ভাবছেন উকিল, অপেক্ষায় হারুন, নীরব আমিনুল
২৮ এপ্রিল ২০১৯ ১৩:১৭
ঢাকা: শপথ নেওয়ার ব্যাপারে দোটানায় থাকা উকিল আব্দুস সাত্তার এখনো চিন্তা-ভাবনা করছেন। হারুনুর রশীদ রয়েছেন অপেক্ষায়। মো. আমিনুল ইসলাম শপথের ব্যাপারে কোনো কথা-ই বলছেন না।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে বিএনপির এই তিন বিজয়ী প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে এমন আভাস পাওয়া গেছে। সংসদে যেতে হলে আগামী মঙ্গলবারের (৩০ এপ্রিল) মধ্যে তাদের শপথ নিতে হবে।
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) মো. জাহিদুর রহমান শপথ গ্রহণের পর গুঞ্জন ওঠে বিএনপির আরও তিন বিজয়ী প্রার্থী রোববার (২৮ এপ্রিল) শপথ নিচ্ছেন।
তবে রোববার (২৮ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২ টা নাগাদ এই তিন প্রার্থী শপথ নিতে যাননি। যদিও সংসদ সচিবালয় সূত্রমতে, বিজয়ী প্রার্থীদের শপথ পড়ানোর জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এদিকে রোববার সকাল ১১ টায় উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘শপথ গ্রহণের ব্যাপারে এখনো চিন্তা-ভাবনা করছি। দেখা যাক কী হয়।’
সকাল সোয়া ১১ টায় হারুনুর রশীদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘শপথ গ্রহণের ব্যাপারে সবাইকে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। আমরা অপেক্ষা করছি। আপনারাও অপেক্ষা করুন।’
তবে শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাত থেকে রোববার (২৮ এপ্রিল) দুপুর সোয়া ১২ টা পর্যন্ত একাধিকবার চেষ্টা করেও মো. আমিনুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। শনিবার রাতে তার ফোন ছিল বন্ধ। রোববার ফোন খোলা থাকলেও তা রিসিভ করেননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচিত মো. আমিনুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হারুনুর রশীদ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে নির্বাচিত উকিল আব্দুস সাত্তার শপথ গ্রহণের ব্যাপারে এখনো দোটানায় রয়েছেন।
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ নেওয়ায় ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. জাহিদুর রহমানকে শনিবার রাতে বহিষ্কার করায় অন্যরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। অবশ্য বগুড়া-৪ আসন থেকে নির্বাচিত মো. মোশারফ হোসেন এবং বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচিত বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, তারা শপথ নেবেন না।
উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিন শ’ আসনের মধ্যে মাত্র আটটি আসনে জয় পায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তাদের মধ্যে বিএনপি থেকে ছয় জন এবং গণফোরাম থেকে নির্বাচিত হন দুই জন।
তবে নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে ভোটের দিন রাতেই ফলাফল বর্জনের ঘোষণা দেয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। পরে সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত হয়, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে বিজয়ী আট প্রার্থীর কেউ শপথ নেবেন না।
কিন্তু এই সিদ্ধান্ত অমান্য গত ৭ মার্চ শপথ নেন মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে নির্বাচিত গণফোরাম প্রার্থী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, ২ এপ্রিল শপথ নেন সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত গণফোরামের আরেক প্রার্থী মোকাব্বির খান এবং ২৫ এপ্রিল শপথ নেন ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে নির্বাচিত বিএনপির প্রার্থী মো. জাহিদুর রহমান।
শপথ নেওয়া এই তিন জনের মধ্যে দুই জন ধানের শীষ প্রতীক এবং এক জন নির্বাচিত হন উদীয়মান সূর্য প্রতীক নিয়ে। এরই মধ্যে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও মো. জাহিদুর রহমানকে নিজ নিজ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর মোকাব্বির খানকে দেওয়া হয়েছে কারণ দর্শানো নোটিশ। যদিও শপথ গ্রহণের ২৫ দিন পর অনুষ্ঠিত গণফোরামের জাতীয় কাউন্সিলে ড. কামাল হোসেনের হাত ধরেই অনুষ্ঠান স্থলে প্রবেশ করেন মোকাব্বির খান। মূল মঞ্চে কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশে বসার সুযোগ পান তিনি।
সারাবাংলা/এজেড/জেডএফ