Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাজশাহীতে জোড়া খুন মামলায় ৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট


২৯ এপ্রিল ২০১৯ ০৭:৫৩

রাজশাহী: রাজশাহীর নাইস হোটেলে জোড়া খুনের মামলায় ছয় জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এর মধ্যে চার জন শিক্ষার্থী, দু’জন হোটেল বয়। অভিযুক্ত ছয় জনের মধ্যে তিন জন এরই মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ঘটনার প্রায় দেড় বছর পর এই হত্যাকাণ্ডের চার্জশিট দিলো সংস্থাটি।

রোববার (২৮ এপ্রিল) আদালতে মামলাটির চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজশাহী পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মহিদুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেন, চাঞ্চল্যকর এই মামলার তদন্ত শেষ। গত ১৫ এপ্রিল রাজশাহীর মুখ্য মহানগর আদালতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। আজ চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এসআই মহিদুল ইসলাম সুজন বলেন, দীর্ঘ তদন্ত শেষে জোড়া খুনের ওই ঘটনায় মোট ছয় জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন— রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাহাত মাহমুদ (২১), রাজশাহী কলেজের প্রাণীবিদ্যার চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী বোরহান কবীর ওরফে উৎস (২২), একই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আল-আমিন (২০) ও বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে ভর্তি প্রার্থী আহসান হাবিব ওরফে রনি (২০) এবং নাইস হোটেলের বয় নয়ন (৩২) ও বখতিয়ার (৩২)। এদের মধ্যে আহসান হাবিব, বোরহান ও নয়ন এরই মধ্যে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, চাঞ্চল্যকর এই মামলায় আদালতে আলাদাভাবে দু’টি চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি সুমাইয়া নাসরিনকে ধর্ষণের পর বালিশচাপা দিয়ে হত্যা এবং দ্বিতীয়টি মিজানুরকে হত্যা। দুই মামলাতেই ছয় জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। প্রথমে এ ঘটনায় জড়িত চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই দুই হোটেল বয়কে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে দু’জন আগে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আদালতে জবানবন্দি দেন নয়নও।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, ২০১৬ সালের ২২ এপ্রিল রাজশাহীর হোটেল নাইস ইন্টারন্যাশনালের ৩০৩ নম্বর রুম থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান ও পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া নাসরিনের লাশ উদ্ধার করা হয়। মিজানুরের লাশ ওড়না দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝোলানো ছিল। আর সুমাইয়ার লাশ ছিল বিছানায়।

শুরুতে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করে বোয়ালিয়া থানা। আদালতে দেওয়া তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, সুমাইয়াকে খুন করে মিজানুর আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু মরদেহ উদ্ধারের সময় মিজানুরের দুই হাত পেছন দিকে বাঁধা ছিল। হাত বাঁধা অবস্থায় কোনো লোক ফ্যানের সঙ্গে অন্যকে ঝুলাতে পারবে না। তদন্তে এই ত্রুটির কথা উল্লেখ করে আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে পিবিআই তদন্ত শুরু করলে বেরিয়ে আসে মূল রহস্য।

জানা যায়, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে প্রতিশোধ নিতে চার বন্ধু মিলে সুমাইয়াকে ধর্ষণের পর হত্যা করে এবং এসময় তার প্রেমিক মিজানুরকেও হত্যা করা হয়।

আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামিরা বলেছেন, নাইস হোটেলের ওই কক্ষে প্রথমে মিজানুরকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর সুমাইয়াকে ধর্ষণ করেন এবং ঘটনা ধামাচাপা দিতে তাকেও মুখে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করেন। পরে কৌশলে কক্ষে তালা দিয়ে ভেতরের একটি ফাঁক দিয়ে পালিয়ে যান তারা।

সারাবাংলা/টিআর

খুন রাজশাহী হত্যা মামলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর