ্য করেছি। গণতন্ত্রকে আঘাত করে কেউ কেউ স্বৈরতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে। কিন্তু পারেনি। সাময়িকভাবে হয়তো কিছু একটা করেছে, কিন্তু টিকে থাকতে পারেনি।’

বিজ্ঞাপন

‘এক সময় তো আমাদের বলা হতো, সামরিক বাহিনীর প্রধান প্রেসিডেন্ট হয়ে গেছে। এখন তো আর ক্ষমতার মালিক জনগণ হতে পারবে না। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে প্রমাণ করল ক্ষমতা এবং রাষ্ট্রের মালিক তারা’— বলেন ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, ‘মালিকানার কথা শুনতে ভাল লাগে। কিন্তু মালিকানা টিকিয়ে রাখা অনেক বড় দায়িত্ব। মালিকানা ভোগ করতে হলে কিছু দায়িত্ব পালন করতে হবে। রাষ্ট্রে যদি সুশাসন চান, আইনের শাসন চান, তাহলে সতর্ক থাকতে হবে, সংঘবদ্ধ থাকতে হবে। যদি দেখেন, রাষ্ট্র যারা পরিচালনা করছেন, তারা লাইনের বাইরে চলে গেছে, তাহলে সঙ্গে বলতে হবে, আপনারা একটু লাইনের বাইরে চলে গেছেন। সংবিধান মেনে দায়িত্ব পালন করুন।’

বিচার বিভাগ এখনো শক্ত অবস্থানে আছে উল্লেখ করে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘মাঝে-মধ্যে একটু এদিক-সেদিক হলেও কোর্ট এখনো শক্ত অবস্থানে রয়েছে। আমাদের একটা সংশোধনী হয়েছিল যে, জজদেরকে সংসদ সদস্যরা সরিয়ে দিতে পারবেন। তখন কিন্তু চিফ জাস্টিসসহ পাঁচজন জজ সর্বসম্মতিক্রমে এই আইন বাতিল করে দিলেন। এটা খুব বড় একটা অর্জন।’

জাতীয় কাউন্সিলে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আবু সাঈদ, মোকাব্বির খান, ড. রেজা কিবরিয়াসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/এজেড/এনএইচ

গণফোরাম ড. কামাল হোসেন বাংলাদেশের সংবিধান বিশেষ কাউন্সিল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর