Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘খুলনা-সাতক্ষীরা হয়ে রংপুর-দিনাজপুরের দিকে যেতে পারে ফণী’


১ মে ২০১৯ ২১:৩০

ঢাকা: বঙ্গোপসাগরে ‘সিভিয়ার সাইক্লোনে’ রূপ নেওয়া ঘূর্ণিঝড় ফণী আগামী শনিবার (৪ মে) আঘাত হানতে পারে বাংলাদেশে। আর ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে যে পথে অগ্রসর হচ্ছে, তাতে ভারতের উড়িষ্যা উপকূলে আঘাত হানবে। এরপর খানিকটা দুর্বল হয়ে বাংলাদেশের খুলনা-সাতক্ষীরা উপকূল দিয়ে প্রবেশ করে রংপুর-দিনাজপুরের দিকে আঘাত হানতে পারে।

বুধবার (১ মে) সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। এসময় তিনি বলেন, এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- সিভিয়ার সাইক্লোনে রূপ নিয়েছে ‘ফণী’, ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, রংপুর হয়ে দিনাজপুরের দিকে যেতে পারে। সেইসঙ্গে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলেও আঘাত হানতে পারে। আগামী ৪ মে সকাল নাগাদ এ ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানতে পারে বাংলাদেশে।

ঘূর্ণিঝড় ফণীর গতিপথের তথ্য উল্লেখ করে ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘আমরা আশা করছি, ঘূর্ণিঝড়টির বর্তমান যে গতিপথ, সেই পথে এগিয়ে যেতে থাকলে এটি প্রথমে ভারতের উড়িষ্যায় আঘাত করবে, এরপর পশ্চিমবঙ্গে আঘাত করবে। এরপর দুর্বল হয়ে বাংলাদেশের খুলনা অঞ্চল হয়ে সাতক্ষীরা অঞ্চলে আঘাত করবে। আর যদি ঘূর্ণিঝড়টি দিক পরিবর্তন করে বাংলাদেশের দিকে আসে, তাহলে খুলনা, মোংলা, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার উপকূল পর্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে।’

ফণী মোকাবিলায় প্রস্তুতি

ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাত মোকাবিলায় সরকার সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বলে সভা শেষে সাংবাদিকদের জানান প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা এরই মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে কন্ট্রোল রুম খুলেছি। জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান কেন্দ্র (এনডিআরসি) প্রতিনিয়ত খবর দিয়ে যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) সদর দফতর ও উপকূলীয় ১৯টি জেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- ফণীর ছোবল থেকে রেহাই পাবে না বাংলাদেশের উপকূলও

কেবল জেলা নয়, এসব জেলার উপজেলা পর্যায়েও কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। পাশাপাশি উপকূলীয় আর্মি স্টেশনগুলোতে ঢাকা থেকে বার্তা পাঠানো হয়েছে। সিপিপি’র ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবী সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।

ফণীর সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবিলায় গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বেচ্ছাসেবীরা বিভিন্ন এলাকায় এরই মধ্যে মাইকিং করে প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করেছেন। যেসব জেলায় ফণী আঘাত করতে পারে, সেসব জেলায় প্রশাসকদের কাছে ২০০ টন চাল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসককে ৫ লাখ করে টাকাও দেওয়া আছে। একইসঙ্গে ৪১ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। স্যালাইনের জন্য সুপেয় পানির ট্রাক পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

এনামুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী আজ (বুধবার) লন্ডনে যাওয়ার আগে মুখ্য সচিবকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা আশা করি মানুষের হতাহতের ঘটনা আমরা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে পারব। তবে ফসলের ক্ষতিটা রক্ষা করা যাবে না। প্রাণিসম্পদকেও যেন আশ্রয় কেন্দ্রে আনা যায়, সেজন্য আমরা স্বেচ্ছাসেবকদের নির্দেশ দিয়েছি।

বৈঠকে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ফণীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানলে তা হবে ভয়াবহ। এটি বর্তমানে গভীর সমুদ্রে বাংলাদেশ থেকে একহাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।

বৈঠকে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিস, আবহাওয়া অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এইচএ/টিআর

ডা. এনামুর রহমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী ফণী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর