Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঘূর্ণিঝড় প্রবণ এলাকায় বোরো ধান কেটে ফেলার পরামর্শ


২ মে ২০১৯ ২১:৩৩

ঢাকা: প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাব পড়তে পারে— এমন জেলাসহ হাওরের সাত জেলার বোরা ধান ৮০ শতাংশ পরিপক্ক হলে তা কেটে ফেলার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। একইসঙ্গে গবাদি পশুসহ হাস-মুরগিকেও নিচু এলাকা থেকে উঁচু এলাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলা কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। চিঠিতে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে কৃষকদের জন্য ১০টি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- সকাল ১০টা থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হবে ১৯ জেলার মানুষকে

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী জানান, ফণীতে প্রাণহানির আশঙ্কা না থাকলেও ১১ হাজার হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

ফসলের ক্ষতির এই আশঙ্কা বিবেচনাতেই জেলা-উপজেলাগুলোতে চিঠি দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। চিঠিতে বলা হয়েছে— চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বগুড়া, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। ফলে এসব জেলার বোরো ধান ৮০ শতাংশ পরিপক্ক হলে তা দ্রুত কেটে ফেলতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে দ্রুততম সময়ে সংগ্রহ করে নিতে বলা হয়েছে পরিপক্ক চিনাবাদাম, উদ্যান ফসল ও সবজি।

আরও পড়ুন- ফণীর প্রভাব মোকাবিলায় কন্ট্রোল রুমের নম্বর ০২৯৫৪৬০৭২

বিজ্ঞাপন

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সেচ নালা পরিষ্কার রাখতে হবে যেন ধান ও পাটের জমিতে অতিরিক্ত পানি জমে না থাকে। ক্ষেতের চারপাশে উঁচু বাঁধ দিতে হবে যেন পানির স্রোত দণ্ডায়মান ফসলের ক্ষতি করতে না পারে। দণ্ডায়মান ফসলের দুই-তিনটি গাছকে একত্রে বেঁধে রাখতেও বলা হয়েছে, যেন সেগুলো সহজে পড়ে না যায়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর পরামর্শ দিয়ে বলেছে, অতি বৃষ্টি ও ঝড়ে যে গাছগুলো মাটিতে পড়ে যাবে সেগুলোকে দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে। যেহেতু ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় ভেসে যেতে পারে, তাই এই মুহূর্তে বীজ বপন ও চারা রোপণ থেকে বিরত থাকতে হবে। বন্ধ রাখতে হবে সেচ, সার ও কীটনাশকও দেওয়া যাবে না জমিতে। গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগিকে নিচু এলাকা থেকে উঁচু স্থানে স্থানান্তর করতে জায়গায় নিতে হবে। ঝড়ো হাওয়ার পাশাপাশি উঁচু জোয়ারের কারণে জেলেদেরও মাছ ধরার জন্য সমুদ্রের ভেতর না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।

আরও পড়ুন- গতি বেড়ে আরও শক্তিশালী ফণী, আঘাত হানবে শুক্রবার সন্ধ্যায়

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে হাওরের সাত জেলায় আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় চলতি মৌসুমের প্রধান ফসল বোরো ধান ৮০ শতাংশ পরিপক্ক হলেই কেটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সেচ নালা পরিষ্কার রাখা, ক্ষেতের চারপাশে উঁচু বাঁধ দেওয়া এবং বীজ বপন, সেচ, সার ও কীটনাশক দেওয়া থেকে বিরত থাকার পরমার্শ দেওয়া হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসাণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, হাওরের সাত জেলায় প্রায় ৮৫ শতাংশ জমির বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে। আবাদ হওয়া ৪৫ লাখ ৭ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে ধান কাটা শেষ হয়েছে ৩৮ লাখ ৬ হাজার হেক্টরের। সমপরিমাণ জমিতে ধানের উৎপাদন হয়েছে ১৪ লাখ ৪৬ হাজার মেট্রিক টন। আর হেক্টরে ফলনের পরিমাণ ৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

চলতি বছর সারাদেশে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৮ লাখ ৪২ হাজার হেক্টর। তবে আবাদ হয়েছে ৪৯ লাখ ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে। সমপরিমাণ জমিতে এবার বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ কোটি ৯৬ লাখ মেট্রিক টন। হাওরে প্রায় ৮৫ শতাংশ জমির ধান কাটা শেষ হলেও অন্যান্য অঞ্চলে সবে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ঘূর্ণিঝড় ফণী ধান কাটা ফণী বোরো ধান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর