উপকূলে ফণীর প্রভাব: ঝড়-বৃষ্টি শুরু
৩ মে ২০১৯ ১৪:২৯
ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় ফণী উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। শুক্রবার মধ্যরাতে ফণী বাংলাদেশ অতিক্রম করবে। তবে, এরইমধ্যে দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় দমকা বাতাস শুরু হয়েছে। কোথাও কোথাও ভারি বৃষ্টিও হয়েছে। উপকূলীয় নদীগুলোর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এ জন্য উপকূলীয় বেঁড়িবাধগুলো রয়েছে হুমকির মুখে। বেঁড়িবাধ ভেঙে গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে কোথাও কোথাও।
আবহাওয়া অধিদফতর থেকে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৭নম্বর বিপদ সংকেত, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ছয় নম্বর এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত অব্যাহত রাখতে বলা হয়েছে।
সারাবাংলার প্রতিনিধির পাঠানো তথ্য-
বরগুনা: ঘূর্ণিঝড় ফণি’র প্রভাবে বরগুনায় ঝড়ো হাওয়ায় ও ভাড়ি বর্ষণ শুরু হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ১টায় শুরু হয়েছে দমকা বাতাস ও বৃষ্টি। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বরগুনার বলেশ্বর বিষখালী ও পায়রা নদীর পানি বেড়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন সার্বিক প্রস্ততি নিয়েছে। প্রস্তত রাখা হয়েছে ৩৪৫টি আশ্রয় কেন্দ্র। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবাইকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরা ট্রলার ও আশাপাশের নদ-নদীতে নৌকাগুলো নিরাপদে তীরে আশ্রয় নিয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের নৌ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
খুলনা: ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে খুলনার রূপসা ও পশুর নদীতে ৫ থেকে ছয় ফুট পানি বেড়ে গেছে। নদীর দু’কুলে ঢেউ আছড়ে পড়ছে। স্থানীয় লোকজনকে সতর্ক করতে উপকূলীয় উপজেলাগুলোতে মাইকিং করা হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় ১১৪টি মেডিকেল টিমও গঠন করা হয়েছে।
এ দিকে শুক্রবার সকাল থেকে কালো মেঘ ছেয়ে গেছে খুলনার আকাশ। দুপুর ১২টায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অনেকটাই স্বাভাবিক থাকলেও সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে উপকূলের মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বে থাকা খুলনা কয়রা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. জাফর রানা জানান, ঘুর্ণিঝড় ফণীর আঘাত থেকে বাঁচতে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হচ্ছে। সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ১২৬ সদস্যের ৭টি টিম মাঠে কাজ করছে। মানুষকে নিরাপদে নিতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলেও জানান উপজেলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের এই কর্মকর্তা।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের উপ সহকারী পরিচালক অমরেশ চন্দ ঢালী বলেন, বাংলাদেশ থেকে ৫৩৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। শুক্রবার মধ্য রাতে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাতের আশঙ্কা রয়েয়েছ।
কক্সবাজার: ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে কক্সবাজারের বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। আকাশে ঘন মেঘের পাশাপাশি বাতাস বইতে শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবিলায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির ৬ হাজার ৪৫০ জন সদস্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও ১ হাজার ৭শ’ জন স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রয়েছেন। ৮৯টি মেডিকেল টিমসহ প্রয়োজনী ওষুধ সামগ্রী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ৬টি ইউনিটের ৩৬জন কর্মকর্তার সমন্বয়ে ১৩৮জন লোক ও বিদ্যুৎ বিভাগের ৬টি টিম প্রস্তুত রয়েছে। জেলায় ৫৩৮টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় শুকনো খাবারসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সাগরে মাছ ধরা সকল নৌযান নিরাপদ স্থানে অবস্থান করছে।
সারাবাংলা/এমএইচ