জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে বাংলাদেশ: পরিকল্পনামন্ত্রী
৩০ এপ্রিল ২০১৯ ২০:৪৬
সংসদ ভবন থেকে: সংসদে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ বাংলাদেশ।’
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) মানিকগঞ্জ-২ আসনের এমপি মমতাজ বেগমের এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী সংসদকে এ তথ্য জানান।
ডেপুটি স্পিকারের সভাপতিত্বে বিকেলে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। এরপর একই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্তঃসরকার প্যানেল (আইপিসিসি) বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহের মধ্যে অন্যতম ঘোষণার পর থেকে বর্তমান সরকারের সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তা মোকাবেলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।’
এছাড়া সম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সরকার পরিবেশ বিষয়ক বেশ কিছু বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন অংশীজনের অংশগ্রহণের মাধ্যমে অভিযোজন ও স্বল্প-কার্বন নির্গমণ (এলসিডি)-এর জন্য বাংলাদেশ জলবায়ু কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা (বিসিসিএসএপি) প্রণয়ন করা হয়েছে। পরিবেশগত চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলা করার জন্য জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি)-র সহায়তায় ‘জাতীয় টেকসই উন্নয়ন কৌশল (এনএসডিএস) প্রণয়ন করা হয়েছে। পরিবেশ, প্রাকৃতিক সম্পদ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে অন্যতম কৌশলগত অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় বিস্তৃত কর্মপ্রক্রিয়া সুষ্পষ্ট করা হয়েছে।’
‘সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় পরিবেশগত স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য অথনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সমন্বয় করতে একটি সবুজ প্রবৃদ্ধি কৌশল অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মূলত তিনটি থিমের ওপর ভিত্তিকরে এই কৌশল নেওয়া হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- জলবায়ু পরিবর্তন ব্যবস্থাপনা ও স্থিতিস্থাপকতা (অভিযোজন ও প্রশমন সমন্বয়ে), পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা’—বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
এছাড়া তিনি বলেন, ‘জলবায়ুর ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় (২০১৬-২০২০) বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ শতবর্ষের একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। নেদারল্যান্ডসের ডেল্টা ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতার আলোকে পন্থা অনুসরণ করে নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশ বিশেষজ্ঞদের যৌথ সহায়তায় ২০১৮ সালে এই পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এই পরিকল্পনাটি ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদা অর্জন করতে সহায়ক হবে। ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ সাল নাগাদ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাসমূহের সমন্বয়ের যোগসূত্র সৃষ্টি করবে।’
দেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৫ কোটি এমন এক প্রশ্নের জবাবে এম এ মান্নান জানান, বাংলাদেশে সবশেষ আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ২০১১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৯৭ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৭ কোটি ৪৯ লাখ ৮০ হাজার ৩৮৬ জন এবং মহিলা ৭ কোটি ৪৭ লাখ ৯১ হাজার ৯৭৮ জন। পরবর্তী জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত হবে। কারণ পরিসংখ্যান আইন-২০১৩ সালে জাতীয় সংসদে পাস হয়।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এমআই