ঘূর্ণিঝড় ফণী: আবহাওয়া দফতরের সবশেষ আপডেট
৩ মে ২০১৯ ১৫:৫৯
ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় ফণী ভারতের উড়িশ্যা উপকূলে আঘাত হেনেছে শুক্রবার বিকেল ৩টা নাগাদ। এরপর ঘূর্ণিঝড় এগিয়ে আসছে বাংলাদেশের দিকে। ঢাকায় আবহাওয়া অধিদফতর ও দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিঝড়ের গতি-প্রকৃতি নিয়ে আপডেট জানানো হচ্ছে। সারাবাংলার পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো এখানে।
দুপুর ১ টা: ফণী পরিণত হয়েছে নিম্মচাপে, বিপদ সংকেত নামিয়ে দেওয়া হয়েছে সতর্ক সংকেত। ঘূর্ণীঝড় ফণী ফরিদপুর ও তার আশপাশ থেকে আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়েছে। এটি পাবনা-টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ অংশ এলাকায় অগ্রসর হতে হতে ক্রমেই দুর্বল হয়ে গভীর নিম্মচাপে পরিণত হয়েছে। তাই দেশের সমুদ্র বন্দর ও উপকূলীয় এলাকা থেকে ৭ নাম্বার ও ৬ নাম্বার বিপদ সংকেত নামিয়ে, দেয়া হয়েছে ৩ নাম্বার স্থানীয় সতর্ক সংকেত। তবে নিম্মচাপের কারণে আজ ও আগামীকাল দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকবে।
শনিবার (৪ মে) দুপুর ১টার দিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান উপ-পরিচালক আয়েশা খাতুন।
বেলা ১২টা: ফণী বাংলাদেশের ঢাকা-রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের উপর দিয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বিকেল কিংবা সন্ধ্যা নাগাদ এটি বাংলাদেশ অতিক্রম করে গভীর নিম্নচাপে রূপ নিবে। এতে তেমন কোনো বড় ধরণের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
শনিবার (৪ মে) দুপুর ১২ টায় আবহাওয়া অধিদফতরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান জানান, ফণী রাজশাহীর বগুড়া, সিরাজগঞ্জ এবং ঢাকার রাজবাড়ী ও ময়মনসিংহের উপর দিয়ে অতিক্রম করছে।
তিনি বলেন, ৫৪ কিলোমিটারের কেন্দ্র নিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমশই উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি ক্রমশই দুর্বল হচ্ছে। সন্ধ্যা নাগাদ এটি বাংলাদেশ অতিক্রম করবে। ফণী একসময় গভীর নিম্মচাপে পরিণত হবে।
সকাল ১০টা: সাধারণ ঝড়ে পরিণত হয়ে ফণী এখন বাংলাদেশের মধ্যবর্তীস্থান মেহেরপুর, চুড়াডাঙ্গা ও এর পাশ্ববর্তী এলাকাগুলোয় অবস্থান করছে। এটি আজ বিকেল বা সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশ অতিক্রম করবে। এরপর ভারতের হিমালয় বা তৎসংলগ্ন এলাকায় গিয়ে দুর্বল হয়ে পরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। ৫৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থান করছে ফণী। এসব এলাকায় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার।
শনিবার (৪ মে) সকাল দশটায় সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ।
সকাল ৮টা: ঘূর্ণিঝড় ফণী সকাল ৬টা থেকে উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে সাতক্ষীরা, যশোর ও খুলনা অঞ্চল এবং এদের পাশ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান করছে।
সকাল ৭টা: ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যার আভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। শনিবার (৪ মে) সংস্থাটির ওয়েব পেজে দেওয়া এক বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।
ভোর ৫টা: আবহাওয়া অধিদফতর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ফণী বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে শনিবার সকালে।
রাত ২টা: অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী শনিবার (০৪ মে) ভোর নাগাদ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পাশ্চিমাঞ্চলে পৌঁছাতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর।
শুক্রবার দিনগত রাত দুইটায় আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
রাত ১০টা: আরও ১০ থেকে ১১ ঘণ্টা পর বাংলাদেশের ভূমিতে প্রবেশ করতে পারে ঘূর্ণিঝড় ফণী। আগামীকাল শনিবার দুপুর ১২টার মধ্যে সাতক্ষীরার উত্তর দিকের নড়াইল হয়ে এটি বাংলাদেশে প্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে।
শুক্রবার রাত ১০টায় আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়টি প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ২১ কিলোমিটার গতিতে অগ্রসর হচ্ছে। এটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ হয়ে ক্রমশ উত্তর দিকে যাবে। দেশে এর প্রভাব থাকতে পারে ৬ থেকে ১০ ঘণ্টা। এসময় সারাদেশে থেমে থেমে বৃষ্টি ও বাতাস হতে পারে। তবে ঝড়টি এখন অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছে।
রাত সাড়ে ৮টা: আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর ৩৯) বলা হয়, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এখনও তা প্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারে উড়িষ্যাতেই অবস্থান করছে।
এটি মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১০ কিলোমিটার, পায়রা বন্দর থেকে ৪৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং কক্সবাজার থেকে ৬৫০ কিলোমিটার পশ্চিমে রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ফণী আরও অগ্রসর হয়ে শুক্রবার মধ্যরাত বা আগামীকাল শনিবার (৪ মে) সকালে খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূল এলাকায় পৌঁছাতে পারে।
সন্ধ্যা ৭টা: ঘণ্টায় ১৮০ থেকে ২১০ কিলোমিটার গতিবেগের ফণী এখন ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। তবে গতি কমলেও বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে রয়েছে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা। শুক্রবার (৩ মে) বাংলাদেশ সময় দিবাগত মধ্যরাতে এই ঘূর্ণিঝড়টি খুলনা-সাতক্ষীরা অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সচিবালয়ে দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ।
ব্রিফিংয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক বলেন, ‘ফণীর প্রভাবে সারাদেশ এখন মেঘাচ্ছন্ন। বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া রয়েছে বিভিন্ন জেলায়। মধ্যরাতে এই ঝড়ো হাওয়ার গতি বাড়বে। এসময় ফণীর কেন্দ্র বাংলাদেশের খুলনা-সাতক্ষীরা অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে আমরা আশঙ্কা করছি।’
বিকেল সাড়ে ৩টা: আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, বাংলাদেশের খুলনা এলাকায় সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ ঘূর্ণিঝড় ফণী আঘাত করতে পারে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই কিংবা তারও ছয় ঘণ্টা পর বাংলাদেশ সীমায় ঢুকতে পারে ফণী।
আবহাওয়া দফতর ধারণা করছে, বাংলাদেশ সীমায় পৌঁছানোর সময় বাতাসের গতিবেগ থাকবে ১৪০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার। তেমনটা হলে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপেই বাংলাদেশে আঘাত করবে ফণী। তবে আরও ক্ষীণ হয়ে সর্বনিম্ন ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার গতিবেগ নিয়েও বাংলাদেশে ঢুকতে পারে ঝড়টি।
শুক্রবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক শামছুদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান। দফতরের মিডিয়া সেন্টারে বসানো একটি মেগাস্ক্রিনে ঘূর্ণিঝড় ফণীর সবশেষ গতি-প্রকৃতি তুলে ধরছিলেন তিনি।
এসময় তিনি আরও জানান, ওই সময় ঘূর্ণিঝড় ফণী মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিলো। ঝড়টি বাংলাদেশে খুলনা, সাতক্ষীরা অংশ দিয়ে ঢুকে রাজশাহী, রংপুর হয়ে বাংলাদেশ অতিক্রম করবে।
ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
গতকালই মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত ঘোষণা করা হয়েছিল। শামছুদ্দীন আহমেদ জানান, এর সঙ্গে নতুন করে উপকূলীয় ৯টি জেলা বিপদ সংকেতের আওতায় আনা হয়েছে।
এর আগে সবশেষ আপডেট জানানো হয় দুপুর ১২টায়। সে সময়ে জানানো হয় মধ্যরাতে বাংলাদেশে আঘাত হানবে ফণী ।
সারাবাংলা/জেএ/এমও