Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাব-কন্ট্রাক্ট কারখানার ২২ শতাংশ নারী নির্যাতনের শিকার: বিলস


২৮ এপ্রিল ২০১৯ ২০:১৬

ঢাকা: তৈরি পোশাক খাতের সাব-কন্ট্রাক্ট কারখানায় এখনও ২২ শতাংশ নারী শ্রমিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এছাড়া বিশুদ্ধ পানির অভাব, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের অভাবে এসব কারখানা কর্মক্ষেত্র হিসেবে অত্যন্ত  ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।

রোববার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ২০১৮ সালে প্রকাশিত সংবাদ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে বিলস প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে বলে জানায়।

বিজ্ঞাপন

বিলস-এর ভাইস চেয়ারম্যান শুক্কুর মাহমুদের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংস্থাটির যুগ্ম মহাসচিব ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রফতানি আয়ের অন্যতম উৎস তৈরি পোশাক খাত দেশের জিডিপিতে শতকরা ১৮ ভাগ অবদান রাখছে। গত বছর রফতানি আয়ের মধ্যে ৮৩ দশমিক ৪৯ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক শিল্প থেকে। এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে এবং টেকসই উন্নয়ন ধরে রাখতে হলে শ্রমিকদের বাঁচার মতো মজুরি, জীবনধারণের পরিবেশ, নিরাপদ কর্মক্ষেত্র ও পরিবেশ, শ্রমিকের মর্যাদা ও শোভন কাজ নিশ্চিত করতে হবে।

বিলসের এই প্রতিবেদনে বলা হয়, পোশাক খাতের সাব-কন্ট্রাক্ট কারখানার শ্রমিকরা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করছেন। অনেক কারখানার অবকাঠামোগত পরিবর্তন হলেও ভেতরের কাজের পরিবেশের পরিবর্তন অনেকাংশে অপরিবর্তনীয়। এই খাতের ২২ শতাংশ নারী শ্রমিককে এখনও শারীরিক, মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। এই নির্যাতনের পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যা, যেমন— বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, পর্যাপ্ত আলো বাতাসের অভাব, প্রতিকূল পরিবেশে ইত্যাদি শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে আরও উঠে আসে, রানা প্লাজা দুর্ঘটনা পরবর্তী অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল শ্রম আইন সংশোধন। কিন্তু বর্তমান সংশোধনীতে শ্রমিক স্বার্থের যথাযথ প্রতিফলন ঘটেনি। ইপিজেড আইনের কথা উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, একই দেশে দু’টি শ্রম আইন থাকা ঠিক নয়।

বিলস তৈরি পোশাক শিল্পের ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। এছাড়া পোশাক শ্রমিকদের যে ডাটাবেজ করা হয়েছে, তা বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’র আওতায় না রেখে সরকারের অধীনে রাখার দাবি জানানো হয়।

বিলস-এর সংবাদপত্র জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে তৈরি পোশাক শিল্পে দুর্ঘটনায় তিন জন শ্রমিক নিহত ও ১৮ জন শ্রমিক আহত হন। দুর্ঘটনার পরিমাণ কমলেও ২০১৮ সালে এ খাতের শ্রমিকদের ওপর সহিংসতার পরিমাণ বেড়েছে, যা সংখ্যায় মোট ১১০টি।  এর মধ্যে ২৬টি নির্যাতন, ২১টি হত্যা, ১১টি ধর্ষণ ও ৯টি গণধর্ষণের ঘটনা রয়েছে।

এছাড়া ২০১৮ সালে শুধু পোশাক শিল্প খাতে ১২৩টি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটেছে এবং এতে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ২৯৮ জন শ্রমিক। কেবল বকেয়া বেতন আদায়ের দাবিতেই ৫৪টি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে। এছাড়াও শ্রমিক মৃত্যু, বিনা নোটিশে কারখানা বন্ধ, কারখানা পুনরায় চালু, ন্যায্য মজুরি ও শ্রম অধিকার আদায় করার দাবিতেও শ্রম অসন্তোষ দেখা দেয়।

অনুষ্ঠানে ট্রেড ইউনিয়নের নেতাদের মধ্যে আমিরুল হক আমিন, নইমুল আহসান জুয়েল, মো. কবির হোসেন, তৌহিদুর রহমান, আব্দুল ওয়াহেদসহ অনান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/ইএইচটি/জেডএফ 

নারী শ্রমিক নির্যাতন শ্রমিক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর