সড়কে ব্র্যাক ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় উবার চালক পুলিশ হেফাজতে
২৬ এপ্রিল ২০১৯ ১৯:১১
ঢাকা: সড়ক দুর্ঘটনায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফাহমিদা হক লাবণ্যের (২১) মৃত্যুর ঘটনায় রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান উবারের মোটরসাইকেল চালক সুমন হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দিনগত রাত দুইটার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর নবীনগর হাউজিংয়ের ২ নম্বর সড়কের ২৫ নম্বর বাসা থেকে সুমনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এর আগে, উবারের মোটরসাইকেলে করে খিলগাঁও যাওয়ার পথে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের সামনের সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় লাবণ্যের। মোটরসাইকেলে থাকা অবস্থায় একটি কাভার্ডভ্যান তাকে চাপা দেয়। গুরুতর অবস্থায় লাবণ্যকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতেই শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করেন লাবণ্যর বাবা ইমদাদুল হক। দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে মৃত্যু ঘটানোর অপরাধে মামলাটি দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন: সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীর
সুমনকে আটক প্রসঙ্গে তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার সারাবাংলাকে বলেন, উবারের চালক সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাহারাতেই চলছে তার চিকিৎসা। দুর্ঘটনায় সে নিজেও আহত হয়েছে। অথচ সে মেয়েটিকে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায়। তার তো পালানোর কথা নয়। এজন্যই তাকে পুলিশ বাসা থেকে নিয়ে এসেছে। কোনো গাফিলতি থাকলে নিশ্চয়ই তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান বিপ্লব সরকার।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ধাক্কা দেওয়া কাভার্ডভ্যানের চালককে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে কাভার্ডভ্যান ও তার চালককে ধরতে সম্ভাব্য সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সিসিটিভি দেখে এরই মধ্যে শনাক্ত করা গেছে। তাকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হন উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল ইসলাম ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘ওইদিন সকালে রাজধানীর কলেজ গেটে অবস্থান করছিলেন সুমন। লাবণ্যের কল পেয়ে সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে উবার চালক সুমন তাকে ফোন করে। খিলগাঁও ছায়াবীথি মসজিদের সামনে যেতে চান জানিয়ে সুমনকে শ্যামলী ৩ নং রোডের ৩১ নং বাসার সামনে আসতে বলেন লাবণ্য।’
‘তাকে তুলে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কাছাকাছি পৌঁছামাত্র একজন লোককে বাইকের সামনে দৌড়ে রাস্তা পার হতে দেখে সুমন মোটরসাইকেলের ব্রেক ধরেন। এ সময় পেছন থেকে এসে একটি কাভার্ডভ্যান ধাক্কা দিলে দুজনেই আহত হন। পরে হাসপাতালে লাবণ্যর মৃত্যু হয়।’ বলেন নুরুল ইসলাম।
এক প্রশ্নের জবাবে এই তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, মামলার তদন্ত সাপেক্ষে চার্জশিট প্রদান করা হবে।
নিহত ফাহমিদা হক লাবণ্য ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই)-এর তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। লাবণ্যের বাবার ইমদাদুল হক পেশায় ব্যবসায়ী। শ্যামলীতে পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন লাবণ্য। তাদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায়। দুই ভাইবোনের মধ্যে লাবণ্য বড়।
সারাবাংলা/ইউজে/এনএইচ