জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান ১৪ দলের
৩০ এপ্রিল ২০১৯ ১৬:১৬
ঢাকা: দল, মত নির্বিশেষে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন ১৪ দলের নেতারা। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ১৪ দলের ‘শান্তি সমাবেশ’ থেকে এ ঘোষণা দেন নেতারা।
সভাপতির বক্তব্যে ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিএনপির সাংসদদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে আমাদের একটাই আওয়াজ, একটাই স্লোগান শ্রীলংকা, নিউজিল্যণ্ডেরর ঘটনাসহ এইসব জঘন্য সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে দাঁড়াতে হবে। এদর কোনো ধর্ম নেই, বর্ণ নেই, দেশ নেই, দল নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা খুশি হয়েছি—ধন্যবাদ জানাই বিএনপির বন্ধুদের। অনেক দেড়িতে হলেও তারা সংসদে শপথ নিয়ে যোগদান করেছে। আমরা আহ্বান করবো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আপনারাও এগিয়ে আসুন। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করুন, সমর্থন করুন।’
সমাবেশে জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘জাতি ধর্ম সব ভুলে গিয়ে আমরা যেভাবে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম, তেমনিভাবে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক শক্তি, জঙ্গিবাদী শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। জঙ্গিবাদের প্রধান পৃষ্টপোষক, রাজনৈতিকভাবে যারা আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে তাদের প্রতিহত করতে হবে। এখনো ধর্মের মুখোশধারীরা, হিন্দু ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে, নারীদের প্রতি বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে, জঙ্গি সন্ত্রাসীদের উসকানি দিচ্ছে। এ রকম পরিস্থিতিতে রাজনৈতিকভাবে আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা দরকার।’
‘সিদ্ধান্ত হচ্ছে গণতন্ত্রের মধ্যে সাদ্রাসা শিক্ষা থাকবে, কিন্তু তেঁতুল তত্ত্ব থাকবে না। বিভিন্ন ধর্মের উপাশনালয় থাকবে, মসজিদ-মন্দির থাকবে কিন্তু সাম্প্রদায়িক তৎপরতা থাকতে পারবে না। এটা একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে হলে, আমরা মুখোশধারীদের এক চুলও ছাড় দেব না। এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করতে হবে’—বলেন হাসানুল হক ইনু।
সমাবেশে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘আমাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধর্মসভার নামে বিভিন্ন কার্যশক্রম চালাচ্ছে। এখানে জঙ্গি আসবে না, এটা না আসার কোনো কারণও নেই।টোয়েন্টিফোরের মতো টেলিভিশনে এজন মাওলানা সাহেব টেলিভিশন টকশোতে গিয়ে বলেন, কাফের এবং মোরতাদদের কতল করা ইসলাম জায়েজ করেছে এবং সেটা যখন প্রচার করা হয় টেলিভিশনের মাধ্যমে এবং টেলিভিশন মালিকেরা সেইটা নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয় না, সেটাও আমাদের বুঝতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে আমাদের দেশে আইন আছে, এই আইন অন্য সব ক্ষেত্রে ব্যবহার হয় কিন্ত এই ক্ষেত্রে ব্যবহার হয় না। ওয়াজে নানা কথা বলা হয় যা মোবাইল খুললেই দেখা যায়।আজকে আমাদের সরকারের মধ্যে আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা সুস্পষ্ট নির্দেশ দিচ্ছে, দাঁড়িয়ে থেকে দৃড়ভাবে ভুমিকা পালন করছেন। অথচ আমাদের প্রশাসনের ভিতর থেকে এই যে সহযোগিতাগুলো হচ্ছে এটা যদি নির্মূল করা না যায় তাহলে, জঙ্গিবাদকে কার্যকরভাবে দমন করা যাবে না।’ এছাড়া জঙ্গিবাদ মোকাবিলঅ করতে, মানবতার জন্য সভাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে’—বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংসদ শফিকুর রহমান, লেখক আবুল মকসুদ, আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুস সবুরসহ চৌদ্দ দলের নেতারা সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এমএমএইচ/এমআই