বিসিএস পরীক্ষা বর্জন করলেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা
৩ মে ২০১৯ ১৬:২৫
ঢাকা: যোগ্য শ্রুতিলেখক রাখতে আদালতের নির্দেশনা না মানার অভিযোগ এনে ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেননি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা। শুক্রবার (৩ মে) পরীক্ষা বর্জন করে দাবি আদায়ে আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি)সামনে মানববন্ধন ও প্রতীকি অনসন কর্মসূচীতে যোগ দেন তারা।
পরীক্ষা বর্জন করা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হাইকোর্ট থেকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য শ্রুতিলেখক রাখার নির্দেশনা থাকলেও তাতে স্বেচ্ছাচারিতা করছে পিএসসি। পরীক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী শ্রুতিলেখক না রেখে নিজেদের মতো করে অযোগ্য শ্রুতি লেখক রাখছে পিএসসি।
শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পিএসসি ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রতীকি অনশনে এসব দাবি করেছেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা। এসময় নিয়মানুযায়ী পরীক্ষায় অংশ নেয়ার ব্যবস্থা করতে পরীক্ষার্থীরা নানা স্লোগান দেয়। প্রতীকি অনশনে শতাধিক প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী অংশ নেয়।
এ বিষয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে সারাবাংলার এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা ভাবছি। এখনই কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।
অপর দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী ও ‘চাকরি প্রত্যাশী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী গ্রাজুয়েট পরিষদ’ এর আহ্বায়ক মোঃ আলী হোসাইন সারাবাংলাকে বলেন, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশের সকল স্কুল-কলেজের শিক্ষা বোর্ড ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রুতিলেখক সংক্রান্ত নীতিমালা ২৫ এর খ উপধারা অনুযায়ী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য শ্রুতিলেখক হবে তার ১ গ্রেড নিচের এবং দক্ষ ও আন্তরিক শিক্ষার্থী। কিন্তু পিএসসি যাদেরকে শ্রুতিলেখক হিসেবে ভাড়া করছে তারা অযোগ্য এবং অআন্তরিক। এতে করে ভাড়া করা শিক্ষার্থী দিয়ে আমাদের জন্য শ্রুতিলেখকের কাজ হতে পারে না।
আলী হুসাইন আরও বলেন, আমরা পিএসসির এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এবং অবিলম্বে যেন আমাদের সমস্যা সমাধান করে এ দাবিতে দেশের সকল দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেয়া থেকে বিরত আছি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবি মানা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
তিনি বলেন, পিএসসি একটা অমানবিক প্রতিষ্ঠান যে, আমরা সকাল নয়টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তাদের ভবনের সামনে অনশন করছি, বৃষ্টিতে ভিজছি অথচ তারা কেউ এসে আমাদের সঙ্গে একটু কথাও বললো না। এমন কি আমাদের দাবির বিষয়ে তাদেরকে স্মারক লিপি দিলেও তাতে কোনো সাড়া দেয় নি তারা। তাই এসমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চাই আমরা। আর যদি সমাধান না হয় অচিরেই আমরা কঠোর আন্দোলনে নামবে। প্রয়োজনে জীবন দিয়ে হলেও এসমস্যার সমাধান করবো যাতে আগামী প্রজন্ম একই সমস্যায় না পড়ে।
সারাবাংলা/এসএইচ/জেডএফ