‘পর্যটনবান্ধব বাজেটকে প্রাধান্য দেওয়া হবে’
৬ মে ২০১৯ ২৩:১৪
ঢাকা: বিমান ও পর্যটন খাতে উন্নয়নের লক্ষ্য আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। সোমবার (৬ মে) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত প্রাক বাজেট বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্টস ফোরাম অব বাংলাদেশ (এটিজেএফবি) এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, দেশের পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই। আর এরই অংশ হিসেবে সরকার পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে পর্যটন এলাকাগুলোকে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা ও প্রকল্পের আওতায় আনতে ইতোমধ্যেই উদ্যোগ নিয়েছে।
‘পর্যটকদের যাতায়াত সহজলভ্য করতে সড়ক, রেল ও আকাশ পথকে উন্নত করতে সকল বিভাগকে একসঙ্গে নিয়ে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে সরকার। এ লক্ষ্যে ঢাকা থেকে কক্সবাজারে সরাসরি রেল যোগাযোগ ও টেকসই স্থাপনা নির্মাণে পরিকল্পনা চলছে’—বলেন মাহবুব আলী।
এছাড়া দেশের বিমানবন্দরগুলোকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ লক্ষ্যে কক্সবাজার ও সিলেট বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। বাংলাদেশের প্রকৃতির সঙ্গে পর্যটকদের পরিচয় করিয়ে দিতে ইকো ট্যুরিজমকে অগ্রাধিকার দিয়ে পর্যটন মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে আগামী বাজেটের প্রস্তাবনা পেশ করা হবে।
আলোচনায় অংশ নেন বিমান ও পর্যটন খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। বক্তারা বলেন, প্রতিবার বাজেটে অন্য খাতে অগ্রাধিকার বেশি দেওয়া হলেও পর্যটনে বাজেট বরাদ্দে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। সেইসঙ্গে বিমান ও পর্যটন খাতে কর মওকুফের দাবি জানান তারা।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসীরা অনেক তৎপর। এ বিষয়টিকে আমরাও অনেক গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে এক বিন্দুও ছাড় নয়। দেশের পাঁচ তারকা মানের হোটেলগুলোতেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছ। বিশেষ করে বিমানবন্দগুলোতে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার আওয়তায় আনা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সময়ে অ্যাভিয়েশন খাতের উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ হতে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, কক্সবাজার বিমানবন্দকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপ দিতে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছ। সিলেট থেকে সরাসরি লন্ডনে বিমান চলাচলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপ দিতে কাজ চলছে। বরিশাল বিমানবন্দরের ব্যবপারেও গ্রহণ করা হচ্ছে বেশ কিছু পদক্ষেপ।’ এছাড়া তিনি জানান, চলতি বছরেই বিমানের বহরে আরও দুটি ড্রিমলাইনার যুক্ত হতে যাচ্ছে।
টোয়াবের উপদেষ্টা ও দি বেঙ্গল ট্যুরস লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ হোসেন বলেন, ‘২০১৬ সালকে পর্যটন বর্ষ ঘোষণা ও পরবর্তিতে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এর কার্যক্রম চালানো ঘোষণা দেওয়া হলেও আমরা সফল হইনি। আর এ সফল না হওয়ার পেছনের কারণগুলো খুঁজে বের করতে হবে। আমরা দেখছি, পর্যটন খাত একটি উপেক্ষিত খাত, এই খাত পরীক্ষামূলক হলেও বরাদ্দ বাড়িয়ে উন্নয়নের চেষ্টা করা যেতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পর্যটন উন্নয়নের গতি ধরে রাখতে কয়েকটি মন্ত্রণালয় সরাসারি জড়িত, যার মধ্যে রয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, সংস্কৃতি, স্থানীয় সরকার, যোগাযোগ, নৌ, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় এবং পাবর্ত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এই সকল মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের স্বদিচ্ছা, সহযোগিতা ছাড়া শুধুমাত্র বাংলাদেশে ট্যুরিজম বোর্ড (বিটিবি) পর্যটনের মতো একটি স্পর্শকাতর শিল্পের ভার বহন করতে পারে না।’
অনুষ্ঠানে এটিজেএফবির সভাপতি নাদিরা কিরণের সভাপতিত্ত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তানজিম পলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (ট্যাক্স পলিসি) কানন কুমার রায়, ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের সিইও ইমরান আসিফ, টোয়াব সভাপতি তৌফিক উদ্দিন আহমেদ, আটাবের মহাসচিব আব্দুস সালাম আরেফ, টুরিজ্যম বিষয়ক পত্রিকা বাংলাদেশ মনিটর-এর সম্পাদক ও বিমান পর্ষদের সাবেক সদস্য কাজী ওয়াহিদুল আলম, টোয়াবের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. রাফিউদ্দিন ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক ( জনসংযোগ) শাকিল মেরাজসহ অনেকে।
সারাবাংলা/জেএ/এমআই