Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মামলা জট কমাতে ২ পদ্ধতি অনুসরণের আহ্বান প্রধান বিচারপতির


২৭ এপ্রিল ২০১৯ ২০:৪৮

ঢাকা: বিচার বিভাগে জমে থাকা বিশাল মামলা জট কমাতে বিচারকদের সংখ্যা বৃদ্ধি বা অবকাঠামোগত উন্নয়নই যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এর পাশাপাশি মামলা জট কমাতে সঠিক মামলা ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। এর জন্য দুইটি পদ্ধতি অনুসরণের জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে ‘ন্যাশনাল জাস্টিস অডিটের ফলাফল উপস্থাপন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্ট, জুডিশিয়াল রিফর্ম কমিটি ও জার্মান ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন বাংলাদেশ যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারক সংকট ও অবকাঠামোর অপ্রতুলতাকে মামলা জটের অন্যতম কারণ মনে করা হলেও কেবল বিচারক বা অবকাঠামো বাড়ানোর মাধ্যমে এ অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ জন্য প্রয়োজন সঠিক মামলা ব্যবস্থাপনা, যা নিশ্চিত করতে আমাদের দু’টি ধাপে কাজ করতে হবে।

পদ্ধতি দুইটির উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, প্রথমত, মামলা দায়েরের আগে প্রাতিষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় মামলা দায়েরের হার যেন কম হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত, মামলা দায়েরের পর প্রতিটি পর্যায়ে সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে স্বল্প ব্যয়ে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে।

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি ব্যবহার করে বিরোধ মীমাংসার দিকে জোর দিতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় নতুন মামলার অন্তর্ভুক্তি রোধে বিকল্পভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির প্রচলিত আইনি বিধান আরও সূক্ষ্ণভাবে প্রয়োগ করা প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

প্রধান বিচারপতি বলেন, এর পাশাপাশি জটবদ্ধ পুরনো মামলাগুলো যেন দ্রুততর সময়ে নিষ্পত্তি হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নিতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে, বিচারপ্রার্থীরা যেন স্বল্প ব্যয়ে ও দ্রুততর সময়ে ন্যায়বিচার লাভ করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পাদিত ন্যাশনাল জাস্টিস অডিটের তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়। জাস্টিস অডিটের ফলাফল উপস্থাপনা করেন আন্তর্জাতিক পরামর্শক এরিক ক্যাডোরা।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, জাস্টিস অডিটের তথ্যমতে ৬৮ শতাংশ মানুষ আনুষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় ন্যায়বিচার পাবেন বলে বিশ্বাস করেন। তবে বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল হওয়া সত্ত্বেও তাদের মধ্যে ৮৭ শতাংশ স্থানীয় পর্যায়ে বিরোধ নিষ্পত্তিতে আগ্রহী। অর্থাৎ মাত্র ১৩ শতাংশ বিচারপ্রার্থী প্রাতিষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থার দ্বারস্থ হন। আর তাতেই আদালতে ৩৪ লাখ মামলার জট তৈরি হয়েছে।

জাস্টিস অডিটের ফলাফলে দেখা যায়, ২০১৬ থেকে ২০১৭ সালে মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে বিচারাধীন মামলার প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১৪ শতাংশ, দায়রা আদালতে এই হার ১৬ শতাংশ এবং সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে এই প্রবৃদ্ধির হার ৯ শতাংশ। এভাবে চলতে থাকলে ২০২২ সালে মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালত, দায়রা আদালত ও হাইকোর্ট বিভাগে আগের বছরগুলো থেকে চলে আসা মামলার পরিমাণ হবে যথাক্রমে ৭২ শতাংশ, ৮০ শতাংশ ও ৯০ শতাংশ। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে মামলা ব্যবস্থাপনায় বিশেষ পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে বিচার ব্যবস্থাকে আরও গতিশীল ও জনমুখী করতে আন্তঃপ্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ করা বাজেট, মানবসম্পদসহ অন্যান্য সম্পদ বণ্টন নিয়েও আলোচনা করা হয়।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা খাতে সরকারের বরাদ্দ করা ১০ হাজার কোটি টাকার ৭ শতাংশ আদালতগুলোর জন্য বরাদ্দ করা হয়ছে উল্লেখ করে এক্ষেত্রে যথাযথ বাজেট বরাদ্দের সুপারিশ করা হয়।

আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন হেড রুল অব ল’র প্রোগ্রামার প্রমিতা সেনগুপ্ত, জিআইজেড বাংলাদেশের মিস জুডিথ হারবার্টসন, অ্যাম্বাসি অব দ্য ফেডারেল রিপাবলিক অব জার্মানির চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মাইকেল শুলথহাইস। এ সময় আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এজেডকে/টিআর

প্রধান বিচারপতি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন মামলা জট

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

গুলশানে দুইজনের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:৫৫

ঢাকার পথে প্রধান উপদেষ্টা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩৩

সম্পর্কিত খবর