সারাদেশে নৌচলাচল বন্ধ, প্রস্তুত নৌবাহিনীর ৩২ জাহাজ
২ মে ২০১৯ ১৪:৩২
ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতের আশঙ্কায় ঢাকার নদীবন্দর সদরঘাটসহ সারাদেশে নৌচলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ)। সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাপ্তাহিক ছুটিও বাতিল করা হয়েছে। এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ফণী পরবর্তী সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে জরুরি উদ্ধার ও ত্রাণ সহায়তসহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৩২টি জাহাজ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে নৌবাহিনী।
বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালে এক জরুরি বৈঠকে সারাদেশে নৌচলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় বিআইডব্লিউটিএ। বৈঠকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দেশের কোথাও কোনো নৌযানকে চলাচল করতে নিষেধ করা হয়েছে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম খান সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ নির্দেশনার ফলে দুপুর ১২টা থেকে ঢাকা নদীবন্দরের সঙ্গে ৪১টি রুটের যাত্রীবাহী নৌযানের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগ সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতের আশঙ্কায় সব ধরনের নৌচলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ফনীর আঘাত কেটে যাওয়ার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এই নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হবে।
ফণীর আঘাতের পর সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিআইডাব্লিউটিএ’র সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। দুর্যোগ পরিস্থিতিতে সার্বক্ষণিক সেবা ও সহায়তা নিশ্চিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ফণীর আঘাত পরবর্তী উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনী পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছে। দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় নৌবাহিনীর ৩২টি জাহাজকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে সতর্কতা
ফণীর আঘাত মোকাবিলায় ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে। এসব জেলার সাইক্লোন সেন্টারগুলো প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। এগুলো জরুরি মুহূর্তে আশ্রয় নেওয়ার উপযোগী কি না, তা দ্রুত জানাতে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সেগুনবাগিচায় নিজ কার্যালয়ে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করেন ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার আলী আজম। বৈঠক থেকে তিনি ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে মাইকিং করে সতর্কবার্তা জনসাধারণের মধ্যে পৌঁছে দিতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত উদ্ধার ও আশ্রয় নিশ্চিত করতেও বিজিবি ও আনসারসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, আরও গতি বেড়ে শক্তিশালী হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। আগামীকাল শুক্রবার (৩ মে) সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি খুলনা-সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এরই মধ্যে ফণীর প্রভাবে মোংলা ও পায়রা বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত, চট্টগ্রাম বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত ও কক্সবাজারকে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
সারাবাংলা/এসএ/টিআর