‘প্রমাণ করেন আপনি মাশরাফিকে নিয়ে কথা বলার যোগ্যতা রাখেন’
১ মে ২০১৯ ০০:৫২
ঢাকা: বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্ত্তজাকে নিয়ে কথা বলার যোগ্যতা রাখেন কি না তা প্রমাণ করতে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। তিনি বলেন, ‘প্রমাণ করেন যে আপনি জাতীয় ডাক্তার, তাই মাশরাফিকে নিয়ে কথা বলার যোগ্যতা রাখেন।’
মঙ্গলবার (১ মে) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নিজের বক্তব্যে চিকিৎসকদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
এর আগে গত ২৫ এপ্রিল বিকেলে আকস্মিক নড়াইল সদর হাসপাতাল পরিদর্শনে যান স্থানীয় সংসদ সদস্য মাশরাফি। কিন্তু সেদিন সেখানে গিয়ে কোনো চিকিৎসককে পাননি তিনি। এমনকি নার্সও ছিলেন মাত্র দু’জন। তিনি হাজিরা খাতায় বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের হাজিরাও দেখতে পাননি। অনুপস্থিত কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে তিনি তাৎক্ষণিক মোবাইল ফোনে কথা বলেন। কিন্তু তারা কেউ অনুপস্থিতির বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি। চিকিৎসকদের সঙ্গে মাশরাফির কথা বলার সেই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
এরপর মাশরাফিকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা নেতিবাচক পোস্ট দিতে থাকেন দেশের বিভিন্ন স্থানের চিকিৎসকরা।
মাশরাফির পরিদর্শন: নড়াইলের সেই ৪ চিকিৎসক ওএসডি
সেই প্রসঙ্গ টেনে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রদ্ধা-সম্মান আপনারা কোনোদিন চেয়ে নিতে পারবেন না। এটা আল্লাহতায়ালা দেন। ভুলেও ভাববেন না একজন সম্মানিত মানুষকে অসম্মান করে আপনি সম্মানিত হবেন। কোনোদিন হবেন না। এটা দয়া করে মনে রাখবেন।’
চিকিৎসকদের উদ্দেশে ডা. মুরাদ হাসান বলেন, ‘একটা ঘটনা ঘটলে আপনারা এইভাবে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেন কেন? মনে রাখতে হবে, কাকে নিয়ে কী লিখতে হবে। একজন মাফরাফি সৃষ্টি করতে পারবেন? জাতীয় দলের ক্যাপ্টেন তিনি। হতে পারবেন একজন জাতীয় ডাক্তার? প্রমাণ করেন যে আপনি জাতীয় ডাক্তার তাই মাশরাফিকে নিয়ে কথা বলার যোগ্যতা রাখেন।’
এসময় সম্প্রতি নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া অপ্রত্যাশিত ঘটনার উদাহরণ দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা আমাকে নিয়েই যেভাবে লিখলেন, আল্লাহর রহমতে আমার গায়ের চামড়া রাখলেন না। আপনি যা অর্জন করতে চাচ্ছেন তা সম্মান দিয়ে কাজের মধ্য দিয়ে অর্জন দিয়ে অর্জন করতে হবে। বিপ্লবী আর প্রতিবাদী লেখা দিয়ে অর্জন করতে পারবেন?’ প্রশ্ন রাখেন প্রতিমন্ত্রী।
ডা. মুরাদ হাসান বলেন, ‘আমরা ভুল ধরিয়ে দেবো, সমাধানের রাস্তাও আমাদেরকেই বের করতে হবে।’ চিকিৎসকদের কল্যানে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন প্রতিষ্ঠাসহ আন্তঃক্যাডার বৈষম্য রোধ করতে চান উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কই আপনারা তো আমার সঙ্গে বসেন না। ফেসবুকে না লিখে বাহাদুরিটা না করে দয়া করে আচরণ ঠিক করুন। আমাদের আচরণ, লেখা এতো নোংরা, এতো অশ্লীল কেন হবে? একজন ডাক্তার এই ভাষায় লিখতে পারেন না। এটা কোনো প্রতিবাদের ভাষা না, এটা কোনো দাবি আদায়ের ভাষা না, অধিকারের ভাষা না। দেশের সবচেয়ে মেধাবী সন্তানেরা ডাক্তার, মায়ের সবচেয়ে স্মার্ট ছেলেমেয়েরা ডাক্তার। এই সবচেয়ে সম্মান মর্যাদার জায়গায় আমরা থাকবো এটাই আমাদের চাওয়া। কিন্তু সেটা হচ্ছে কই? আপনাদের কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, ফেসবুকে সম্মানিত মানুষদের নিয়ে লিখবেন না। আপনারা আমাকে বলেন, আমি জবাব দেবো।’
এসব কথার কারণে চিকিৎসকরা যেন তাকে ভুল না বোঝেন সেই অনুরোধও জানান প্রতিমন্ত্রী।
সারাবাংলা/জেএ/এসএমএন