Monday 07 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শ্রীলংকা হামলা: কে এই মাস্টারমাইন্ড জাহরান হাশিম?


৩০ এপ্রিল ২০১৯ ১৩:১৭ | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৯ ১৬:০৮
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উগ্রবাদী বক্তা জাহরান হাশিম

শ্রীলংকায় ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলার মূল হোতা হিসেবে যাকে ভাবা হচ্ছে, তিনি জাহরান হাশিম (৪০)। কিছুদিন আগেও হাশিম ছিলেন অপরিচিত এক নাম, এমনকি শ্রীলংকায়ও। তবে ইস্টার সানডে’তে সিরিজ বোমা হামলার পর হাশিম এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্যের মতে, দ্য ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত (এনটিজে) ওই আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনা করে। যেটির মূল হোতা এই জাহরান হাশিম। সে মৌলভী হাশিম নামেও পরিচিত। হাশিম মূলত উগ্র শ্রেণির ইসলামি বক্তা ও প্রচারক। অনলাইনে সে ভিন্ন ধর্মের সমালোচনা করে ভিডিও পোস্ট করতো এবং সরাসরি ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) সমর্থন জানিয়ে ভাষণ দিতো। শ্রীলংকায় ছোটখাট কিছু সহিংসতার জন্য তাকে দোষী ভাবা হলেও এত বড় একটি হামলায় সে জড়িত থাকবেন তা কিছুটা অবাক করার মতোই।

বিজ্ঞাপন

ইস্টারডে’তে হামলার দায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) স্বীকারের পরই একটি ভিডি প্রকাশ করা হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে। সেখানে দেখা যায়, রাইফেল হাতে হাশিম অন্য সাত তরুণকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সে ছাড়া বাকি সবাই ছিল মুখোশ পরা। তারা ভিডিওটিতে আইএস নেতা আবু বকর আল-বাগদাদির প্রতি আনুগত্য জানায়। এই ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার পর, হামলার সঙ্গে হাশিমের সম্পৃক্ততার দাবি আরও জোরালো হয়।

হাশিম সম্পর্কে শ্রীলংকার মুসলিম কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট হিলমি আহমেদ বলেন, আরও তিন বছর আগেই তিনি হাশিমকে নিয়ে তার উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলেন। হিলমি বলেন, ভুল কোরআন শিক্ষা দিয়ে যুব সমাজকে দিকভ্রান্ত করতো হাশিম। কিন্তু সে এত ভয়ানক কাণ্ড ঘটাবে তা কেউ ভাবতে পারেনি।

হাশিম থাকতো শ্রীলংকার পূর্বাঞ্চলের বাতিকেলাওতে। গত ২৬ এপ্রিল সেখানে অভিযান চালিয়ে আইএসের বোমা তৈরির ফ্যাক্টরি খুঁজে পায় শ্রীলংকার নিরাপত্তারক্ষীরা। ভাবা হচ্ছে হাশিম ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা হামলার আগে এখানেই ভিডিওটি বানিয়েছিল।

বাতিকেলাওতের স্থানীয়রা জানান, ২০১৪ সালে দ্য ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত (এনটিজে) গঠন করেছিল জাহরান হাশিম। তবে  পরে দলটির বিভক্তি হয়েছে। তাই এনটিজের অপর একটি অংশ এই হামলার দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং বিবৃতি দিয়েছে।

গোয়েন্দারা জানায়, ২০১৭ সালের পর বাতিকেলাওতে হাশিমকে আর দেখা যায়নি। তার ইউটিউবে দেওয়া ভিডিওগুলো ভারত থেকে আপলোড করা। সে পালিয়ে ভারতে যাওয়া আসা করতো।

এদিকে শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা বলেন, তার কাছে গোয়েন্দারা নিশ্চিত করেছে সাংগ্রিলা হোটেলে আত্মঘাতী হামলায় নিহত হয়েছেন হাশিম। এক্ষেত্রে ডিএনএ টেস্ট করা হয়েছে কি না তা শ্রীলংকা কর্তৃপক্ষ জানায়নি। তবে সাংগ্রিলা হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে যে দুই যুবকের ছবি পাওয়া গেছে। তাদের একজন দেখতে জাহরান হাশিমের মতোই। তার তার মৃত্যুর ব্যাপারে অনেকটা নিশ্চিত হওয়া যায়। এছাড়া, বাতিকেলাওতে সেনা-পুলিশের যৌথ অভিযানে জাহরান হাশিমের স্ত্রী সন্তানসহ বেশ কয়েকজন নিকট-আত্মীয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে, ২১ এপ্রিল শ্রীলংকার  চার গির্জা, তিন হোটেল ও এক বাড়িতে বোমা হামলায় বিদেশি নাগরিকসহ অন্তত ২৫০ জনের মৃত্যু হয়। ২০০৯ সালে গৃহযুদ্ধ অবসানের পর এটিই শ্রীলংকাতে হওয়া সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলা।

বিবিসি, রয়টার্স ও নিউজ ফার্স্ট থেকে অনূদিত

সারাবাংলা/এনএইচ

এনটিজে গোয়েন্দা তথ্য জঙ্গি সংগঠন জাহরান হাশিম শ্রীলংকা হামলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর