চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেন জব্দের মামলার বিচার শুরু
২৯ এপ্রিল ২০১৯ ১৫:৪৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেনের চালান জব্দের ঘটনায় মাদক আইনে দায়ের হওয়া মামলার বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দিয়ে আগামী ১৯ মে থেকে ২৩ মে পর্যন্ত প্রথম দফায় সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করা হয়েছে।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) চট্টগ্রামের সিনিয়র স্পেশাল জজ-১ মো.আকবর হোসেন মৃধা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মো.ফখরুদ্দিন চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোকেন জব্দের ঘটনায় দুটি মামলা আছে। একটি মাদক আইনের মামলা। আরেকটি চোরাচালান আইনের। মাদক আইনের মামলার বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। চোরাচালান আইনের মামলা এখনও র্যাব তদন্ত করছে।’
২০১৫ সালের ৬ জুন চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার এস এম তানভির আরাফাতের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কোকেন সন্দেহে চট্টগ্রাম বন্দরে সূর্যমুখী তেলের চালান জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এরপর ২৭ জুন তেলের চালানের ১০৭টি ড্রামের মধ্যে একটি ড্রামের নমুনায় কোকেন শনাক্ত হয়।
বলিভিয়া থেকে আসা চালানটির প্রতিটি ড্রামে ১৮৫ কেজি করে সূর্যমুখী তেল ছিল। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাসায়নিক পরীক্ষাগারসহ চারটি পরীক্ষাগারে তেলের চালানের দুটি ড্রামের নমুনায় কোকেন শনাক্ত হয়। চালানটি উরুগুয়ের মন্টিভিডিও থেকে জাহাজীকরণ করা হয়। পরে তা সিঙ্গাপুর হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে।
এ ঘটনায় চট্টগ্রামের বন্দর থানায় ২০১৫ সালের ২৭ জুন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। আসামি করা হয় চালানটির আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খানজাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদকে।
ঘটনার পাঁচ মাস পর চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশ নূর মোহাম্মদকে অব্যাহতির সুপারিশ করে আটজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। চালানের গন্তব্য অজানা থাকায় এবং আন্তর্জাতিক চক্র শনাক্ত না হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষ নারাজি আবেদন করলে আদালত র্যাবকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। র্যাব নুর মোহাম্মদসহ ১০ জনকে আসামি করে ২০১৭ সালের ৩ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
মামলায় অভিযুক্ত ১০ জন হলেন- আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের খানজাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ ও তার ভাই মোস্তাক আহম্মদ, কসকো-বাংলাদেশ শিপিং লাইনসের ব্যবস্থাপক এ কে এম আজাদ, সিকিউরিটিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মেহেদী আলম, সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, আবাসন ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল, প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা সোহেল, পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান, লন্ডনপ্রবাসী চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ফজলুর রহমান ও মৌলভীবাজারের বকুল মিয়া।
এদের মধ্যে গোলাম মোস্তফা সোহেল ও আতিকুর রহমান হাজতে আছেন। জামিনে থাকা আসামি মেহেদী আলম, একেএম আজাদ, সাইফুল ইসলাম ও মোস্তফা কামাল অভিযোগ গঠনের শুনানির সময় আদালতে হাজির ছিলেন। পরে জামিনে গিয়ে পালিয়ে গেছেন নুর মোহাম্মদ। এছাড়া মোস্তাক আহম্মদ, ফজলুর রহমান ও বকুল মিয়া শুরু থেকেই পলাতক আছেন।
সারাবাংলা/আরডি/জেডএফ