বৃষ্টির শহরে ভোগান্তিতে ঘরমুখী মানুষ
৪ মে ২০১৯ ২৩:৪৬
ঢাকা: টানা ২০ দিন গরমে হাঁসফাঁস করেছে ঢাকা শহরের মানুষ। রোদের শাসনে অতিষ্ট নগরবাসীর দিন কেটেছে বৃষ্টির অপেক্ষায়। ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে অঝরে ঝরেছে বৃষ্টি। শনিবারও সকাল থেকে আকাশ উপচে পড়ছে জল। আর টানা বৃষ্টির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে ঘরমুখী সাধারণ মানুষ।
এর আগে শুক্রবারের বৃষ্টিতে সকাল থেকেই শহরে ছিল গণপরিবহনের স্বল্পতা। কোনোক্রমে কর্মক্ষেত্রে পৌঁছাতে পারলেও বিপাকে পড়েছেন কাজ শেষে ঘরে ফেরার সময়। শনিবার (৪ মে) সন্ধ্যায় বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং মোটরকার দেখা গেছে আরও কম, হাতেগোনা। ভাড়াও অন্যান্য দিনের তুলনায় অত্যাধিক বেশি।
মতিঝিল শাপলা চত্বর থেকে রায়হান আহমেদ ও ফাইজা আহমেদ দম্পতি বলছিলেন তাদের ভোগান্তির কথা। দু’জনেই চাকরি করেন একটি বেসরকারি ফিন্যান্স কোম্পানিতে। তারা জানান, বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাস পাননি। পরে ৫৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে সিএনজি-অটোরিকশায় ধানমন্ডি ফিরেছেন তারা।
রায়হান আহমেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় নিয়ে মানুষের মনে অনেক ভয়ে ছিল। এ জন্য রাস্তায় গাড়ি বের হয়নি খুব একটা। আমরা যারা বেসরকারি চাকরি করি, তাদের জন্য আজকের দিনটা খুব ভোগান্তির গেল। অফিস যেতে-আসতে এই সামান্য দূরত্বের জন্য খরচ হলো হাজার টাকা।
কেবল বাস কিংবা অটোরিকশা নয়, রিকশায় সামান্য দূরত্ব যেতেও আজ সাধারণ মানুষকে গুনতে হয়েছে মোটা অংকের ভাড়া। তবে উবার-পাঠাওয়ের মতো যাত্রী পরিবহন সেবাগুলো ভাড়ায় খুব একটা গরমিল করেনি।
ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার বাস ডিপোতে দায়িত্বরত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে যাত্রীদের কাছ থেকে বারতি টাকা নেওয়া হয়নি। তবে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামসহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ ক’টি জেলা ও উত্তরবঙ্গের যাত্রীরা সারাবাংলাকে বলেছেন, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় প্রত্যেককেই নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা দিয়ে টিকিট কিনতে হয়েছে।
কমলাপুরের বিআরটিসি বাস ডিপোর সামনে কথা হয় খালেদ চৌধুরীর সঙ্গে। তার গন্তব্য চট্টগ্রাম। এই দন্ত চিকিৎসক সারাবাংলাকে বলেন, আমি প্রতি সপ্তাহে বিমানে বাড়ি যাই। আজ যেতে হচ্ছে বাসে। আমি যে ভাড়া জানতাম, এখানে তার চেয়েও বেশি ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। বাসওয়ালারা সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে অন্যায় করছে।
এদিন গাবতলী, মহাখালী, গুলিস্তান ও যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার বাসগুলোতে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে এদিন মিরপুর, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন এলাকায় আজ গণপরিবহন সংকটের কারণে এক রকম রাজনৈতিক অবরোধের আবহ তৈরি হয়।
রেলযাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া দিতে না হলেও বৃষ্টির কারণে শিডিউল বিপর্যয়ে পড়তে হয়েছে। এক ঘণ্টা, কোনো কোনো ট্রেন দুই ঘণ্টার মতো দেরি করেছে।
সারাবাংলা/টিএস/এটি