সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ’র মরদেহ দেশে আনা হয়েছে
২৮ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:২৫
ঢাকা : বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক মাহফুজউল্লাহ মরদেহ ব্যাংকক থেকে দেশে আনা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌছায়। মাহফুজ উল্লাহ‘র বড় বোনের ছেলে শাহদাত রায়হান কবির সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, রাতে মাহফুজউল্লাহর মরদেহ তার মোহাম্মদপুর বাসায় রাখা হবে। রোববার জোহর নামাজের পর গ্রিনরোড ডরমিটরি মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে বাদ আসর জাতীয় প্রেসক্লাবে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তার ইচ্ছানুযায়ী তাকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে।
এর আগে বর্ষীয়ান সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ শনিবার সকালে ব্যাংককে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার মেয়ে ডা. নুসরাত জাহান মেঘলা শনিবার তার বাবার ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে মাহফুজউল্লাহর মূর্ত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গত তিন সপ্তাহ ধরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ব্যাংককে চিকিৎসাধীন ছিলেন মাহফুজউল্লাহ। সেখানে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। এর আগে, গত ২১ এপ্রিলও তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়েছিল। কিন্তু পরে জানা যায় লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলা হলেও তার শ্বাস-প্রশ্বাস চলছিল।
মাহফুজউল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ২ এপ্রিল অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১০ এপ্রিল তাকে ব্যাংকক নিয়ে যাওয়া হয়।
১৯৫০ সালের ১০ মার্চ নোয়াখালীতে জন্মগ্রহণ করেন সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ। ছাত্রজীবনে বাম রাজনীতি করেছেন, ষাটের দশকে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতিও ছিলেন। অংশ নিয়েছেন ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে। চীনে বিশেষজ্ঞ হিসেবে এবং কলকাতায় বাংলাদেশ উপদূতাবাসেও কাজ করেছেন তিনি। খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। পরে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগে শিক্ষকতায় নিয়োজিত ছিলেন।
ছাত্রজীবন থেকেই সাংবাদিকতায় যুক্ত হন মাহফুজউল্লাহ। সাপ্তাহিক বিচিত্রার জন্মলগ্ন থেকেই যুক্ত ছিলেন তিনি। পরে বিভিন্ন সময়ে দেশের নেতৃত্বস্থানীয় বাংলা ও ইংরেজি দৈনিকে কাজ করেছেন তিনি। দেশে পরিবেশ বিষয়ক সাংবাদিকতার পথিকৃৎ তিনি।
সাংবাদিকতার বাইরে লেখক হিসেবেও সুপরিচিত মাহফুজউল্লাহ। তার রচিত গ্রন্থের সংখ্যা পঞ্চাশের বেশি। ইতিহাস নিয়ে তার লেখা বইগুলোর অন্যতম ‘অভ্যুত্থানের ঊনসত্তর’ ও ‘পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন: গৌরবের দিনলিপি (১৯৫২-৭১)’। সর্বশেষ লিখেছেন ‘Begum Khaleda Zia: Her Life, Her Story’। এর আগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জীবনীগ্রন্থও লিখেছেন তিনি, বইটির নাম ‘President Zia of Bangladesh: A political Biography’।
ছাত্র জীবনে বাম রাজনীতি করলেও সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের থিংকট্যাংকের অন্যতম হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
সারাবাংলা/জিএস/আইই