‘চট্টগ্রামে এবার জলাবদ্ধতা আগের চেয়ে কম হবে’
৪ মে ২০১৯ ২১:১৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: জলাবদ্ধতা নিরসন মহাপ্রকল্পের কাজ শুরুর পর গত এক বছরে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন খাল থেকে প্রায় পৌনে ২ কোটি ঘনফুট মাটি ও বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। ফলে এবারের বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা আগের চেয়ে কম হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের সদর দফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজহার সিদ্দিকী এ তথ্য জানিয়েছেন।
শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে নগরীর দামপাড়ায় সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য দেন এই সেনা কর্মকর্তা। এসময় প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লে. কর্নেল আবু সাদাত মোহাম্মদ তানভীর উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার একটি প্রকল্প ২০১৭ সালে একনেকে পাশ হয়। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) তত্ত্বাবেধানে সেনাবাহিনী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়। ২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল থেকে খালের আবর্জনা অপসারণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় প্রকল্পের কার্যক্রম।
কাজের অগ্রগতি জানাতে আয়োজিত এই সভায় জানানো হয়, প্রকল্পের অধীনে ৩৬টি খাল খনন করা হবে। তিন পর্যায়ে নগরের খালগুলো খনন ও সংস্কার করা হচ্ছে। প্রথম দফায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১৩টি খালের খনন কাজ চলছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১০টি এবং শেষ পর্যায়ে বাকি খালগুলো থেকে মাটি উত্তোলন করা হবে।
গত বছর খালগুলো থেকে ১ কোটি ২৫ লাখ ৮৮ হাজার ঘনফুট এবং চলতি বছরের প্রথম চার মাসে ৪২ লাখ ঘনফুট মাটি উত্তোলন করা হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়। এছাড়া আসন্ন রমজানে চট্টগ্রাম নগরীতে খালের ওপর গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু হবে। এর ফলে সামনের বর্ষায় জলাবদ্ধতার প্রকোপ আগের চেয়ে কম হবে বলে মনে করছেন সেনা কর্মকর্তা আহমেদ তানভীর।
তিনি বলেন, ‘যেসব খালের প্রবেশমুখে প্রকল্পের কাজের জন্য বাঁধ দিয়েছি, বর্ষা শুরুর আগে সেগুলোর একটিও থাকবে না। এছাড়া খালের আবর্জনাও অপসারণ করা হয়েছে। নালা ও খালে সেবা সংস্থার পাইপ থাকার কারণে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এসব পাইপ অপসারণ করার জন্য কাজ শুরু হয়েছে। এজন্য আমরা মনে করছি, সামনের বর্ষায় জলাবদ্ধতার প্রকোপ আগের চেয়ে কম হবে।’
এদিকে খাল-নালা সংস্কারের পাশাপাশি ময়লা-আবর্জনা যাতে সেখানে না ফেলা হয় সেজন্য জনসচেতনতা তৈরির কাজও চলছে জানিয়ে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে চার দফা মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। এছাড়া জনগণকে সচেতন করার জন্য ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে শোভাযাত্রা ও মতবিনিময় সভা হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি তদারকি টিম করা হবে। থানা পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে আমরা খালে ময়লা-আবর্জনা ফেলা রোধ করার চেষ্টা করব।’
সভায় ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল আবু সাদাত মোহাম্মদ তানভীর গত এক বছরে প্রকল্পের কাজের তথ্য তুলে ধরেন। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন- চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দিন, কর্ণফুলী গ্যাসের উপ-ব্যবস্থাপক মীর মাহমুদ হাসান, চট্টগ্রাম ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী রানা চৌধুরী, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী মো.আইয়ূবুর রহমান।
সারাবাংলা/আরডি/এমও