Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা-মস্কো বৈঠকে প্রাধান্য পাচ্ছে রোহিঙ্গা সংকট-জ্বালানি-বাণিজ্য


২৭ এপ্রিল ২০১৯ ২৩:০৬

ঢাকা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই লাভরভ আগামী ৩০ এপ্রিল মস্কোতে বৈঠক করতে যাচ্ছেন।  এই বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট, জ্বালানি ও বাণিজ্য—এই তিনটি বিষয় অগ্রাধিকার পাবে।  প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও ঢাকা-মস্কো কূটনৈতিক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সূত্রমতে, গত ২০১৭ সালের ১২ অক্টোবর তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিফ অব প্রটোকল শহিদুল করিমকে ডেকে পাঠান গণভবনে।  এ সময় রোহিঙ্গা সংকট সামলাতে মস্কো ও বেইজিংকে ঢাকার পক্ষে আনতে  করণীয় বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশেষ দূত নির্বাচিত করে রাশিয়া ও চীন সফরের নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর দুই দেশ সফরের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হয়। ঢাকার তৎপরতার বেইজিং কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যায়।  যদিও পরবর্তী সময়ে ওই সময়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বেইজিংয়ে বৈঠক করলেও ঢাকার পক্ষে সুফল আসেনি।

অন্যদিকে, ওই সময়ে (২০১৭ সালের মধ্য অক্টোবরের পর) রোহিঙ্গা ইস্যুতে রাশিয়া সফরের জন্য ঢাকা থেকে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হলে মস্কো বিষয়টির কালক্ষেপণ করেন। প্রায় ৬ মাস তৎপরতার পর রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই লাভরভের সঙ্গে গত ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল দুই দেশের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের জন্য মস্কোর পক্ষ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা-মস্কো কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, গত ২০১৮ সালের ২ এপ্রিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক বিষয়ে মস্কো থেকে সুবজ সংকেত পাওয়ার পেছনে রাশিয়ার স্বার্থ ছিল।  কারণ ওই সময়ে রাশিয়ার পক্ষত্যাগী এক গুপ্তচরকে (গত ২০১৮ সালের ৪ মার্চ) হত্যার পর মস্কোর সঙ্গে লন্ডনের দ্বন্দ্ব শুরু হয়।  এরপর যুক্তরাজ্যের পক্ষ নিয়ে কূটনৈতিক যুদ্ধে নামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। ওই সময়ে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করেছে ওপিসিডব্লিউ (আন্তর্জাতিক সংস্থা অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রহিবিশন অব কেমিকেল উইপনস)।

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক সংস্থা ওপিসিডব্লিউ’র নির্বাহী কাউন্সিলের সভাপতি হচ্ছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মোহাম্মদ বেলাল।  রাশিয়া ও যুক্তরাজ্য উভয় দেশ থেকেই এই হত্যার বিষয়ে কূটনৈতিক চিঠিতে বাংলাদেশকে জানানো হয়েছে।  যে কারণে গত বছরের এপ্রিলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক বিষয়ে মস্কো থেকে সুবজ সংকেত পাওয়া যায়।

ঢাকার কূটনীতিকরা বলছেন, এবারের বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মস্কোকে ঢাকার পক্ষে আনার চেষ্টার কোনো ত্রুটি থাকবে না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট শুধু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়িই নয়, গোটা পৃথিবীর নিরাপত্তার জন্য হুমকি।  এই বিষয়টি আমরা বৈশ্বিক নেতাদের কাছে তথ্যভিত্তিক চিত্র তুলে ধরার পরিকল্পনা করেছি।  যেন সহজেই সমস্যার সমাধান করা যায়।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, আসন্ন ঢাকা-মস্কো পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুর বাইরে জ্বালানি ও বাণিজ্য ইস্যু গুরুত্ব পাবে। ইউরেশীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলে যুক্ত হতে চায় বাংলাদেশ।  এই বিষয়ে ঢাকা-মস্কো অনেক দূর এগিয়েছে, সামনের বৈঠকেও বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।  এ ছাড়া বঙ্গোপসাগরের একটি বিশাল অংশ এখনো অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে। যেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। সামনের বৈঠকে এই বিষয়ে আলাপ হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন শনিবার (২৭ এপ্রিল) গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘আমাদের সমুদ্র সম্পদের এক্সপ্লোরেশন বিষয়ে রাশিয়া আগ্রহ দেখিয়েছে। আরো কয়েকটি রাষ্ট্রও এই বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে। বিষয়গুলো খুব সহজ নয়, সময়ের ব্যাপার কিন্তু আমি আশাবাদী।’ এই সম্পদগুলো আবিষ্কার হলে বাংলাদেশে ধনী হয়ে যাবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সারাবাংলা/জেআইএল/এমএনএইচ

ঢাকা-মস্কো

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ইনজুরিতে মৌসুম শেষ রদ্রির
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:২৮

সম্পর্কিত খবর