ঈদের পর বিএসএমএমইউ’তে জরুরি বিভাগ চালু
৩০ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:৩৯
ঢাকা: ঈদের আগেই রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) জরুরি বিভাগ চালু হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। এ জন্য প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রপাতিও কেনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিএসএমএমইউর ডা. মিল্টন হলে ২২তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন উপাচার্য এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার ( ৩০ এপ্রিল) এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং ২২তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হবে।
ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ‘এই হাসপাতালে জরুরি বিভাগের দাবি অনেকদিনের, আর এ সংক্রান্ত সব কাজে সব ধরণের প্রস্তুতিও আমাদের সম্পন্ন হয়েছে, সকল মেশিন কেনা হয়ে গেছে। কেবল দুটো কারণে আটকে আছি। প্রথমত, আমাদের নার্স সংকট রয়েছে। দ্বিতীয়ত, হাসপাতালের মূল গেট মেট্রোরেলের কার্যক্রমের জন্য আটকে আছে। এটাও ঈদের আগেই শেষ হবে বলে আমাদেরকে জানানো হয়েছে, আর এ সমস্যার সমাধান হলেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে জরুরি বিভাগ চালু হবে।’
আগামি দুই সপ্তাহের মধ্যেই হাসপাতালে ৩৪৭ জন নার্স নিয়োগ দেওয়ার আশাও প্রকাশ করেন উপাচার্য।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে গঠিত প্রচার উপ-কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. জুলফিকার রহমান খান। তিনি জানান, ‘২০১৮ সালে মোট ২০ লাখ ৬০ হাজার ১৫৯ জন রোগী এই হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে বৈকালিক স্পেশালাইজড আউটডোরে ২ লাখ ৩৯ হাজার ৫৮ জন সেবা নেন, প্রতিদিন বর্হিবিভাগে গড়ে ৭ হাজারের বেশি রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।’
একই বছর হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়েছেন প্রায় ৪০ হাজার রোগী, অস্ত্রোপচার হয়েছে প্রায় ৪৬ হাজার রোগীর এবং দৈনিক গড়ে ১৬০ রোগীর অস্ত্রোপচার হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। এছাড়া, জানানো হয় মোট ২৭টি বিভাগে বৈকালিক আউটডোর সেবা চালু রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে অনকোলজি (ক্যান্সার) বিভাগের রয়েছে বৈকালিক স্পেশালাইজড আউটডোর সেবা।
ডা. জুলফিকার রহমান খান আরও জানান, গতবছর আধুনিক লেবার রুম, সিজার ওটি ও পোস্ট অপারেটিভ কমপ্লেক্স চালু হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মুক্তিযোদ্ধা সেল গঠন করে বিনামূল্যে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, এইচআইভি পজিটিভ রোগীদের বিনামূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া বিএসএমএমইউতে ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট (মৃত ব্যক্তির অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন) প্রক্রিয়া দ্রুত চালু করা হবে বলে এসময় জানান উপাচার্য। তিনি বলেন, এ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এছাড়া আগামী ৩ মাসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশানুসারে বিশ্ববিদ্যালয়কে আরো বেশি গবেষণাধর্মী ও সেবামুখী করতে ইনস্টিটিউশনাল প্রাকটিস ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে মাহবুবুল হক বলেন, রোগীদের সুবিধার্থে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষায় ভোগান্তি কমাতে ওয়ান স্টপ সেন্টার সার্ভিস চালু করা হচ্ছে। এ প্রক্রিয়া শুরু হবে রেডিওলজি বিভাগ থেকে। এ প্রক্রিয়ায় মেডিকেল টেস্ট করাতে দুই লাইনে দাঁড়াতে হবে না। এক লাইনেই টাকা জমা দিয়ে টেস্টের স্লিপ নেওয়া যাবে। এছাড়া রিপোর্ট সংগ্রহের স্থানেও পরিবর্তন আনা হবে। ঈদের পরই এ সেবা শুরু হবে বলেও জানান হাসপাতাল পরিচালক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমানসহ অন্যরা।
সারাবাংলা/জেএ/এসএমএন