১৫ বছর পর নিজস্ব ভবন পাচ্ছে বিটিআরসি
২৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০৮:৪২
জোসনা জামান,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর পর নিজস্ব ভবন পাচ্ছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে নির্মাণ করা হবে ১২তলা ভবন। ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারিদের দাপ্তরিক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি টেলিযোগাযোগ খাতের উন্নয়ন ও মনিটরিং কাজ যথাযথভাবে পরিচালার জন্য সংস্থাটির অবকাঠামোগত সুবিধা বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ভবনটি তৈরিতে ব্যয় হবে ২০২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০০২ সালের ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) গঠিত হয়। গঠনের পর নিজস্ব ভবন না থাকায় সংস্থাটির ঢাকার রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (আইইবি) ভবনের তিনটি ফ্লোর ভাড়া করে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে ও ভাড়া বাবদ প্রতিবছর ১১ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয় করছে।
সংস্থাটির দৈনন্দিনসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ যেমন, টেলিকম অপারেটরদের সেবার মান মনিটরিং, থ্রিজি, ফোরজি তরঙ্গ বরাদ্দ, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রকল্প ইত্যাদি সফলভাবে বাস্তবায়নে সমস্যা হচ্ছে। তাই অপারেটরদের সেবার মান ও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মনিটরিংসহ কিছু কাজের জন্য বিটিআরসির অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপনের প্রয়োজন রয়েছে, যা নিজস্ব ভবন ছাড়া সম্ভব নয়।
২০০২ সালে ৪১ জন জনবল নিয়ে কাজ শুরু করলেও বিটিআরসির বর্তমান জনবল ৪৫৫ জন। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রকল্পের ১০৫ জন নিয়ে ভাড়াকরা ভবনে বর্তমানে ৫৬০ জন কর্মচারি কর্মরত আছেন। এছাড়া আরও ৩২৭ জন কর্মকর্তা কর্মচারির প্রস্তাব অনুমোদনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। দেশে টেলিডেনসিটি বৃদ্ধি এবং বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সিস্টেম পুরোপুরি চালু হলে আগামী ১০ বছরে বিটিআরসির মোট প্রয়োজনীয় জনবলের সংখ্যা হবে ১ হাজার ৮৭৯ জন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ভবন নির্মাণের জন্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় হতে শেরেবাংলা নগরের আগারগাঁও প্রশাসনিক এলাকায় এক একর জমি বরাদ্দ পায়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ১৮ তলা ফাউন্ডেশন ও তিনটি বেসমেন্টসহ ১৩ তলা ভবন নির্মাণের জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায়। প্রথম অবস্থায় প্রকল্পটির মোট ব্যয় ২২১ কোটি টাকা প্রাক্কলন করে বাস্তবায়নের প্রস্তাব করা হয়।
উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবের (ডিপিপি) উপর অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে ভবনটির উচ্চতা নির্ধারণে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তপক্ষের ছাড়পত্র সংগ্রহ, স্থাপত্য নকশা আরো আধুনিক মানের করা সম্ভব কিনা এবং চূড়ান্ত স্থাপত্য নকশায় ভবনের প্রস্তাবিত ৪০০ সিটের হল রুমটি টপ ফ্লোরে না রেখে গ্রাউন্ড বা প্রথম ফ্লোরে সংস্থান রেখে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ডিপিপি পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়।
বিটিআরসি ভবনের উচ্চতা নির্ধারণে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্রে উচ্চতা সীমা ১৫০ ফুট নির্ধরণ করায় বর্তমানে ভবটি ১৩ তলার পরিবর্তে ১২ তলা নির্মাণের সংস্থান রেখে স্থাপত্য অধিদপ্তর নকশা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সে জন্য প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভার সিদ্ধান্ত নিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ প্রকল্পটির ডিপিপি পুনর্গঠন করেছে। এতে চুড়ান্ত পর্যায়ে প্রকল্পটির ব্যয় দাঁড়ায় ২০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের নিজস্ব দাপ্তরিক ভবন নির্মাণ করা হবে, এতে কর্মকর্তা কর্মচারিদের উন্নত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা সহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব যথাযথ পালনে বিটিআরসির সক্ষমতা বাড়বে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, প্রয়োজনীয় বৈদ্যুতিক কাজ, সীমানা প্রাচীর, পানি সরবরাহ ব্যবস্থা এবং ৩৯ হাজার ৫২১ বর্গমিটার ২টি বেইজমেন্ট ও একটি সেমি-বেইজমেন্টসহ ১২ তলা ভবন নির্মাণ করা হবে। পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় অর্থনৈতক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে ভবনটি নির্মাণ করবে বাংলাদেশ টেলি যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন।
সারাবাংলা/জেজে/এসআই