Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এবার সাময়িক বরখাস্ত নড়াইলের সেই ৪ চিকিৎসক


২৯ এপ্রিল ২০১৯ ১৮:০৪

ঢাকা: ৪৮ ঘণ্টা না পেরোতেই নড়াইল সদর হাসপাতালের সেই চার চিকিৎসককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। সোমবার (২৯ এপ্রিল) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের (শৃঙ্খলা অধিশাখা) সচিব মো. আসাদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেওয়া হয়।

বরখাস্ত হওয়া চার চিকিৎসক হলেন- কার্ডিওলজি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. শওকত আলী, কার্ডিওলজি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. রবিউল আলম, সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. আখতার হোসেন ও মেডিকেল অফিসার ডা. এ এস এম সায়েম।

বিজ্ঞাপন

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যেহেতু আপনি প্রায়শই কর্মস্থলে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকেন মর্মে অভিযোগ উপস্থাপিত হয়েছে; যা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর বিধি-২(খ) মোতাবেক অসাদাচরণের সামিল এবং যেহেতু আপনাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে রাখা হলে অফিস শৃঙ্খলা ভঙ্গ হতে পারে ও অফিসের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হচ্ছে; সেহেতু আপনাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ এর বিধি-১২(১) মোতাবেক সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ও প্রচলিত নিয়ম মোতাবেক আপনি সাময়িক বরখাস্ত হলেও বরখাস্তকালীন খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন।

এর ঠিক একদিন আগেই গতকাল রোববার (২৮ এপ্রিল) স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে ওই চার চিকিৎসককে ওএসডি করার কথা জানানো হয়। একই দিনেই তাদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশও জারি করা হয়।

বিজ্ঞাপন

তবে ঠিক পরের দিনই কেনো তাদের বরখাস্ত করা হলো, জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি তারা প্রায়ই হাসপাতালে উপস্থিত থাকতেন না। তাই আমরা এই ব্যবস্থা ‍নিয়েছি।’

তাদের ওএসডি করার প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের স্বাস্থ্য অধিদফতর, মহাখালীতে ওএসডি করা হয়েছে। আদেশ জারির সাত কর্মদিবসের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে। তা না হলে এই কর্মস্থল থেকে তারা তাৎক্ষণিক অবমুক্ত হবেন।

এছাড়া, চার চিকিৎসককে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছিল, তারা গত ২৪ এপ্রিল কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে কর্মস্থল নড়াইল সদর হাসপাতালে অনুপস্থিত ছিলেন। বিষয়টিকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ অনুযায়ী ‘অসদাচরণের সামিল’ উল্লেখ করে তাদের এমন আচরণের বিরুদ্ধে কেনো বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানাতে বলা হয়েছে। কারণ দর্শাতে তিন কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়েছে চার চিকিৎসককে।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে আকস্মিক নড়াইল সদর হাসপাতাল পরিদর্শনে যান নড়াইল-২ আসনের সংদস সদস্য ও ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা। তবে সেদিন সেখানে গিয়ে কোনো চিকিৎসককে পাননি তিনি। এমনকি নার্সও ছিলেন মাত্র দুজন। তিনি হাজিরা খাতায় বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের হাজিরাও দেখতে পাননি। অনুপস্থিত কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে তিনি তাৎক্ষণিক মোবাইল ফোনে কথা বলেন। কিন্তু তারা কেউ সদুত্তর দিতে পারেননি।

এসময় মাশরাফি হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন এবং রোগীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অনিয়ম-অভিযোগের কথা শোনেন। পরে রাতে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, সিভিল সার্জন, ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা নির্বিঘ্ন রাখতে ওই বৈঠকে বেশকিছু নির্দেশনাও দেন মাশরাফি।

সারাবাংলা/জেএ/এমআই

চার চিকিৎসক নড়াইল মাশরাফি সদর হাসপাতাল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর